ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চড়া সবজির বাজারে আলুতে স্বস্তি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২২
  • ১৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘সাত কেজি একশ টাকা, সাত কেজি একশ টাকা।’ খুলনা মহানগরী এলাকায় প্রায় ২-৩ সপ্তাহ ধরে এভাবে চিৎকার করে আলু বিক্রি করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় খুলনার বাজারগুলো এখন আলুতে সয়লাব। তবে মাথায় হাত উঠেছে উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের। ট্রাকের ভাড়া মেটানোও দায় হয়ে পড়েছে তাদের জন্য।

খুলনার বাজারে বর্তমানে খুচরা দোকানে আলু প্রতি কেজি ১৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা দরে। গত বছর এ সময়ে প্রতিকেজি আলু ২৬ থেকে ২৭ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

বাজারে অন্যসব সবজির সরবরাহও প্রায় আলুর মতো থাকলেও দাম যেনো আকাশ ছোঁয়া। তবে অন্য সবজির তুলনায় এক সময় দামের দিক থেকে শীর্ষে থাকা টমেটোও এখন মিলছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

খুলনায় বিক্রির জন্য নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলা থেকে আলু নিয়ে আসা কৃষক শামসুল হক হতাশা প্রকাশ করে বলেন, গত ৩০ বছর ধরে আলুর চাষ করছেন, কিন্তু কখনও তিনি এমন দর পতন দেখেননি।

এবার তিন বিঘা জমি চাষ করেছেন। কৃষাণ, সার ও বীজসহ প্রতিবিঘায় তার খরচ হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় দু’হাজার দু’শ কেজি আলু পেয়েছেন। যা তার আশা মিটিয়েছে। তবে দরপতনের কারণে এখন বিঘাপ্রতি তার ১০ হাজার টাকার ক্ষতি হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

নগরীর স্টেশন রোড কদমতলা কাঁচা বাজারের মেসার্স হাজী জাবেদ আলী মোড়ল বাণিজ্য ভান্ডারে গিয়ে দেখা যায় নীলফামারী জেলার কয়েকজন কৃষক হতাশ হয়ে বসে আছেন। কৃষক আশরাফ আলী ঋণ নিয়ে ১০ বিঘা জামিতে আলু চাষ করেছিলেন। মহাজনের এ টাকা কিভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত। গত ৪০ বছর ধরে তিনি আলু চাষের সঙ্গে জড়িত। এখানে এসে দাম সাড়ে আট টাকা থেকে নয় টাকা শুনে তার ‘মাথায় বাজ পড়া’র মতো মনে হয়েছে। তাছাড়া এখানে প্রতিবস্তা নামাতে তাকে কুলিকে ১৩ টাকা আর আড়তদারকে প্রতিকেজিতে ত্রিশ পয়সা করে দিতে হয়।

মেসার্স হাজী জাবেদ আলী মোড়ল বাণিজ্য ভান্ডারের ম্যানেজার মো. গোলাম মোস্তাফা বলেন, নতুন আলুর উৎপাদন এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। নতুন এ পণ্যটি বেশিদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। প্রতিদিন খুলনার এ বাজারে ৩০ গাড়ি আলু আসছে। ২৫ গড়ির কম হলে দাম বেশি থাকত। তবে এ আলু শেষ হতে আগামী সপ্তাহ লাগবে। তারপর এ পণ্যটির দাম বাড়তে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে বাজারে আলুর দরপতন হলেও ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিটকপি, শিম, লাউসহ শীতের অন্যান্য সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ভরা মৌসুমেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব সবজি। ৪০ টাকার নিচে মিলছে না কিছুই।

নগরীর জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা বাদশা, নাজমুল, রানা ও মনিরুল জানান, বাজারে আজ শনিবার ফুলকপি ৪০, বাঁধাকপি ৩০, লাল বিটকপি ৪০, শিম ৪০ ও ৫০, লাউ প্রতি পিস ৩০ থেকে ৫০, লাল শাক ৬০, পালং শাক ৪০, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চড়া সবজির বাজারে আলুতে স্বস্তি

আপডেট টাইম : ০১:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘সাত কেজি একশ টাকা, সাত কেজি একশ টাকা।’ খুলনা মহানগরী এলাকায় প্রায় ২-৩ সপ্তাহ ধরে এভাবে চিৎকার করে আলু বিক্রি করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় খুলনার বাজারগুলো এখন আলুতে সয়লাব। তবে মাথায় হাত উঠেছে উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের। ট্রাকের ভাড়া মেটানোও দায় হয়ে পড়েছে তাদের জন্য।

খুলনার বাজারে বর্তমানে খুচরা দোকানে আলু প্রতি কেজি ১৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা দরে। গত বছর এ সময়ে প্রতিকেজি আলু ২৬ থেকে ২৭ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

বাজারে অন্যসব সবজির সরবরাহও প্রায় আলুর মতো থাকলেও দাম যেনো আকাশ ছোঁয়া। তবে অন্য সবজির তুলনায় এক সময় দামের দিক থেকে শীর্ষে থাকা টমেটোও এখন মিলছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

খুলনায় বিক্রির জন্য নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলা থেকে আলু নিয়ে আসা কৃষক শামসুল হক হতাশা প্রকাশ করে বলেন, গত ৩০ বছর ধরে আলুর চাষ করছেন, কিন্তু কখনও তিনি এমন দর পতন দেখেননি।

এবার তিন বিঘা জমি চাষ করেছেন। কৃষাণ, সার ও বীজসহ প্রতিবিঘায় তার খরচ হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় দু’হাজার দু’শ কেজি আলু পেয়েছেন। যা তার আশা মিটিয়েছে। তবে দরপতনের কারণে এখন বিঘাপ্রতি তার ১০ হাজার টাকার ক্ষতি হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

নগরীর স্টেশন রোড কদমতলা কাঁচা বাজারের মেসার্স হাজী জাবেদ আলী মোড়ল বাণিজ্য ভান্ডারে গিয়ে দেখা যায় নীলফামারী জেলার কয়েকজন কৃষক হতাশ হয়ে বসে আছেন। কৃষক আশরাফ আলী ঋণ নিয়ে ১০ বিঘা জামিতে আলু চাষ করেছিলেন। মহাজনের এ টাকা কিভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত। গত ৪০ বছর ধরে তিনি আলু চাষের সঙ্গে জড়িত। এখানে এসে দাম সাড়ে আট টাকা থেকে নয় টাকা শুনে তার ‘মাথায় বাজ পড়া’র মতো মনে হয়েছে। তাছাড়া এখানে প্রতিবস্তা নামাতে তাকে কুলিকে ১৩ টাকা আর আড়তদারকে প্রতিকেজিতে ত্রিশ পয়সা করে দিতে হয়।

মেসার্স হাজী জাবেদ আলী মোড়ল বাণিজ্য ভান্ডারের ম্যানেজার মো. গোলাম মোস্তাফা বলেন, নতুন আলুর উৎপাদন এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। নতুন এ পণ্যটি বেশিদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। প্রতিদিন খুলনার এ বাজারে ৩০ গাড়ি আলু আসছে। ২৫ গড়ির কম হলে দাম বেশি থাকত। তবে এ আলু শেষ হতে আগামী সপ্তাহ লাগবে। তারপর এ পণ্যটির দাম বাড়তে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে বাজারে আলুর দরপতন হলেও ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিটকপি, শিম, লাউসহ শীতের অন্যান্য সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ভরা মৌসুমেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব সবজি। ৪০ টাকার নিচে মিলছে না কিছুই।

নগরীর জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা বাদশা, নাজমুল, রানা ও মনিরুল জানান, বাজারে আজ শনিবার ফুলকপি ৪০, বাঁধাকপি ৩০, লাল বিটকপি ৪০, শিম ৪০ ও ৫০, লাউ প্রতি পিস ৩০ থেকে ৫০, লাল শাক ৬০, পালং শাক ৪০, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।