ঢাকা ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইমরান-সাকিবদের ছোঁয়া হলো না জাদেজার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩০:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০২২
  • ১৩৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যে পিচে ভারতের ব্যাটাররা প্রথম দুই দিনে ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন, সেই পিচ তৃতীয় দিনে হয়ে উঠল শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের জন্য মৃত্যুকূপ। রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা পেলেন টার্ন। সঙ্গে যোগ হলো অসমান বাউন্স। তাতে দিশেহারা লঙ্কানরা এক দিনে হারাল ১৬ উইকেট। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর দুই ইনিংস মিলিয়ে জাদেজা নিলেন ৯ উইকেট। তার বিরল কীর্তিতে বিশাল জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারতীয়রা।
গতকাল মোহালি টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে ইনিংস ও ২২২ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে রানের হিসাবে এটি তাদের পঞ্চম সেরা জয়। একপেশে ম্যাচের ফয়সালা হয়েছে মাত্র তিন দিনে। এতে স্থায়ীভাবে ভারত টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পাওয়া রোহিত শর্মার যাত্রা শুরু হয়েছে অসাধারণভাবে।
আগের দিনের ৪ উইকেটে ১০৮ রান নিয়ে নামা সফরকারীরা মধ্যাহ্ন বিরতির আগে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৭৪ রানে। এরপর ফলো-অনে নেমেও সুবিধা করতে পারেনি তারা। জাদেজা ও অশ্বিনের তোপে শেষ সেশনে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস থামে কেবল ১৭৮ রানে। ব্যাট হাতে একমাত্র ইনিংসে অপরাজিত ১৭৫ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলা জাদেজা বাঁহাতি স্পিনে সবমিলিয়ে নেন ৯ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৪১ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রান খরচায় তার শিকার ৪ উইকেট।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে বিরল এক কীর্তিতে নিজের নাম লেখান জাদেজা। কোনো টেস্টে দেড়শর বেশি রানের ইনিংস ও ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া ইতিহাসের ষষ্ঠ ক্রিকেটার তিনি। সবশেষ এমন চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্য দেখা গিয়েছিল ৪৯ বছর আগে, পাকিস্তানের মুশতাক মোহাম্মদের কল্যাণে। ১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডানেডিনে প্রথম ইনিংসে ২০১ রান করেছিলেন তিনি। এরপর টেস্টের শেষ ইনিংসে লেগ স্পিনে ৪৯ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।
এক ম্যাচে দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস ও পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বটি সবার প্রথমে গড়েন ভারতের বিনোদ মানকাড। ১৯৫২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৪ রানের ইনিংস খেলার পর ১৯৬ রানে তিনি নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। এই তালিকায় পরের তিন জন হলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডেনিস অ্যাটকিনসন, ভারতের পলি উমরিগার ও আরেক ক্যারিবিয়ান গ্যারি সোবার্স।
তবে আরেকটি কীর্তির খুব কাছে গিয়েছিলেন জাদেজা- এক টেস্টে শতক ও ১০ উইকেট। এই কীর্তিতে কিংবদন্তি দুই অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম ও ইমরান খানের পাশে ২০১৪ সালে বসেছেন সাকিব আল হাসান। ছোট্ট এ তালিকায় নিজের নামটি লিখিয়ে নেওয়ার সুযোগ এসেছিল ভারতীয় স্পিনিং অলরাউন্ডারের হাতে। তবে শেষ পর্যন্ত শতক ও ৯ উইকেট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাঁকে। তবে এই ছোট্ট তালিকাতেও চতুর্থ অলরাউন্ডার হয়ে গেছেন তিনি। এর আগে এ তালিকায় ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার জেমস সিনক্লেয়ার, অস্ট্রেলিয়ার রিচি বেনো ও ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮২ রানে ৮ উইকেট নেওয়া অভিজ্ঞ অফ স্পিনার অশ্বিনও পা রাখেন নতুন অর্জনের সিঁড়িতে। লাল বলের ক্রিকেটে তিনি এখন ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। তিনি টপকে গেছেন ৪৩৪ উইকেট পাওয়া কিংবদন্তি কপিল দেবকে। ৮৫ টেস্ট খেলা অশ্বিনের নামের পাশে রয়েছে ৪৩৬ উইকেট। ৬১৯ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে অবস্থান সাবেক লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলের।
এক টেস্টে শতক ও ১০ উইকেট- এই কীর্তি সবার আগে গড়েছেন ইয়ান বোথাম। ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এ কীর্তি গড়েন তিনি। ভারতের বিপক্ষে প্রখম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার নিয়েছেন ৭ উইকেট। আর নিজেদের প্রথম ইনিংসে করেছেন ১৪৪ বলে ১১৪ রান। ইমরানেরে কীর্তিটি তিন বছর পর, ভারতেরই বিপক্ষে। ফয়সালাবাদে ১৯৮৩ সালের সেই ম্যাচে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১১৭ রান করেছেন ইমরান খান। আর দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছেন ১১ উইকেট। ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচই ১০ উইকেটে হেরেছিল ভারত। সাকিবের কীর্তিটি ২০১৪ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। খুলনায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করে ৪৩৩ রান। সাকিব আল হাসান ১৮০ বলে করেন ১৩৭ রান। এরপর জিম্বাবুয়ের দুই ইনিংসে ৫টি করে উইকেট নিয়ে বোথাম ও ইমরানের পাশে নাম লেখান সাকিব। ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতেছিল ১৬২ রানে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ইমরান-সাকিবদের ছোঁয়া হলো না জাদেজার

আপডেট টাইম : ১০:৩০:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যে পিচে ভারতের ব্যাটাররা প্রথম দুই দিনে ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন, সেই পিচ তৃতীয় দিনে হয়ে উঠল শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের জন্য মৃত্যুকূপ। রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা পেলেন টার্ন। সঙ্গে যোগ হলো অসমান বাউন্স। তাতে দিশেহারা লঙ্কানরা এক দিনে হারাল ১৬ উইকেট। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর দুই ইনিংস মিলিয়ে জাদেজা নিলেন ৯ উইকেট। তার বিরল কীর্তিতে বিশাল জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারতীয়রা।
গতকাল মোহালি টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে ইনিংস ও ২২২ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে রানের হিসাবে এটি তাদের পঞ্চম সেরা জয়। একপেশে ম্যাচের ফয়সালা হয়েছে মাত্র তিন দিনে। এতে স্থায়ীভাবে ভারত টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পাওয়া রোহিত শর্মার যাত্রা শুরু হয়েছে অসাধারণভাবে।
আগের দিনের ৪ উইকেটে ১০৮ রান নিয়ে নামা সফরকারীরা মধ্যাহ্ন বিরতির আগে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৭৪ রানে। এরপর ফলো-অনে নেমেও সুবিধা করতে পারেনি তারা। জাদেজা ও অশ্বিনের তোপে শেষ সেশনে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস থামে কেবল ১৭৮ রানে। ব্যাট হাতে একমাত্র ইনিংসে অপরাজিত ১৭৫ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলা জাদেজা বাঁহাতি স্পিনে সবমিলিয়ে নেন ৯ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৪১ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রান খরচায় তার শিকার ৪ উইকেট।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে বিরল এক কীর্তিতে নিজের নাম লেখান জাদেজা। কোনো টেস্টে দেড়শর বেশি রানের ইনিংস ও ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া ইতিহাসের ষষ্ঠ ক্রিকেটার তিনি। সবশেষ এমন চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্য দেখা গিয়েছিল ৪৯ বছর আগে, পাকিস্তানের মুশতাক মোহাম্মদের কল্যাণে। ১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডানেডিনে প্রথম ইনিংসে ২০১ রান করেছিলেন তিনি। এরপর টেস্টের শেষ ইনিংসে লেগ স্পিনে ৪৯ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।
এক ম্যাচে দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস ও পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বটি সবার প্রথমে গড়েন ভারতের বিনোদ মানকাড। ১৯৫২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৪ রানের ইনিংস খেলার পর ১৯৬ রানে তিনি নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। এই তালিকায় পরের তিন জন হলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডেনিস অ্যাটকিনসন, ভারতের পলি উমরিগার ও আরেক ক্যারিবিয়ান গ্যারি সোবার্স।
তবে আরেকটি কীর্তির খুব কাছে গিয়েছিলেন জাদেজা- এক টেস্টে শতক ও ১০ উইকেট। এই কীর্তিতে কিংবদন্তি দুই অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম ও ইমরান খানের পাশে ২০১৪ সালে বসেছেন সাকিব আল হাসান। ছোট্ট এ তালিকায় নিজের নামটি লিখিয়ে নেওয়ার সুযোগ এসেছিল ভারতীয় স্পিনিং অলরাউন্ডারের হাতে। তবে শেষ পর্যন্ত শতক ও ৯ উইকেট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাঁকে। তবে এই ছোট্ট তালিকাতেও চতুর্থ অলরাউন্ডার হয়ে গেছেন তিনি। এর আগে এ তালিকায় ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার জেমস সিনক্লেয়ার, অস্ট্রেলিয়ার রিচি বেনো ও ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮২ রানে ৮ উইকেট নেওয়া অভিজ্ঞ অফ স্পিনার অশ্বিনও পা রাখেন নতুন অর্জনের সিঁড়িতে। লাল বলের ক্রিকেটে তিনি এখন ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। তিনি টপকে গেছেন ৪৩৪ উইকেট পাওয়া কিংবদন্তি কপিল দেবকে। ৮৫ টেস্ট খেলা অশ্বিনের নামের পাশে রয়েছে ৪৩৬ উইকেট। ৬১৯ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে অবস্থান সাবেক লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলের।
এক টেস্টে শতক ও ১০ উইকেট- এই কীর্তি সবার আগে গড়েছেন ইয়ান বোথাম। ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এ কীর্তি গড়েন তিনি। ভারতের বিপক্ষে প্রখম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার নিয়েছেন ৭ উইকেট। আর নিজেদের প্রথম ইনিংসে করেছেন ১৪৪ বলে ১১৪ রান। ইমরানেরে কীর্তিটি তিন বছর পর, ভারতেরই বিপক্ষে। ফয়সালাবাদে ১৯৮৩ সালের সেই ম্যাচে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১১৭ রান করেছেন ইমরান খান। আর দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছেন ১১ উইকেট। ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচই ১০ উইকেটে হেরেছিল ভারত। সাকিবের কীর্তিটি ২০১৪ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। খুলনায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করে ৪৩৩ রান। সাকিব আল হাসান ১৮০ বলে করেন ১৩৭ রান। এরপর জিম্বাবুয়ের দুই ইনিংসে ৫টি করে উইকেট নিয়ে বোথাম ও ইমরানের পাশে নাম লেখান সাকিব। ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতেছিল ১৬২ রানে।