হাওর বার্তা ডেস্কঃ তাজা শাক-সবজি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক উপকারী। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শাক-সবজি অতুলনীয়। তাইতো স্বাস্থ্য সচেতন মানুষরা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় শাক-সবজি রাখেন।
শাক-সবজি অত্যন্ত পুষ্টিকর। কিন্তু পুষ্টির কথা ভেবে সেটি বেশিমাত্রায় খেলেই ঘটতে পারে বিপদ। কিছু কিছু সবজি খেতে হবে নিয়ম মেনে। তাই কোন সবজিগুলো অতিরিক্ত খেলে বিপদ হতে পারে চলুন জেনে নেয়া যাক-
গাজর
গাজরে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। যা বেশি পরিমাণে শরীরে গেলে, ত্বকের রং বদলে কমলা হয়ে যেতে পারে। গাজর খাওয়া এমনিতে শরীরের পক্ষে দারুণ উপকারী। ভিটামিন সি তে ভরপুর গাজর খেলে দাঁত, চোখ ভালো থাকে। তবে গাজরও একটু পরিমাণ মেপে খাওয়াই ভালো।
লেবু
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু প্রত্যেকদিন খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। তবে লেবুর অ্যাসিডিক উপাদান বেশি শরীরে গেলেও ক্ষতি হতে পারে। দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। অনেকে শরীরের বিপাক হার বাড়ানোর জন্য খালি পেটে গরম পানিতে লেবুর রস চিপে খান। কিন্তু যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে, তাদের খালি পেটে অ্যাসিডিক উপাদান পেটে গেলে হজমে গোলমাল হবে। মারাত্মক পেটে যন্ত্রণাও হতে পারে।
মাশরুম
সবজি হিসেবে মাশরুম রান্নায় ব্যবহৃত হয়। রান্না করা সহজ বলে অনেকে তরকারিতেই মাশরুম দেওয়া হয়। মাশরুমে রয়েছে ভিটামিন ডি এবং আরো নানা পুষ্টিগুণ। কিন্তু মাশরুম খাওয়ার আগে দেখে নিতে হবে আপনার কোনো খাবারে অ্যালার্জি রয়েছে কি না। যাদের খাবারে অ্যালার্জির প্রবণতা রয়েছে, তাদের মাশরুম খেলে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়াও মনে রাখতে হবে সব রকম মাশরুম কিন্তু খাওয়ার জন্য নয়। এমনকি কিছু মাশরুম এতটাই বিষাক্ত যে হাত দিলেও বিপদ!
বিট
শরীরকে বিষমুক্ত করার উপাদান আছে বিটে। বিটে আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি৬, এ, সি, নাইট্রেট। বিট খাওয়া শরীরের পক্ষে ভীষণ উপকারী। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের ডায়েটে অনেক সময়ই বিট থাকে। তবে বিট বেশি খেলেও বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। বিটে উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায়, তাই অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যা হতে পারে। বিট বেশি পরিমাণে খেলে চুলকানি ,এলার্জি এবং ফুসকুড়ি হতে পারে। বিটের মধ্যে নাইট্রেট থাকায় পেটে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া প্রস্রাবের রং লালচে হয়ে যেতে পারে। জিভের রং সাময়িক ভাবে লাল হবেই। তবে এই রং বদল নিয়ে খুব একটা আশঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
ফুলকপি
ফুলকপি অনেকের কাছে প্রিয়। ফুলকপি এখন সারা বছর পাওয়া যায়। তবে বর্ষা বা খুব ভ্যাপসা গরমে ফুলকপি খেলে নেকের সমস্যা হয়। ফুলকপিতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেকটাই কম। তাই যারা কিটো ডায়েট বা লো-কার্ব ডায়েট করেন, তাদের ফুলকপির মতো সবজি খুব প্রিয়।
এই সবজিতে গুণ অনেক থাকলেও এমন একটি পদার্থ রয়েছে, যা হজম করা মুশকিল। তাই বেশি খেলেও পেটভার, অ্যাসিডিটির মতো নানা রকম পেটে সমস্যা দেখা দিতে পারে। যাদের থাইরয়েডের সমস্যা রয়েছে তাদের উচিত যতদিন পর্যন্ত থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে না আসে ততদিন পর্যন্ত ফুলকপি খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেয়া।
পুষ্টিবিদদের মতে, অতিরিক্ত শাকসবজি বা ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। একজন মানুষকে সুস্থ থাকার জন্য সারাদিনে ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম ফল এবং শাক-সবজি অর্থাৎ ফাইবার গ্রহণ করা উচিত। শুধু ফল, শাক-সবজি নয় বরং এই তিনটি মিলিয়েই অন্তত ৪০০ গ্রাম খেতে হবে।