মেয়র টিটুর মিছিলের উপর সন্ত্রাসী হামলা, ইটপাটকেল ও টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও তীব্র উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শনিবার আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে পরিচিত ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিল এবং ১৩ বছর পর ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনটি অবশেষে কমিটি গঠন ছাড়াই সমাপ্ত হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টায় সার্কিট হাউজ মাঠে সম্মেলনের সভাপতি, উদ্বোধক এবং প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা বলেন, কিছু সমস্যার কারণে ময়মনসিংহ মহানগর এবং ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়নি। ঢাকায় গিয়ে অবিলম্বে কমিটির নেতাদের নাম ঘোষণা করা হবে বলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জানান। কোনো বক্তব্য না দিয়ে এরআগে দুপুর ৩টার দিকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ধারাবাহিক সম্মেলন কার্যক্রমের এক ঘন্টার জন্য মুলতবী ঘোষণা করেন।
শনিবার বেলা ১২টায় সার্কিট হাউজ মাঠে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আ’লীগের কাউন্সিলটি তীব্র উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের পক্ষে ব্যাপক শোডাউন সম্মেলনে পরিণত হয়। শহরের মুকুল নিকেতন থেকে সম্মেলনস্থলে যাবার পথে তাজমহল মোড়ে মেয়র ইকরামূল হক টিটুর নেতৃত্ব একটি বিশাল মিছিলের উপর সন্ত্রাসী হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশও টিটুর মিছিলের উপর ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বলে প্রদীপ ভৌমিক অভিযোগ করেন। হামলায় পৌর কাউন্সিলর ফারুক হাসান, সাবেক জেলা যুবলীগ সভাপতি প্রদীপ ভৌমিক, মাসুদ, সিরাজসহ কমপক্ষে ১০জন আহত হয়। এসময় মেয়র টিটু মিছিলের সামনে গিয়ে তার সমর্থকদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এতে দু’গ্রুপের ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের হাত থেকে রেহাই মেলে। মেয়র টিটু বলেন, তার পক্ষে বিশাল মিছিলের জনসমাগম দেখে প্রতিদ্বন্ধীদের মাঝে হিংসা দেখা দেয়, তাই তার রাজণৈতিক প্রতিপক্ষরাই মিছিলের উপর কোনো কারণ ছাড়াই হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করে। তিনি হামলাকারীদের খুঁজে দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি দাবী করেন।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আব্দুল মতিন সরকার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বদর আহমেদের পরিচালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, জাহাঙ্গীর করি নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ.ফ.ম বাহউদ্দিন নাসিম এমপি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মোঃ আব্দুস ছাত্তার, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম এমপি, ডাঃ বদিউজ্জামান ডাবলু, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমরা উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এমপি, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মেহেদী, অ্যাডভোকেট মোঃ মোসলেম উদ্দিন এমপি, আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন এমপি, ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপি, শরীফ আহমেদ এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল প্রমূখ।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলার সর্বত্র আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। জেলা ও মহানগরের পৃথক দুটি কমিটিতে সভাপতি সম্পাদক পদে স্থান পেতে আগ্রহী নেতৃবৃন্দের পক্ষে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীগণ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সারা শহরে প্যানা, ফ্যাস্টুন, ব্যানার, গেইট ও পোস্টারে পোস্টারে শহরকে রাঙ্গিয়ে তুলে।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের ২০০৩ সালে সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং ২০০৪ সালে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি অনুমোদিত হয়।