ঢাকা ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভর্তি পরীক্ষায় মাদরাসা ছাত্রদের সাফল্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩২:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১
  • ১৪৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী ও তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত মানুষ মাদরাসা শিক্ষাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে থাকেন। তাদের ধারণা মেধাহীন এবং গরীব ঘরে জন্ম নেয়া সুবিধা বঞ্ছিত ছেলেমেয়েরা মাদরাসা শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। মাদরাসায় যারা পড়াশোনা করেন তারা মেধাহীন এবং কর্মজীবনে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জেম আর মাদরাসার শিক্ষক হন। মাদরাসা পড়–য়া মেধাহী শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে পড়–য়া ছেলেমেয়েদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠতে পারেন না। মাদরাসায় লেখাপড়া শুরু করে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা যে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরি করছেন এটা তারা বিশ্বাস করতে চান না।

মাদরাসা শিক্ষা বিদ্বেষী এই তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত প্রগতিশীলদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন মাদরাসা পড়–য়া ৪ জন শিক্ষার্থী। তারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধাতালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছেন। এসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিট, গুচ্ছভুক্ত ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিট, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) এবং ঢাবির অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি ৭ কলেজের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মেধার স্বাক্ষর রেখে প্রথম হয়েছেন। জানা গেছে ৪ শিক্ষার্থীই ঢাকার ডেমরা এলাকার দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার ছাত্র।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী অংশ গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে খুব কম পরীক্ষার্থীই কৃতকার্য হন। করোনা পরবর্তী এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম হন দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থী মো. জাকারিয়া। তিনি বলেন, শিক্ষকদের অবদান এবং শিক্ষার্থীদের চেষ্টার ফলেই মাদরাসার শিক্ষার্থীরা অনেক ভালো অবস্থানে আছেন। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের কখনো প্রাইভেট পড়তে হতো না। প্রয়োজনে শিক্ষকরা অতিরিক্ত ক্লাস নিতেন।
গুচ্ছভুক্ত ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে সর্বোচ্চ ৯৩ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে প্রথম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে ৩৬তম হন মাদরাসার শিক্ষার্থী রাফিদ হাসান সাফওয়ান। তিনি বলেন, মাদরাসায় ১০০ নম্বরের সাধারণ জ্ঞান পড়ানো হয়। এটি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানে ভালো নম্বর পেতে সাহায্য করে। শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, সিনিয়র শিক্ষার্থীদের উৎসাহ, মাদরাসার পাঠদান পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীদের চেষ্টার কারণে এখানকার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় অনেক ভালো করছেন।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম হন মো. হাসিবুর রহমান। মাদরাসায় পড়ালেখা করা এই ছাত্র বলেন, দারুননাজাতে বিজ্ঞান বিভাগের সব শিক্ষক যথেষ্ট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও আন্তরিক। তবে শিক্ষকের সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকায় অন্যান্য বিভাগের চেয়ে আমরা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা একটু পিছিয়ে থাকি। লেখাপড়া করলে ভাল রেজাল্ট করা সম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অন্তভূক্ত ৭ কলেজের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম মো. নাজমুল আলম। তিনিও মাদরাসার ছাত্র।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভর্তি পরীক্ষায় মাদরাসা ছাত্রদের সাফল্য

আপডেট টাইম : ০৯:৩২:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী ও তথাকথিত উচ্চ শিক্ষিত মানুষ মাদরাসা শিক্ষাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে থাকেন। তাদের ধারণা মেধাহীন এবং গরীব ঘরে জন্ম নেয়া সুবিধা বঞ্ছিত ছেলেমেয়েরা মাদরাসা শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। মাদরাসায় যারা পড়াশোনা করেন তারা মেধাহীন এবং কর্মজীবনে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জেম আর মাদরাসার শিক্ষক হন। মাদরাসা পড়–য়া মেধাহী শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে পড়–য়া ছেলেমেয়েদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠতে পারেন না। মাদরাসায় লেখাপড়া শুরু করে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা যে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরি করছেন এটা তারা বিশ্বাস করতে চান না।

মাদরাসা শিক্ষা বিদ্বেষী এই তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত প্রগতিশীলদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন মাদরাসা পড়–য়া ৪ জন শিক্ষার্থী। তারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধাতালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছেন। এসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিট, গুচ্ছভুক্ত ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিট, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) এবং ঢাবির অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি ৭ কলেজের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মেধার স্বাক্ষর রেখে প্রথম হয়েছেন। জানা গেছে ৪ শিক্ষার্থীই ঢাকার ডেমরা এলাকার দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার ছাত্র।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী অংশ গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে খুব কম পরীক্ষার্থীই কৃতকার্য হন। করোনা পরবর্তী এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম হন দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থী মো. জাকারিয়া। তিনি বলেন, শিক্ষকদের অবদান এবং শিক্ষার্থীদের চেষ্টার ফলেই মাদরাসার শিক্ষার্থীরা অনেক ভালো অবস্থানে আছেন। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের কখনো প্রাইভেট পড়তে হতো না। প্রয়োজনে শিক্ষকরা অতিরিক্ত ক্লাস নিতেন।
গুচ্ছভুক্ত ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে সর্বোচ্চ ৯৩ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে প্রথম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে ৩৬তম হন মাদরাসার শিক্ষার্থী রাফিদ হাসান সাফওয়ান। তিনি বলেন, মাদরাসায় ১০০ নম্বরের সাধারণ জ্ঞান পড়ানো হয়। এটি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানে ভালো নম্বর পেতে সাহায্য করে। শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, সিনিয়র শিক্ষার্থীদের উৎসাহ, মাদরাসার পাঠদান পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীদের চেষ্টার কারণে এখানকার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় অনেক ভালো করছেন।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম হন মো. হাসিবুর রহমান। মাদরাসায় পড়ালেখা করা এই ছাত্র বলেন, দারুননাজাতে বিজ্ঞান বিভাগের সব শিক্ষক যথেষ্ট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও আন্তরিক। তবে শিক্ষকের সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকায় অন্যান্য বিভাগের চেয়ে আমরা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা একটু পিছিয়ে থাকি। লেখাপড়া করলে ভাল রেজাল্ট করা সম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অন্তভূক্ত ৭ কলেজের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম মো. নাজমুল আলম। তিনিও মাদরাসার ছাত্র।