ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় প্রতিবেদক: দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষ মানব সম্পদ গড়তে এবং সামাজিক অবস্থার কাঙ্খিত পরিবর্তন করতে শিক্ষাখাতে আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের ১৬ ভাগ এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে প্রতিবছর শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের ৩ পার্সেন্টেজ পয়েন্ট বাড়িয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মধ্যে শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের ২৫ ভাগ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে ‘জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ভাবনা ও বিকল্প শিক্ষা বাজেট প্রস্তাব’ র্শীষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ দাবি জানান ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী। ‘শিক্ষা বাঁচাও আন্দোলন’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ খুবই সীমিত। এই সীমিত সম্পদ দিয়ে কাঙ্খিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্বব নয়। তাই আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নির্ভর করছে মানব সম্পদের উন্নয়নের উপর। আর মানব সম্পদ উন্নয়নের প্রধানতম বাহন শিক্ষা। শিক্ষার মাধ্যমে একটি দেশের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করা যায়।
মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনকালে লিটন নন্দী আরও বলেন, সরকারের ভাষায় দেশ বছর বছর উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রতিবারই সরকার শিক্ষাখাতে বাজেট বৃদ্ধিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। বিগত ৭ বছরে জাতীয় বাজেট বৃদ্ধিতে যতটাই আগ্রহ প্রকাশ করছে সরকার, ঠিক ততটাই অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে শিক্ষা বাজেট বৃদ্ধিতে। অবাক হলেও সত্য যে, দেশের শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয় জাতীয় বাজেটের মাত্র ১১ভাগ। যেটি দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের অনেক দেশের থেকেও কম।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে ড. অজয় রায় বলেন, আজকে শিক্ষার বাণিজ্যকরণ হচ্ছে। আপনার টাকা থাকলে শিক্ষা পাবেন আর ওই শিক্ষার মান যাই হোক না কেন। এর পাশাপাশি সাম্প্রদায়িককরণ করা হচ্ছে শিক্ষা ব্যাবস্থাকে। সময় এসেছে সমাজের পরিবর্তন ঘটার। সামজিক বিজ্ঞানের ভাষায় বলতে গেলে সামজিক বিপ্লব গড়ে তুলতে হবে।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমাদের সংবিধানে উল্লেখ করা আছে রাষ্ট্রের সকলের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা। কিন্তু মৌলিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ নেই। আমাদের দাবি হল মৌলিক অধিকারের মধ্যে অর্ন্তভ‚ক্ত করা।
মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থায় আমাদের সন্তানদের শিক্ষার্থী নয়, পরীক্ষার্থী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বছরব্যাপী তাদের একের পর এক পরীক্ষা দিয়েই যেতে হয় তাদের। সময় এসেছে বিষয়টা ভাবার।’