অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘আজকের দিনটিই আমাদের জন্মদিন। ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে ২৫ মার্চ রাতেই পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর গণহত্যা ও বীর বাঙালির প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও আমাদের জন্ম হয়েছে।’
মহান স্বাধীনতা দিবসের ৪৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত দিনব্যাপী ‘স্বাধীনতা উৎসব-২০১৬’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি এম আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ একাডেমির চেয়ারম্যান ড. আবুল আজাদ।
অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম ৪৫টি দেশের হাইকমিশনার, রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ওই সকল দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
এ সময় শুভেচ্ছাস্বরূপ আরো বক্তব্য করেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা, রাশিয়ান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. আনাতোলী ওয়াই ডেবিডুকো, নেপালি দূতাবাসের প্রতিনিধি সুশীল কে লাংশান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ফকির আলমগীর, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমির উপদেষ্টা ড. শরীফ আশরাফুজ্জামান, কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এম শাহীনুর রহমান প্রমুখ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য বাংলার মানুষ শোষণের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। নিজেদের জীবন নিজেদের মতো করে গড়ে তুলতে যখন বাধার সম্মুখীন হয়েছে, তখনই তারা যুদ্ধ করেছে।
তিনি বলেন, ‘এ সময় পরম বন্ধুর মতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তারা আমাদের ১ কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে।’
মুহিত বলেন, তবে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থন না পেলে ইন্দিরা গান্ধীর পক্ষে হয়তো এতটা সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব হতো না। ওই সময় বাংলাদেশ ইস্যুতে সোভিয়েত ইউনিয়ন জাতিসংঘে তিনবার বাংলাদেশের পক্ষে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে। আর এ বিষয়টিই ইন্দিরা গান্ধীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে শক্তি যুগিয়েছে।
তিনি বলেন, বাঙালির জীবনের তাই সবচেয়ে বড় গৌরবজনক অধ্যায় হলো ১৯৭১ সাল।
নসরুল হামিদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ক্লাস ওয়ানে পড়েন। এখন তার আফসোস হয়, কেন তিনি বড় ছিলেন না আর যুদ্ধ যেতে পারলেন না।
তবে সে আফসোস ঘোচানোর জন্য তিনি আরেকটি যুদ্ধে নেমেছেন উল্লেখ করে বলেন, সে যুদ্ধ হলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার সংগ্রাম।
হর্ষবর্ধন শ্রীংলা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ যে সম্পর্ক বিরাজমান রয়েছে, আগামীতে সমতার ভিত্তিতে তা আরো এগিয়ে যাবে।
স্বাধীনতার দিনে এ অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন উল্লেখ করে তিনি ভারতীয় নাগরিকদের পক্ষে বাংলাদেশিদের স্বাধীনতার শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি এবং বিভিন্ন দূতাবাস ও হাইকমিশন থেকে আগত অতিথিদের উত্তরীয় পড়িয়ে সম্মাননা জানানো হয়।