ঢাকা ১১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপি রানা, তার তিনভাইসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৬
  • ২০৬ বার

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমমি আদালতের বিচারক মো. আমিনুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিনভাই- টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি, টাঙ্গাইল জেলার সাবেক ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, কবির হোসেন, সাবেক কমিশনার মাসুদ মিয়া, চাঁন, নুরু এবং সানোয়ার হোসেন। তারা বর্তমানে পলাতক।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪/১২০ বি ধারায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, ফরিদ মিয়া ও সমির টাঙ্গাইল জেলহাজতে রয়েছেন।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসার কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

২০১৪ সালের ১১ আগস্ট শহরের বেবীস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয় আনিসুল ইসলাম রাজাকে। একই অভিযোগে মোহাম্মদ আলী নামে আরও একজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গত ২৪ আগস্ট গ্রেফতার করে। তারা দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

তাদের জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যাকাণ্ডে টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই জড়িত রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি রাজা জানায়, ঘটনার দিন (২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি) সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা রাজাকে দায়িত্ব দেন ফারুক আহমদকে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে কলেজ পাড়ায় তার একটি প্রতিষ্ঠানে ডেকে আনার জন্য। আওয়ামী লীগ অফিসে যাওয়ার সময় পথেই রাজার সঙ্গে ফারুক আহমদের দেখা হয়। রাজা তখন নিজের রিকশা ছেড়ে ফারুক আহমদের রিকশায় ওঠেন এবং তাকে এমপি রানার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। পরবর্তী সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়ে ফারুক আহমদের সঙ্গে কথা হয়। এক পর্যায়ে ফারুক আহমেদকে ওই পদে প্রার্থী না হওয়ার অনুরোধ করেন। ফারুক আহমদ এতে রাজি হননি।

পুলিশ সূত্র আরও জানায়, এ বিষয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে ফারুক আহমেদ সেখান থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। এসময় অন্যরা তার মুখ চেপে ধরেন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর প্রভাবশালী নেতার নির্দেশে সেখানকার রক্ত মুছে ফেলা হয়। পরে একটি অটো রিকশায় ফারুক আহমদের মরদেহ নিয়ে আসামি রাজাসহ দুজন দুপাশে বসেন এবং ফারুক আহমদের বাসার কাছে ফেলে রেখে আসেন।

এদিকে নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো ও আসামিদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এমপি রানা, তার তিনভাইসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

আপডেট টাইম : ০১:১৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৬

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমমি আদালতের বিচারক মো. আমিনুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিনভাই- টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি, টাঙ্গাইল জেলার সাবেক ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, কবির হোসেন, সাবেক কমিশনার মাসুদ মিয়া, চাঁন, নুরু এবং সানোয়ার হোসেন। তারা বর্তমানে পলাতক।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪/১২০ বি ধারায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, ফরিদ মিয়া ও সমির টাঙ্গাইল জেলহাজতে রয়েছেন।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসার কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

২০১৪ সালের ১১ আগস্ট শহরের বেবীস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয় আনিসুল ইসলাম রাজাকে। একই অভিযোগে মোহাম্মদ আলী নামে আরও একজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গত ২৪ আগস্ট গ্রেফতার করে। তারা দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

তাদের জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যাকাণ্ডে টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই জড়িত রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি রাজা জানায়, ঘটনার দিন (২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি) সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা রাজাকে দায়িত্ব দেন ফারুক আহমদকে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে কলেজ পাড়ায় তার একটি প্রতিষ্ঠানে ডেকে আনার জন্য। আওয়ামী লীগ অফিসে যাওয়ার সময় পথেই রাজার সঙ্গে ফারুক আহমদের দেখা হয়। রাজা তখন নিজের রিকশা ছেড়ে ফারুক আহমদের রিকশায় ওঠেন এবং তাকে এমপি রানার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। পরবর্তী সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়ে ফারুক আহমদের সঙ্গে কথা হয়। এক পর্যায়ে ফারুক আহমেদকে ওই পদে প্রার্থী না হওয়ার অনুরোধ করেন। ফারুক আহমদ এতে রাজি হননি।

পুলিশ সূত্র আরও জানায়, এ বিষয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে ফারুক আহমেদ সেখান থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। এসময় অন্যরা তার মুখ চেপে ধরেন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর প্রভাবশালী নেতার নির্দেশে সেখানকার রক্ত মুছে ফেলা হয়। পরে একটি অটো রিকশায় ফারুক আহমদের মরদেহ নিয়ে আসামি রাজাসহ দুজন দুপাশে বসেন এবং ফারুক আহমদের বাসার কাছে ফেলে রেখে আসেন।

এদিকে নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো ও আসামিদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।