হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত কয়েক দিন ধরেই সৌদি আরবের শপিংমলগুলো যেন ‘লাল সমুদ্র’। লাল রঙের পোশাক কেনার ধুম পড়েছে বিভিন্ন শহরের মার্কেটগুলোতে।
ভ্যালেন্টাইন ডে’র আগে সৌদি জনগণের এ কেনাকাটা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তারা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করছে, কিন্তু মুখে তা প্রকাশ করছে না।
সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যেন ভেতরে-বাইরে অনেকটাই বদলে গেছে সৌদি আরবের সংস্কৃতি। ভ্যালেন্টাইন ডে বলে কোনো দিবসের ধর্মীয় স্বীকৃতি না থাকলেও দেশটির তরুণ বয়সিরা এ দিনটিকে ঘিরে উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
আর এ কারণেই হয়তো ভালোবাসা দিবসকে উদযাপন করতে তারা লাল পোশাক কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে শপিংমলগুলোতে। যদিও সময় বদলেছে অনেক।
সৌদি আরবে অনেকেই- যেখানে অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা ৩৫ বছরের কম বয়সি, তারা ভ্যালেন্টাইন ডে’কে গ্রহণ করেছে- এটা তারা বলুক আর না বলুক।
একজন ক্রেতা রিম আল-কাহতানি (২২) বলেন, ‘সৌদি সমাজ ধীরে ধীরে ভ্যালেন্টাইন ডে’কে গ্রহণ করতে শুরু করেছে। যদিও কেউ তা স্বীকার করছে না।
দেখা যাবে ভ্যালেন্টাইন ডে’র দিন ক্যাফে এবং রেস্তোরাঁগুলোতে লোকে লোকারণ্য। এটা তারই নমুনা। ভবিষ্যতে এটি আরও বিকশিত হবে বলে আমার মনে হয়।’
শপিংমলেইবা কেন এই সময়ে লাল রঙের আধিক্য? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়াদ মলের একজন বিক্রয়কর্মী ভ্যালেন্টাইন ডে উল্লেখ না করে বললেন, ‘ম্যানেজার আমাদের জানালার ডিসপ্লেকে লাল অন্তর্বাস দিয়ে সাজাতে বলেছেন।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘যদিও এর আগে একবার ১৪ ফেব্রুয়ারি লাল পোশাক পরা লোকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছিল সৌদি পুলিশ।’
অন্য একজন বিক্রয়কর্মী খুলুদ (৩৬) বলেন, ‘লোকেরা ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন করত না, কিন্তু এখন অনেক সৌদিই তা করে।’
তিনি জানান, এই সময়ে কাপড়ের চাহিদা অনেক। বিশেষ করে লাল রঙের পোশাকই খুঁজছেন গ্রাহকরা। এই সময়ে লাল অন্তর্বাসের চাহিদা থাকে বেশি।
ভ্যালেন্টাইন ডে’র উল্লেখ না করেই লাল কাগজের হৃদয়চিহ্ন জানালায় ঝুলিয়ে রাখে দোকানিরা।
সুগন্ধি এবং মেকআপ সামগ্রীর ওপরও ডিসকাউন্ট অফার করে দোকানিরা। সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সৌদিরা।
এর অন্যতম কারণ, তার তেলনির্ভর অর্থনীতিকে আরও বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা। তারা ভয়ঙ্কর ধর্মীয় পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং নারীদের স্বাধীনতা বাড়িয়ে দিয়েছে।