হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমানে খুবই পরিচিত একটি রোগ হচ্ছে ডায়াবেটিস। প্রায় সব পরিবারেই কারো না কারো এই রোগটি হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক। যা কেবল আমাদের দেশেই নয়, সমগ্র বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়। সেসব উপদেশগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ওজন কমানো।
স্বাস্থ্যকর বিএমআই এবং স্বাস্থ্যকর ওজন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সাহায্য করতে পারে। কিন্তু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ওজন কমানো একটু বেশি কঠিন। এর পেছনে রয়েছে তিনটি কারণ। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কোন তিনটি কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ওজন কমানো কঠিন হয়-
ইনসুলিন রেসিস্টেন্স
কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। অগ্ন্যাশয় দ্বারা ইনসুলিন নিঃসৃত হয় যা রক্ত থেকে গ্লুকোজ বের করে কোষে পৌঁছাতে সাহায্য করে যেখানে এটি শক্তি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এই প্রক্রিয়া ঠিকভাবে কাজ করে না। তাদের শরীর ইনসুলিনের ক্রিয়া প্রতিরোধী হয়ে ওঠে এবং ইনসুলিন রক্ত থেকে গ্লুকোজ সরানোর ক্ষেত্রে ততটা কার্যকরী থাকে না। ফলে কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পর তাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।
রক্তের উচ্চ গ্লুকোজ কমাতে শরীর বেশি ইনসুলিন তৈরি করে। ইনসুলিনের আরো একটি কাজ রয়েছে, তা হলো চর্বি সঞ্চয় করা এবং সঞ্চয়কৃত চর্বি থেকে চর্বি নিঃসরণ বন্ধ করা। সুতরাং, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ওজন কমানো কঠিন হয়ে পড়ে।
ডায়াবেটিসের ওষুধ
ইনসুলিন চর্বি সঞ্চয় করতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য ইনসুলিন গ্রহণ করলেও কিছু ওজন বাড়তে পারে। কিছু ওষুধ অগ্ন্যাশয়কে আরো ইনসুলিন উৎপাদনে উদ্দীপিত করে কাজ করে, যা ওজন বাড়ানোর দিকেও নিয়ে যেতে পারে।
রক্তে শর্করার মাত্রা কমানোর সর্বোত্তম উপায় হলো কার্বোহাইড্রেট খরচ কমানো। আপনার খাবারের তালিকা কেমন হবে সেই ধারণা পেতে আপনি একজন পুষ্টিবিদের সাহায্য নিতে পারেন।
সব সময় ক্ষুধা অনুভব করা
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাদ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয় যেমন তাদের ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ রাখা, কার্ব গ্রহণ কম করা এবং অল্প অল্প করে খাবার খাওয়া। কখনো কখনো এই পরামর্শ অনুসরণ করলে তাদের ক্ষুধা লাগে যার ফলে বেশি খাওয়ার ইচ্ছে হয়।
কার্ব সমৃদ্ধ খাবার রক্তে শর্করার বৃদ্ধি ঘটায়। তাই এ ধরনের খাবার কম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে যায়। যা বৈচিত্র্য ঘন ঘন ক্ষুধা উদ্দীপিত করে। ক্ষুধার্ত ব্যক্তি বেশি খাবেই! যার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়।