ঢাকা ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ষড়যন্ত্রের শিকার তাসকিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৩৮:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ মার্চ ২০১৬
  • ৪১৬ বার

ঘুরে ফিরে সেই ১৯শে মার্চ। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ১৯শে মার্চই আম্পায়ারদের বিতর্কিত ‘নো বল’ সিদ্ধান্তের বলি দিতে হয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। এবার আইসিসির সিদ্ধান্তের বলি দিতে হল তাসকিন এবং আরাফাত সানিকেও। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে গেলেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই দুই বোলার। আরাফাত সানির অ্যাকশনকে অবৈধ ঘোষণা সবাই মেনে নিলেও, তাসকিন আহমেদের অ্যাকশনকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না এ দেশের ক্রিকেট পাগল মানুষ। সবারই প্রশ্ন, আসলেই কি তাসকিন এবং সানির অ্যাকশন অবৈধ?

Taskin সানির একশন নিয়ে করা আইসিসির বিস্তারিত রিপোর্টটি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন ব্যরিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান নামে একজন আইনিজীবী। যিনি আবার আইন পরামর্শক হিসেবেও যুক্তে রয়েছেন বিসিবির সঙ্গে। তার স্ট্যাটাসেই জানা যাচ্ছে, তাসকিন-সানির বিষয়ে বিসিবিকে নানা সময় নানা পরমার্শ দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আইসিসি থেকে বিসিবিকে সরবরাহ করা তাসকিনের অ্যাকশন সম্পর্কিত রিপোর্টটি তিনি বিসিবির কাছ থেকেই পেয়েছেন। সেটাই তুলে ধরেছেন স্ট্যাটাসে।

মুস্তাফিজুর রহমান খান কর্তৃক প্রকাশ হওয়া সেই রিপোর্টেই তাসকিনের অ্যাকশন নিয়ে বলা হয়েছে বলা হয়েছে, সানির প্রায় সবগুলো বল করার সময় কনুই ১৫ ডিগ্রী বেঁকে যায়। এর আগেও একবার সানির একশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু তাসকিন?

এখানেই ঘটলো আসল বিপত্তি! তাসকিনের রিপোর্টের সাথে আইসিসির কাজের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যে ম্যাচে তাসকিনের বোলিং একশন নিয়ে আম্পয়াররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেই ম্যাচে তাসকিনের কোন নির্দিষ্ট ডেলিভারির কথা তারা সন্দেহজনক হিসেবে উল্লেখ করেননি; কিন্তু তাকে অবৈধ বলা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট ডেলিভারির জন্যেই। তবে কোন নির্দিষ্ট ডেলিভারির জন্য অবৈধ করা হল?

রিপোর্টে বলা আছে, তাসকিনের শুধু বাউন্সারে সমস্যা ছিল; কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, যে ম্যাচে তাসকিনের বোলিং নিয়ে সন্দেহ করা হয়েছিল সেই ম্যাচে তিনি কোন বাউন্সই দেননি! অথচ দীর্ঘ ভ্রমণ ক্লান্তি নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পর চেন্নাইতে মাত্র ৩ মিনিটে ৯টি বাউন্স দিতে বলা হয় তাকে। যেখানে তিনটিতে সমস্যা ধরা পরে বলের গতি কম হয়ে যাওয়ার কারণে।

তাসকিনের দেয়া স্টক ডেলিভারি এবং ইয়র্কারেও কোন সমস্যা পায়নি বায়োম্যাকানিক্যাল পরীক্ষকরা। যে সন্দেহজনক ডেলিভারি তিনি ম্যাচ কন্ডিশনে করেননি সেটার জন্য কেন শাস্তি পাবেন তাসকিন?

বাউন্সারে সমস্যা থাকলেও নিয়মানুযায়ী তাসকিনকে সাবধান করা যেতে পারতো। এটাই ছিল তার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি। বলা হতে পারতো, পরবর্তীতে এ ধরনের বাউন্স ম্যাচ চলাকালীন দিলে তাকে নিষিদ্ধ করা হবে- এমনটা বলে।

অথচ নিয়ম না থাকলেও সামান্য ওই তিনটি বাউন্সেই নিষিদ্ধ করা হলো তাসকিনকে! শুধুই কী বাউন্স নাকি এতে অন্য কিছু জড়িয়ে? কে জানে, হয়তো আইসিসি চেয়েওছিল বিশ্বকাপের সময়টাতে তাসকিনকে নিষিদ্ধ করতে। নাহলে গত দু বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে তার বোলিংয়ে কোন সমস্যা দেখা দেয়নি কিন্তু বিশ্বকাপ আসতেই সন্দেহের জালে আটকা পরতে হলো কেন তাকে। ষড়যন্ত্রের শিকারই যে তাসকিন- এটা প্রায় নিশ্চিত এখন।

মুস্তাফিজুর রহমান নামে ওই ব্যাক্তিই বিসিবিকে পরামর্শ দিচ্ছেন, আইসিসির রেগুলেশন ২.৩.১-এর রিভিউ করার। প্রয়োজনে সুইজারল্যান্ডের কোর্ট অব আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্টসে যাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ষড়যন্ত্রের শিকার তাসকিন

আপডেট টাইম : ০১:৩৮:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ মার্চ ২০১৬

ঘুরে ফিরে সেই ১৯শে মার্চ। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ১৯শে মার্চই আম্পায়ারদের বিতর্কিত ‘নো বল’ সিদ্ধান্তের বলি দিতে হয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। এবার আইসিসির সিদ্ধান্তের বলি দিতে হল তাসকিন এবং আরাফাত সানিকেও। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে গেলেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই দুই বোলার। আরাফাত সানির অ্যাকশনকে অবৈধ ঘোষণা সবাই মেনে নিলেও, তাসকিন আহমেদের অ্যাকশনকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না এ দেশের ক্রিকেট পাগল মানুষ। সবারই প্রশ্ন, আসলেই কি তাসকিন এবং সানির অ্যাকশন অবৈধ?

Taskin সানির একশন নিয়ে করা আইসিসির বিস্তারিত রিপোর্টটি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন ব্যরিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান নামে একজন আইনিজীবী। যিনি আবার আইন পরামর্শক হিসেবেও যুক্তে রয়েছেন বিসিবির সঙ্গে। তার স্ট্যাটাসেই জানা যাচ্ছে, তাসকিন-সানির বিষয়ে বিসিবিকে নানা সময় নানা পরমার্শ দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আইসিসি থেকে বিসিবিকে সরবরাহ করা তাসকিনের অ্যাকশন সম্পর্কিত রিপোর্টটি তিনি বিসিবির কাছ থেকেই পেয়েছেন। সেটাই তুলে ধরেছেন স্ট্যাটাসে।

মুস্তাফিজুর রহমান খান কর্তৃক প্রকাশ হওয়া সেই রিপোর্টেই তাসকিনের অ্যাকশন নিয়ে বলা হয়েছে বলা হয়েছে, সানির প্রায় সবগুলো বল করার সময় কনুই ১৫ ডিগ্রী বেঁকে যায়। এর আগেও একবার সানির একশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু তাসকিন?

এখানেই ঘটলো আসল বিপত্তি! তাসকিনের রিপোর্টের সাথে আইসিসির কাজের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যে ম্যাচে তাসকিনের বোলিং একশন নিয়ে আম্পয়াররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেই ম্যাচে তাসকিনের কোন নির্দিষ্ট ডেলিভারির কথা তারা সন্দেহজনক হিসেবে উল্লেখ করেননি; কিন্তু তাকে অবৈধ বলা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট ডেলিভারির জন্যেই। তবে কোন নির্দিষ্ট ডেলিভারির জন্য অবৈধ করা হল?

রিপোর্টে বলা আছে, তাসকিনের শুধু বাউন্সারে সমস্যা ছিল; কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, যে ম্যাচে তাসকিনের বোলিং নিয়ে সন্দেহ করা হয়েছিল সেই ম্যাচে তিনি কোন বাউন্সই দেননি! অথচ দীর্ঘ ভ্রমণ ক্লান্তি নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পর চেন্নাইতে মাত্র ৩ মিনিটে ৯টি বাউন্স দিতে বলা হয় তাকে। যেখানে তিনটিতে সমস্যা ধরা পরে বলের গতি কম হয়ে যাওয়ার কারণে।

তাসকিনের দেয়া স্টক ডেলিভারি এবং ইয়র্কারেও কোন সমস্যা পায়নি বায়োম্যাকানিক্যাল পরীক্ষকরা। যে সন্দেহজনক ডেলিভারি তিনি ম্যাচ কন্ডিশনে করেননি সেটার জন্য কেন শাস্তি পাবেন তাসকিন?

বাউন্সারে সমস্যা থাকলেও নিয়মানুযায়ী তাসকিনকে সাবধান করা যেতে পারতো। এটাই ছিল তার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি। বলা হতে পারতো, পরবর্তীতে এ ধরনের বাউন্স ম্যাচ চলাকালীন দিলে তাকে নিষিদ্ধ করা হবে- এমনটা বলে।

অথচ নিয়ম না থাকলেও সামান্য ওই তিনটি বাউন্সেই নিষিদ্ধ করা হলো তাসকিনকে! শুধুই কী বাউন্স নাকি এতে অন্য কিছু জড়িয়ে? কে জানে, হয়তো আইসিসি চেয়েওছিল বিশ্বকাপের সময়টাতে তাসকিনকে নিষিদ্ধ করতে। নাহলে গত দু বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে তার বোলিংয়ে কোন সমস্যা দেখা দেয়নি কিন্তু বিশ্বকাপ আসতেই সন্দেহের জালে আটকা পরতে হলো কেন তাকে। ষড়যন্ত্রের শিকারই যে তাসকিন- এটা প্রায় নিশ্চিত এখন।

মুস্তাফিজুর রহমান নামে ওই ব্যাক্তিই বিসিবিকে পরামর্শ দিচ্ছেন, আইসিসির রেগুলেশন ২.৩.১-এর রিভিউ করার। প্রয়োজনে সুইজারল্যান্ডের কোর্ট অব আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্টসে যাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।