ড. নিয়াজ পাশাধান কাটার এ সময় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে, যা হাওরে আগাম বন্যার বার্তা বয়ে আনছে । বিভিন্ন কারণে হাওরাঞ্চলে এখন আর ধান কাটার শ্রমিক ‘দা-ওয়াল’রা দল বেঁধে অধিক পরিমানে আসে না । ফলে আগাম বন্যা, জলোছ্বাসের হুমকিতে হাওরবাসীর একমাত্র বোরো ধান। স্বল্পসময়ে ধান কেটে, পরিবহণ, ঝাড়াই-মাড়াই এবং রোদে শুকিয়ে গোলায় তুলতে হয় । ‘দা-ওয়াল’ এর অভাবে যে কোন মুহূর্তে সব কিছু তলিয়ে যেতে পারে সোনার ধান।
উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগের ঘনঘটা মোকাবেলার মত হাওরাঞ্চলে আসন্ন আগাম বন্যা প্রতিরোধী প্রস্ততি থাকা দরকার । উপকূলীয় অঞ্চলে সাইক্লোন সব লন্ডভন্ড করে প্রাণহানি ঘটায় । কিন্ত হাওরের আগাম বন্যায় একমাত্র ফসল হারিয়ে এক একজন কৃষক ‘জিন্দা লাশ’ এ পরিণত করে।
দেশের অন্য এলাকায় এই মুহূর্তে বড় কোন ধান কাটার মৌসুম নাই । অলসভাবে পড়ে থাকা এসব যন্ত্রগুলো এই মুহূর্তে হাওরবাসীর বড় প্রয়োজন । সরকারি পৃষ্টপোষকতা, নির্দেশণা এবং আন্তরিকতা তা বাস্তবায়ণ করতে পারে । সরকার কিছু যন্ত্রপাতি হাওরাঞ্চলে দিয়েছেন, এ জন্য ধন্যবাদ। আরো প্রয়োজন । প্রয়োজন ‘হাওর উন্নয়ন অধিদপ্তরের’ মহাপরিকল্পণা বাস্তবায়ন ।
কৃষকবান্ধব সরকারের নিকট অনুরোধ দেশের সকল কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার, রিপার আর ধান কাটার লোকবল নিয়ে হাওরের কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি । জাতীয় স্বার্থেই দ্রুত কেটে ফ্লাশ ফ্লাড হতে ধান রক্ষা অপরিহার্য। মনে রাখতে হবে, হাওর-ভাটি বাংলা ‘বাংলার খাদ্য ভান্ডার’ । এর ক্ষতি হবে আমাদের জাতীয় ক্ষতি ।
ড. নিয়াজ পাশা : কৃষি প্রকৌশলী ও হাওর ভূমিপুত্র