হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাওরে এক ফসলী বোরো ধান হারিয়ে এদিকে কৃষকদের মধ্যে হাহাকার বাড়ছেই অন্যদিকে বাড়ছে বাঁধ ভেঙে ফসল ডুবির পরিমানও। অপরদিকে,পাহাড়ি ঢল নামা অব্যাহত থাকায় যে বাঁধ গুলো এখনও টিকে আছে সে বাঁধেও ধস ও ফাটল দেখা দেয়ায় ঝুঁকির মুখে জেলার হাজার হাজার হেক্টর বোরো জমিতে আধা পাকা ধান। অন্যদিকে শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে না পাড়ায় চোখের সামনেই তলিয়ে যাচ্ছে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়া জমিতে একমাত্র বোরো ফসল। এযেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ।
সোমবার বিকেল থেকে মহালিয়া হাওরে বাঁধটি ঝুঁকি পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে যে কোন সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানায় স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকগন। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ। বাঁধটি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলার হিজলা এলাকায় অবস্থান। খবর পেয়ে বাঁধ পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।
এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধ ভেঙে ফসল ডুবির আশংকায় হাজার হাজার কৃষকের মধ্যে আছে উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় বিরাজ করছে। এই বাধঁটি ভেঙে গেলে দুটি উপজেলার কয়েক টি গ্রামের চাষ করা ৬ হাজার হেক্টরের বেশি বোরো জমি পানিতে তলিয়ে যাবে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা উপজেলা,সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার ১৪টি হাওরের বাঁধ ভেঙে এক ফসলী বোরো জমির ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় হাওরে হাহাকার বাড়ছে।
জেলায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আশংকায় ও ডুবে যাওয়া হাওর গুলোতে অনেকেইে কাচা ও আধা পাকা ধান কাটছে কৃষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। যে কৃষকদের কাছে নগদ অর্থ রয়েছে তারা শ্রমিকদের দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিয়ে ধান কাটছেন। আবার অর্থের অভাবে অনেকেই এক মণ ধানের দামেও মিলাতে পারছে না শ্রমিক। যার ফলে চোখের সামনেই ফসল হারিয়ে দিশেহারা হাওরপারের কৃষক। আর পিআইসির নামে প্রভাবশালীরা প্রকল্প নিয়ে সরকারি টাকা লুটপাট করেছে এমন অভিযোগের পাহাড় এখন হাওরাঞ্চলের সর্বত্রই।
হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না করায় প্রতিটি বাঁধেই দূর্ভল হয়েছে,এ কারনেই হাওরে পাহাড়ী ঢলে একের পর এক হাওরের বাঁধ ভেঙ্গেছে। এই ক্ষতির দায় পাউবোকেই নিতে হবে বলে জানান হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা।
পানি উন্নয়ন বোডের্র (পাউবো) কর্মকর্তা বলছেন,গত এক সপ্তাহ ধরে উজানের (ভারতের চেরাপুঞ্জি)বৃষ্টিই ভয়ের মুল কারণ। অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির ঝুঁকিতে পড়ে জেলার সব হাওরের বোরো ফসল।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত দেব জানান,নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মহালিয়া ও হালির হাওরের গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজারগুলোর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ তদারকি ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবীর বলেন,আমরা ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করব। এখন হাওরের বোরো ফসল বাঁচাতে বিভিন্ন ঝুকিপূর্ন বাঁধ গুলো আরো মজবুত করতে কাজ করছি। জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। বাঁধ রক্ষা করতে আমরা সবোচ্ছ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।