স্ট্রাইকরেটের জন্য ক্যারিয়ারে কম সমালোচনা হয়নি নুরুল হাসান সোহানের। সব অপবাদ যেন একদিনই ঘুচিয়ে দিলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। শেষ ওভারে ঝড় তুলে বরিশালের বিপক্ষে এক রোমাঞ্চকর জয় এনে দিলেন রংপুর রাইডার্সের এই অধিনায়ক।
আজ বৃহস্পতিবার গ্রুপপর্বের ম্যাচে শেষ ওভারে ২৬ রান দরকার ছিল রংপুরের। শেষ ওভারে বরিশাল বল তুলে দেয় প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রান দেওয়া কাইল মেয়ার্সের হাতে। স্ট্রাইকপ্রান্তে থাকা সোহান প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান। পরের দুই বলে টানা দুটি চার আদায় করেন তিনি। ফলে শেষ ৩ বলে ১২ রানের দরকার হয় রংপুরের। চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সমীকরণ আরও সহজ করেন রংপুর অধিনায়ক। পরের দুই বলে মাত্র ৬ রান দরকার হলেও চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে বীরের মতোই রংপুরকে জেতান সোহান।
শেষ ওভারের আগে ১ বলে ২ রান করেছিলেন সোহান। ম্যাচশেষে ৭ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাতে বরিশালের দেওয়া ১৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য রংপুর পার হয় ৩ উইকেট হাতে রেখেই।
১৯৮ রানের লক্ষ্যে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি রংপুরের। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে মাত্র ৩৪ রান তুলতেই ১ উইকেট হারিয়ে বসে টেবিলের শীর্ষ দলটি। ফর্মে থাকা অ্যালেক্স হেলসকে স্টাম্পিং করেন উইকেটকিপারের ভূমিকা নেওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত। ৯ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো দলটির রান ছিল মাত্র ৬৬। শেষ ৬৬ বলে এই দলটিই করে ১৩৬ রান। সোহানের আগে ব্যাট হাতে বীরত্ব দেখিয়ে এই জয়ে বড় অবদান রাখেন খুশদিল শাহ আর ইফতেখার আহমেদও। চারে নেমে ৩৬ বলে ৪৮ রান করেন ইফতিখার। তার পরে নেমে ২৪ বলে ৪৮ রান করে দারুণ অবদান রাখেন খুশদিল। এই দুজন আউট হলেও অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন সোহান।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে রংপুরের সামনে ১৯৮ রানের লক্ষ্য রাখে বরিশাল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওপেনিংয়েই দারুণ জুটি গড়েন টুর্নামেন্টে দারুণ ফর্মে থাকা তামিম ইকবাল ও রানখরায় থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত। যদিও অন্যান্য দিনের তুলনায় তামিম ছিলেন বেশ ধীরগতির। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৪৬ রান তোলার পর প্রথম ১০ ওভারে এই দুজন তোলেন ৮১ রান।
১১তম ওভারের প্রথম বলেই উইকেট হারায় বরিশাল। ৩০ বলে ৫টি চার ও ১ ছক্কায় ৪১ রান করে ফেরেন এই ওপেনার। ৯ রান যোগ হতে ফেরেন তামিমও। ৩৪ বলে ৪টি চার ও ২ ছক্কায় তার ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। রান পেয়েছেন তিন ও চার নম্বরে নামা কাইল মেয়ার্স আর তাওহিদ হৃদয়ও। ১২ ওভার ২ বলে শতরান পূর্ণ করে বরিশাল।
তৃতীয় উইকেটে মেয়ার্স-হৃদয় যোগ করেন ৫৯ রান। ১৮ বলে ২৩ রান করে আউট হন হৃদয়। বরিশাল মূলত বড় রান সংগ্রহ করে মেয়ার্সের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে। ২৯ বলে ৬১ রান করেন তিনি। দুর্দান্ত এই ইনিংস খেলার পথে চার একটি হাঁকালেও ছক্কা মারেন ৭টি। পাঁচে নেমে মাহমদুউল্লাহ রিয়াদ রান না পেলেও ছয় নম্বরে নেমে ফাহিম আশরাফের ৬ বলে ২০ রানের ক্যামিও দারুণ কাজে আসে।
অন্যান্য বোলাররা দুহাতে রান দিলেও উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ছিলেন রংপুরের আকিফ জাভেদ ও শেখ মেহেদী হাসান। ৩ ওভারে ১ মেডেনসহ ১৯ রান দেন মেহেদী। আর আকিফ ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচায় তুলে নেন ১ উইকেট। ২টি উইকেট শিকার করলেও কামরুল ইসলাম রাব্বিকে খরচ করতে হয় ৪৭ রান।