ঢাবিছাত্রী ইলমার মৃত্যু ঘটনায় , স্বামী কারাগারে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলার (২৪) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় স্বামী ইফতেখার আবেদীনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) তৃতীয় দফায় দুদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত বুধবার (২২ ডিসেম্বর) ইফতেখারকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছিল। বনানী থানার এ হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ওইদিন আসামিকে আরও তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিব দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর ইফতেখারকে আদালতে হাজির করে পুলিশ পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিব দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১৫ ডিসেম্বর ইফতেখার আবেদীনকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর বনানীতে স্বামীর বাসায় মৃত্যু হয় ঢাবি শিক্ষার্থী ইলমার। সুরতহালে তার শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ইলমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি করেন, ‘ইলমা আত্মহত্যা করেছেন’।

ইলমার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন ইলমাকে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।

ইলমার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ওই রাতেই তার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ইলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীন, ইফতেখারের মা শিরিন আমিন ও পালক বাবা মো. আমিনকে আসামি করা হয়। এরপরই ইফতেখার আবেদীনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, চলতি বছরের এপ্রিলে ইলমার সঙ্গে ইফতেখারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ইফতেখার ও তার মা-বাবা ইলমাকে পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে বলেন। ইলমা পড়া বন্ধ করতে না চাওয়ায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। একপর্যায়ে মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। বিয়ের তিন মাস পর ইফতেখার কানাডায় চলে যান।

এজাহারে আরও বলা হয়, এরই মধ্যে গত ১২ ডিসেম্বর ইফতেখার ঢাকায় ফেরেন। এরপর সাইফুল ইসলামের (মামলার বাদীর) স্ত্রীর মুঠোফোনে কল করে ইফতেখার জানান, তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য গুলশানের একটি হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। তাদের আসতে বলেন তিনি।

এজাহারে তিন আসামি পরস্পর যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে ইলমাকে মারধর করে হত্যা করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর