হাওর বার্তা ডেস্কঃ নারীদের বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে স্টেম সেল প্রয়োগের মাধ্যমে নবদিগন্তে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ডিম্বাশয়ে স্টেম সেল থেরাপি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে গর্ভধারণের পদ্ধতিকে দেশে ইনফার্টিলিটি চিকিৎসায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এ পদ্ধতি ইতোমধ্যে আশা জাগিয়েছে বন্ধ্যা নারীদের মধ্যে।
স্টেম সেল থেরাপি কি?
কেন দরকার হয় স্টেম সেল থেরাপি?
বর্তমান সময়ে নানা কারণে ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণুর স্বল্পতাজনিত বন্ধ্যত্বের সমস্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এসব রোগীর প্রাকৃতিকভাবে বা স্বাভাবিক উপায়ে গর্ভধারণের সম্ভাবনা মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের বায়োলজিক্যাল মা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না বলে ডোনারের ডিম্বাণু বা ভ্রূণের ওপর নির্ভর করতে হয়, যা আমাদের দেশে সামাজিক বা ধর্মীয় বিধিনিষেধের কারণে সম্ভব হয় না। স্টেম সেল থেরাপি এই জটিলতা দূর করতে সাহায্য করবে।
ডিম্বাশয়ে স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নতুন ডিম্বাণু তৈরির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বন্ধ্যত্বের জটিলতায় ভোগা রোগীদের বায়োলজিক্যাল মা হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানে সর্বাধুনিক সংযোজন। স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে নিজের ডিম্বাণু থেকেই সন্তান লাভ করা সম্ভব।
কোথায় পাওয়া যাবে এ বিষয়ে পরামর্শ?
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাকটিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগ দেশে বন্ধ্যত্ব দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগে এই সেবা নিতে পারবেন নারীরা। এই বিভাগে পাওয়া যাবে এ বিষয়ের সঠিক পরামর্শ। এই বিভাগে বহির্বিভাগ সেবা, বিশেষ ক্লিনিক সেবা, বিভিন্ন ধরণের অভ্যন্তরীণ সেবা, বিভিন্ন ধরণের অপারেশন, ল্যাব সুবিধাসহ বহুবিধ চিকিৎসা সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে।
জানা যায়, স্টেম সেল এমন কোষ, যার সব ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে। লক্ষ কোটি কোষের সমন্বয়ে মানুষের দেহ তৈরি, আর কোষগুলোর কেন্দ্রে থাকে জোড়ায় জোড়ায় ক্রোমোজোম- যেটিকে বলা হয় বংশগতির মূল উপাদান।
মানুষের সমস্ত কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা ২৩ জোড়া থাকলেও শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর ক্ষেত্রে তা অর্ধেক হয়ে যায়। শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিজেদের মধ্যে মিলিত হয়ে যখন একক কোষ সৃষ্টি করে, তখন তাতে ক্রোমোজোম সংখ্যা ২৩ জোড়া হয়ে যায়। এই কোষকেই বলা হয় স্টেম সেল, যার থেকে একটি সম্পূর্ণ দেহ তৈরি হয় নারীর গর্ভে। চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে ‘স্টেম সেলের’ মাধ্যমে চিকিৎসা হচ্ছে।