হাওর বার্তা ডেস্কঃ দক্ষিণ আফ্রিকার রাসেল ডমিঙ্গো বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে অনেকদিন ধরে কাজ করছেন। তিনি টাইগারদের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। খেলোয়াড়দের সাথে রয়েছে তার নিবিড় সম্পর্ক। ঘরের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজের জন্য দলকে প্রস্তুত করছেন ডমিঙ্গো। আর এ সিরিজ নিয়ে দারুণ আশাবাদি তিনি। গতকাল সাগরিকার মাঠে সাকিবের করোনা থেকে সুস্থতা, খেলবেন কি খেলবেন না এবং বাকী অন্যান্য খেলোয়াড়দের নিয়ে বলেছেন নানান কথা। তিনি বলেন কোভিড পজিটিভ থেকে দ্রুতই নেগেটিভ হয়ে দলে যোগ দেওয়ার কথা সাকিব আল হাসানের। তাই নতুন আশার জোয়ার দলের ভিতর। সাকিবকে পেলে একাদশ সাজানো অনেকটা সহজ হয়ে যায়। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার সাকিবের নেগেটিভ খবরে কিন্তু খুব রোমাঞ্চিত নন রাসেল ডমিঙ্গো। কোভিডের ধকল থেকে কেটে উঠলেও মাঠে ফিটনেস থাকাটা বড়ই কঠিন। বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচের বাস্তবতাও তাকে মাথায় রাখতে হবে।
তার ফিটনেস ও শারীরিক অবস্থা পরখ করে দেখতে হবে আমাদের। মাত্রই কোভিড থেকে সেরে উঠল। খুব বেশি ক্রিকেট সে খেলেনি। অবশ্যই সে আমাদের জন্য বড় খেলোয়াড়, দলকে ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে। তবে কালকে তার অবস্থা দেখতে হবে। গত দুই-তিন সপ্তাহে সে ব্যাটিং বা বোলিং কিছু করেনি। হুট করে এসে সরাসরি টেস্ট খেলতে নেমে যাওয়া কঠিন। ৫ দিনের খেলা, প্রচণ্ড গরমও এখন। অনেক কিছুই তাই বিবেচনায় নিতে হবে। কালকে তার অবস্থা পরখ করব আমরা।
তাই শ্রীলংকার বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের চট্টগ্রামের প্রথম টেস্টের সাকিবকে খেলানো নিয়ে বাংলাদেশ কোচের থাকছে সংশয়। সাকিবের কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবরে বাংলাদেশ দলে বড় ধাক্কা লাগে গত মঙ্গলবার। তবে দু’দিন পরই তিনি আবার নেগেটিভ হন। বৃহস্পতিবার শুরুতে র্যাপিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়ার পর পিসিআর পরীক্ষা করান তিনি। নেগেটিভ হন দুবারই। আরও একবার নিশ্চিত হতে বিসিবি অনুমোদিত ল্যাবে তার পরীক্ষা করানো হয় আরেক দফায়। এটিতেও তিনি নেগেটিভ হওয়ার রিপোর্ট পান গতকাল সকালে।
গতকাল সন্ধ্যায় সাকিবের চট্টগ্রাম আসার কথা রয়েছে। আজ শারীরিক ফিটনেসের উপর নির্ভর করবে অনুশীলনে যোগ দেওয়া। রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, আমারও করোনা হয়েছিল, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শরীরের ওপর কতটা ধকল যায় যার হয় সেই বুঝে। তাই সাকিব আল হাসান করোনামুক্ত হলেও তাকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে মন সায় দিচ্ছে না টাইগার হেড কোচের। তবে ৫০-৬০ ভাগ ফিট সাকিবকে খেলাতে রাজি নন ডমিঙ্গো।
বাংলাদেশ হেড কোচ যখন কথা বলছেন ঠিক তার আগেই হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রামে গিয়ে ক্রিকেটার ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে বিসিবি বসের কথার সিংহভাগই থাকল সাকিব প্রসঙ্গ। এক প্রশ্নের জবাবে পাপন পরিস্কার করেছেন, সাকিব খেলছে না ধরে নিয়েই এগুচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। করোনার কারণে তাকে রাখা হয়েছিল বাইরে। পাপন জানালেন, সাকিব চাইলে অবশ্যই খেলবেন, ‘হয়তো সে খেলতে পারে আবার নাও খেলতে পারে, এটা আসলে বলাটা মুশকিল। ওর উপর নির্ভর করছে, টিমের উপর নির্ভর করছে এবং মেডিকেল টিমের উপর নির্ভর করছে। এখানে আবেগী হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু করোনা নেগেটিভ হয়ে খেলা, এটা যদি একদিনের ফরম্যাট হতো আমরা বলতাম খেলো।’
১৫ মে প্রথম টেস্ট। তার আগে প্রস্তুতির সময় খুব বেশি নেই। করোনা নেগেটিভ হয়ে গতকাল রাতেই দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাকিব। পাপন জানিয়েছেন, সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলা আর না খেলার পূর্ণ সিদ্ধান্ত থাকবে সাকিবের ওপরেই। পাপন বলেন, ‘এটা পাঁচ দিনের খেলা, আমরা চাইবো না ওর জন্য বাড়তি চাপ হোক বা ক্ষতির ইস্যু হয়। সেজন্য আমরা সাবধানে যাব, এবং ওর উপর পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া আছে। ও যদি খেলতে চায়, তাহলে ও খেলবে, ওকে তো না করার কোনো সুযোগ নেই।’
সাকিব না খেললে তার বিকল্প হবেন কে? এ নিয়েও কথা বলেছেন ডমিঙ্গো। সাকিবের খেলাটা দলে ভারসম্য আনেন। ব্যাটিং বা বোলিং দুই জায়গাতেই দলের ভরসা যোগান তিনি। সাকিবের বিকল্প হিসেবেও এমন একজনকেই পছন্দ ডমিঙ্গোর, ব্যাটিংয়ের সঙ্গে যিনি বোলিংটাও করতে পারবেন। এ নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের এমন একজনকে বিবেচনা করতে হবে যে বল করতে পারবে। ইয়াসির বেশ কিছু ভালো ইনিংস খেলেছে আমাদের জন্য কিন্তু আমাদের এমন খুঁজতে হবে যে ১০-১৫ ওভার বল করতে পারবে। আমি নিশ্চিত না মুমিনুল সেটা করতে পারবে কি না। শান্তও দিনে ৬-৭ ওভার করতে পারবে না। যে দলে এমন একজন থাকে যে ৬-৭ এ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে দিনে ১০-১৫ ওভার বল করতে পারবে তারা বেশি ভারসম্যপূর্ণ। সাকিব না থাকলে আমাদের ওরকম কাউকে খুঁজে বের করতে হবে। যখন সে থাকে, ব্যাপারটা সহজ। কিন্তু সে আসলে নেই খুব বেশি।’