ঢাকা ০৬:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরই ও পেঁপে চাষে রুবেলের সাফল্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৩০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১২৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হারুনুর রশিদ রুবেল। বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গাদিশাল গ্রামে।  ভাগ্য ফেরাতে গিয়েছিলেন আরব আমিরাতে। একসময় প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে আসেন। কিছুদিন না যেতেই আবার হাত খালি। বেকার বসে আছেন।

বেকারত্ব দূর করতে তিনি বরই ও পেঁপে চাষের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কিভাবে ফল বাগান গড়ে তুলবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক সময় আড্ডার ফাঁকে তার বন্ধু গাজীউর রহমান রাসেলসহ অন্যান্য বন্ধুরা ফল চাষে তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন। পরে তিনি (রুবেল) পরামর্শ গ্রহণ করেন স্থানীয় কৃষি অফিসারদের কাছ থেকে।

ফাঁকে ফাঁকে রোপণ করেন গ্রিন লেডি জাতের পেঁপে গাছের চারাও। এরমধ্যে রয়েছে ২০৫টি কুল ও ৩০০টি পেঁপে গাছের চারা। গাছে গাছে ফল। বাগানের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া রয়েছে। উপরে নেটের জাল। পোকা দমনে ভেতরে ফেরোমন ফাঁদ।  রুবেলের কুল ও পেঁপে বাগান দেখতে নানা স্থান থেকে লোকজনের পদচারণ লেগেই আছে। যাওয়ার সময় কেউ কেউ কুল ও পেঁপে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার কুল খেয়ে চাষি রুবেলের প্রশংসা করে চাষ সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন। অনেকেই এ ধরনের ফল বাগান করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এসব চাষে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। আরও প্রায় দেড় লাখ টাকার ফল বিক্রি করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কুল ও পেঁপে চাষে সামান্য পরিমাণে সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। অধিক পরিমাণে প্রয়োগ করা হয়েছে গোবর। নেটের জাল দিয়ে পুরো জমি ঢেকে রাখা হয়েছে। পোকা দমনে ব্যবহার করা হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ। কোনো প্রকারের বিষ প্রয়োগ করতে হচ্ছে না। বিষমুক্ত চাষ করায় ক্রেতাদের কাছে  এ কুল ও পেঁপের চাহিদা রয়েছে। লোকজন ক্ষেতে এসে কুল ও পেঁপে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলগুলো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। তেমনি দেখতে সুন্দর।

তিনি আরও বলেন, এসব ফল চাষে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শের পাশাপাশি সার্বিকভাবে সহযোগিতা পাচ্ছি বন্ধু গাজীউর রহমান রাসেলসহ অন্যান্য বন্ধুদের কাছ থেকে। সাফল্য পাওয়ায় আরও ব্যাপক আকারে ফল চাষ করতে প্রস্তুতি নিয়েছি। এ কারণে আর প্রবাসে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। বিক্রির পাশাপাশি নিজেরা (পরিবারের সদস্যরা) কুল ও পেঁপে খেয়ে পুষ্টি পাচ্ছি।

 স্থানীয় কৃষক ও বেকার যুবকরা জানান, চাষি রুবেলে সাফল্য দেখে তারা উৎসাহিত হয়েছেন। নিজেদের জমি আবাদ করে কুল ও পেঁপে চাষ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, দেশের মাটিতে বিদেশি জাতের কুল ও পেঁপে চাষ করে সাফল্য পাওয়া যায়, প্রমাণ দেখালেন সংযুক্ত আরব আমিরাত ফেরত যুবক হারুনুর রশিদ রুবেল। তার বাগান দেখে এলাকার কৃষক ও বেকার যুবকরা উৎসাহিত হয়েছেন। পতিত জমি ফেলে না রেখে আবাদ করে ফল চাষে লাভবান হওয়া সম্ভব। যেকোনো ধরনের ফসল চাষে কৃষি বিভাগ চাষিদের পাশে রয়েছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বরই ও পেঁপে চাষে রুবেলের সাফল্য

আপডেট টাইম : ০২:৩০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হারুনুর রশিদ রুবেল। বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গাদিশাল গ্রামে।  ভাগ্য ফেরাতে গিয়েছিলেন আরব আমিরাতে। একসময় প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে আসেন। কিছুদিন না যেতেই আবার হাত খালি। বেকার বসে আছেন।

বেকারত্ব দূর করতে তিনি বরই ও পেঁপে চাষের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কিভাবে ফল বাগান গড়ে তুলবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক সময় আড্ডার ফাঁকে তার বন্ধু গাজীউর রহমান রাসেলসহ অন্যান্য বন্ধুরা ফল চাষে তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন। পরে তিনি (রুবেল) পরামর্শ গ্রহণ করেন স্থানীয় কৃষি অফিসারদের কাছ থেকে।

ফাঁকে ফাঁকে রোপণ করেন গ্রিন লেডি জাতের পেঁপে গাছের চারাও। এরমধ্যে রয়েছে ২০৫টি কুল ও ৩০০টি পেঁপে গাছের চারা। গাছে গাছে ফল। বাগানের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া রয়েছে। উপরে নেটের জাল। পোকা দমনে ভেতরে ফেরোমন ফাঁদ।  রুবেলের কুল ও পেঁপে বাগান দেখতে নানা স্থান থেকে লোকজনের পদচারণ লেগেই আছে। যাওয়ার সময় কেউ কেউ কুল ও পেঁপে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার কুল খেয়ে চাষি রুবেলের প্রশংসা করে চাষ সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন। অনেকেই এ ধরনের ফল বাগান করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এসব চাষে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। আরও প্রায় দেড় লাখ টাকার ফল বিক্রি করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কুল ও পেঁপে চাষে সামান্য পরিমাণে সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। অধিক পরিমাণে প্রয়োগ করা হয়েছে গোবর। নেটের জাল দিয়ে পুরো জমি ঢেকে রাখা হয়েছে। পোকা দমনে ব্যবহার করা হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ। কোনো প্রকারের বিষ প্রয়োগ করতে হচ্ছে না। বিষমুক্ত চাষ করায় ক্রেতাদের কাছে  এ কুল ও পেঁপের চাহিদা রয়েছে। লোকজন ক্ষেতে এসে কুল ও পেঁপে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলগুলো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। তেমনি দেখতে সুন্দর।

তিনি আরও বলেন, এসব ফল চাষে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শের পাশাপাশি সার্বিকভাবে সহযোগিতা পাচ্ছি বন্ধু গাজীউর রহমান রাসেলসহ অন্যান্য বন্ধুদের কাছ থেকে। সাফল্য পাওয়ায় আরও ব্যাপক আকারে ফল চাষ করতে প্রস্তুতি নিয়েছি। এ কারণে আর প্রবাসে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। বিক্রির পাশাপাশি নিজেরা (পরিবারের সদস্যরা) কুল ও পেঁপে খেয়ে পুষ্টি পাচ্ছি।

 স্থানীয় কৃষক ও বেকার যুবকরা জানান, চাষি রুবেলে সাফল্য দেখে তারা উৎসাহিত হয়েছেন। নিজেদের জমি আবাদ করে কুল ও পেঁপে চাষ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, দেশের মাটিতে বিদেশি জাতের কুল ও পেঁপে চাষ করে সাফল্য পাওয়া যায়, প্রমাণ দেখালেন সংযুক্ত আরব আমিরাত ফেরত যুবক হারুনুর রশিদ রুবেল। তার বাগান দেখে এলাকার কৃষক ও বেকার যুবকরা উৎসাহিত হয়েছেন। পতিত জমি ফেলে না রেখে আবাদ করে ফল চাষে লাভবান হওয়া সম্ভব। যেকোনো ধরনের ফসল চাষে কৃষি বিভাগ চাষিদের পাশে রয়েছে।