বিদেশে চাহিদা বেশি থাকালেও সম্প্রতি দেশের অভ্যন্তরেও বেড়েছে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার। চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি পণ্যের উৎপাদনেও এসেছে বৈচিত্র্য। উৎপাদনে গতানুগতিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে এখন বহুমুখী গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে পাট। ফলে ধিরে ধিরে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে শুরু করেছে সোনালী আঁশ।
জানা গেছে, গতানুগতিক বস্তা, ব্যাগে আর আগেরে মতো সীমাবদ্ধ নেই পাট। এখন ঘর সাজানোসহ নানা সামগ্রী তৈরি হচ্ছে পাট থেকে। এর মধ্যে রয়েছে শতরঞ্জি, গায়ের ব্লেজার, জুতা, বাহারি রঙ-বেরঙের ব্যাগ, মেয়েদের হ্যান্ড ব্যাগ, ঝুড়ি, ওড়নার মতো বিচিত্র সব জিনিসপত্র। এটা সম্ভব হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পাট থেকে তৈরি সুতার কারণে।
পরিবেশবান্ধব এসব পণ্যে নান্দনিকতার ছোঁয়ার কারণে রুচিশীল ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। এরই ফলশ্রুতিতে বাড়ছে পাটজাত বহুবিধ পণ্যের রফতানিও। পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে অর্থনীতিতে পাটের অবদান বাড়ছে ক্রমেই।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নতি ও বাণিজ্যের বিভিন্ন ধারাকে জনপ্রিয় করতে পাট দিয়ে নানা পণ্য তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও চটকে বিভিন্ন আকৃতিতে কেটে সেলাই ও নকশা করে তৈরি হচ্ছে শৌখিন পণ্য।
এ বিষয়ে জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, পাটপণ্য ব্যবহারের আইন গত চার বছর আগে হলেও এর বস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি পাটপণ্য ব্যবহার নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে এ খাত। ফলে পাটের ব্যবহারের সঙ্গে বেড়েছে চাহিদা। আশার মুখ দেখছেন ব্যবসায়ীরা। আর তা অব্যাহত রাখতে আইন বাস্তবায়নে সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করা দরকার।
তিনি আরো বলেন, পরিবেশ বান্ধব কৃষি পণ্য হিসেবে পাটজাত পণ্যের বর্হিবিশ্বে ব্যাপক সুনাম রয়েছে। এ খাত থেকে আমারা একসময় শতভাগ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছি।তাই সম্ভাবনাময় এ কৃষি পণ্যের সোনালী জৌলুশ ফিরে পেতে সকারের সব ধরণের সহযোগিতার পাশাপাশি পাটকে কৃষিশিল্প হিসেবে ঘোষণা করা দরকার। এতে পরিবেশ বান্ধব এ পণ্যটি দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আরো বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।
এদিকে, বাংলাদেশ পরিবেশ বান্ধব শপিং ব্যাগ প্রস্তুতকারক অর্গানাইজেসন, টিস্যু পলিথিন বর্জন করে পরিবেশ রক্ষায় কাগজ, চট, ও কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহারে আন্দোলন করে আসছে।
এ বিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল হোসেন বলেন, বর্তমানে কাগজ, কাপড়, চটের চাহিদা বাড়েছে কয়েকগুন। তারপরও টিস্যু পলিথিন বাজারজাত হওয়ায় যেমন ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের তেমনি দেশিয় কাগজ শিল্প ধ্বংস হচ্ছে।