তিন বছরের ছেলের অপরাধে এখন বাবা কারাগারে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বরগুনার আমতলীতে ৩ বছরের শিশুর মারামারির জন্য বাবাকে পাঠানো হয়েছে কারাগারে। কারাগারে পাঠানোর আগে সেই শিশুটির বাবার গলায় জড়িয়ে ধরে কান্না অনেকের মনেই দাগ কেটেছে। বাবার কাছ থেকে শিশুটিকে সরানো যাচ্ছিলো না।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) আমতলী সহকারী জজ আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আমতলী পৌরসভার সবুজবাগ এলাকার আবু হানিফের ছেলে হামিম ও একই এলাকার বাহাদুর খানের ছেলে মো. আলিফ। তাদের বয়স তিন বছর। এদের মধ্যে আলিফের বাবা বাহাদুর খানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আলিফ ও তার বাবার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানা যায়। ছবিতে দেখা যায়, হাতকড়া পরিহিত বাবাকে জড়িয়ে ধরে আছে শিশু আলিফ। ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

হামিম ও আলিফের বাসা পাশাপাশি হওয়ায় তারা সারাক্ষণ একসঙ্গে থাকে। পারিবারিকভাবেও তাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এক মাস আগে বাড়ির উঠানে বসে খেলছিল হামিম ও আলিফ। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। এতে চোখে আঘাত লেগে হামিম আহত হয়। পরে আলিফের পরিবার হামিমকে চিকিৎসা করায়।

ঘটনার এক মাস পর হামিমের মা মাইসুরা বাদী হয়ে আলিফের বাবা বাহাদুর খানসহ চারজনকে আসামি করে আমতলী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলায় সোমবার আলিফের বাবা বাহাদুর খানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

আলিফের চাচা এইচএম জুয়েল বলেন, ‘সামান্য বিষয় তারা আদালত পর্যন্ত নিয়ে গেছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমরা হামিমের চিকিৎসার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়েছিলাম। তবুও তারা মামলা উঠিয়ে নেয়নি। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

স্থানীয় সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবক কাওসার আহমেদ বলেন, বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছি। শিশুরা ঝগড়া করবে আবার মিশবে। তবে তাদের ঝগড়া নিয়ে পরিবারের মধ্যে বিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুরা তাহলে শিখবেটা কী?’

আমতলী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড (সবুজবাগ) কাউন্সিলর মোয়াজ্জেম হোসেন ফরহাদ বলেন, ‘বিষয়টি শুরু থেকেই আমি জানি। ওরা দুজনই শিশু। খেলার ছলে এরকম ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে এ ঘটনা মামলা পর্যন্ত যাওয়া ঠিক হয়নি। আমিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য কয়েকজন হামিমের পরিবারকে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেও মামলা ওঠাননি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে হামিমের পরিবারের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর