হাওর বার্তা ডেস্কঃ গেল এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বাড়লো ৪৫ টাকা। ধারাবাহিক দাম বৃদ্ধির ফলে ব্রয়লার মুরগির কেজি এখন ২০০ টাকা হয়ে গেছে।
ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি গেল এক সপ্তাহে সোনালী মুরগির দামও বেড়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম। অবশ্য এরপরও শীতের সবজির ভরা মৌসুমে বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। আর চার সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা।
ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির। ব্যবসায়ীরা সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা। আর তিন সপ্তাহ আগে ছিল ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা।
মুরগির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম। এ কারণে দফায় দফায় দাম বাড়ছে। দাম বাড়ার প্রবণতা দেখে আমরা কয়েক সপ্তাহ আগেই ধারণা করেছিলাম যে কোনো সময় কেজি ২০০ টাকা হয়ে যাবে।
রামপুরার ব্যবসায়ী মো. মিলন বলেন, যে হারে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে, তাতে কেজি আড়াইশ’ টাকা হলেও আমরা অবাক হবো না। কারণ গতকালই ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ টাকা বিক্রি করেছি। একদিনের ব্যবধানেই এখন ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা হয়েছে।
রামপুরা বাজারে মুরগি কিনতে আসা মো. মামুন বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ টাকা বিক্রি হতে দেখেছি। আজ বাজারে এসে দেখি ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এভাবে দাম বাড়লে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের কপাল থেকে মাংস উঠে যাবে। সংশ্লিষ্টদের উচিত দাম নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
মালিবাগ বাজারে কথা হয় ব্যাংক কর্মকর্তা মাহিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঠিকমতো বাজার মনিটরিং না থাকার কারণে একের পর এক জিনিসের দাম বাড়ছে। এভাবে দাম বাড়ায় আমাদের মতো সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে।
মুরগির দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহের মতো নতুন দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা।
এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৩০ থেকে ৬০ টাকা। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। তবে বিচিওয়ালা শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সেই সঙ্গে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পুরাতন আলুর। গত সপ্তাহের মতো পুরাতন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। তবে কমেছে নতুন আলুর দাম। গত সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া নতুন আলু এখন ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটো ও গাজর। গত সপ্তাহের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। আর গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
এছাড়া বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শাল গমের (ওল কপি) কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলাশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাক বিক্রি হচ্ছে। আর পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। এগুলোর দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামেও পরিবর্তন আসেনি।