ঢাকা ০১:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৮০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ, বাম্পার ফলনের আশা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪৬:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২১
  • ২০২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যশোরের চৌগাছায় এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে হয়েছে শিম চাষ। শিম শীতকালীন সবজি হিসেবে গ্রাম বাংলা এমনকি শহরের মানুষের কাছেও অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। শীত মৌসুম শুরুর দিকে উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে দাম বেশি থাকে। এই অসময়েও বেশি দামে শিম বিক্রির আশায় যশোরের চৌগাছার চাষিরা গ্রীষ্মের শিম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে অধিকাংশ ক্ষেতের প্রতিটি গাছ ফুলে ফুলে ভরে গেছে। কোনো প্রাকৃতিক দূুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে শিম বিক্রি করে চাষিরা বেশ লাভবান হবেন বলে আশায় বুক বেঁধেছেন।

শীত মৌসুম শুরুর আগেই কৃষক ক্ষেত প্রস্তুত করে বপন করেন শিমের বীজ। পুরো শীতে শিম বিক্রি করে বেশ লাভবান হন। শীতের শিম এখন চাষ হচ্ছে গরমে। নতুন চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেকেই হয়েছেন স্বাবলম্বী। শিমে অন্যান্য সবজির মতো ভাইরাস নেই বললেই চলে। সব ধরনের মাটিতেই শিমের চাষ হয়। বাড়ির চালে, মাচায়, রাস্তা বা পুকুর পাড় এমনকি জমির আইলে এ সবজি চাষ করা যায়। বাজারে শিমের চাহিদা ভালো, দামও বেশি, তাই গ্রীষ্মের শিম চাষে ঝুঁকছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চৌগাছাতে এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। রূপবান ও ইসপা-২ জাতের শিম বেশি চাষ হচ্ছে।

উপজেলার সিংহঝুলী, ফুলসারা, নারায়নপুর, স্বরুপদাহ ইউনিয়নের বেশ কিছু মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা গ্রীষ্মের শিম অত্যন্ত যত্নসহকারে মাচায় চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমির শিমে ইতোমধ্যে ফুলে ভরে উঠেছে। আর সপ্তাহ দুয়েক পরেই কৃষক তার পরিশ্রমের ফল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন।

কথা হয় পেটভরা গ্রামের শিম চাষি ইনতাদুল বিশ্বাসের সাথে। তিনি বলেন, শিম মূলত শীতের সবজি, কিন্তু গ্রীষ্মেও এর চাষ হচ্ছে, ফলনও আশানুরূপ। তাই আগাম শিম চাষ করেছি। চলতি মৌসুমে আমি ১ বিঘা জমিতে রূপবান জাতের শিমের চাষ করেছি। এপর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। কোনো দুর্যোগ দেখা না দিলে লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, গ্রীষ্মের শিম চাষে পোকা-মাকড়ের উপদ্রব কিছুটা বেশি থাকে, তবে নিয়মিত জমি পরিচর্যা করলে পোকায় শিম বেশি ক্ষতি করতে পারে না। নিয়মিত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করলে শীতের মতোই শিম গাছের গ্রোথ খুবই ভালো থাকে। এই মাঠে কৃষক ইনতাদুল বিশ্বাসের মতো কৃষক আব্দুল মালেক ১ বিঘা, শহিদুল ইসলাম দেড় বিঘা, শফিকুল ইসলাম ১ বিঘা, সাইফুল ইসলাম ২ বিঘা, হাবিবুর রহমান ১ বিঘা, টিপু সুলতান ১ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন।

উপজেলার ফুলসারা ও সিংহঝুলী ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের চাষিরা তুলনামূলক নিচু জমিতে গ্রীষ্মের শিম চাষ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। কৃষকরা যেসব জমিতে বছরের বেশির ভাগ সময় পানি জমে থাকে, সেই জমিতে শিম চাষ করে লাভবান হয়েছেন। গত ৬/৭ বছর ধরে চাষিরা নিচু জমিতে উঁচু বেড তৈরি করে সেই বেডে রোপণ করেন শিমের বীজ। একাধারে বৃষ্টিপাত হলেও এসব জমির শিম নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম থাকে বলে কৃষকরা জানান।

উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস বলেন, নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে চৌগাছার কৃষকরা বেশ পারদর্শী। অনেক আগে থেকেই এ অঞ্চলে গ্রীষ্মের শিম চাষ হচ্ছে। কৃষক যাতে এসব ফসল উৎপাদনে কোনো সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য কৃষি অফিস সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

১৮০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ, বাম্পার ফলনের আশা

আপডেট টাইম : ০২:৪৬:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যশোরের চৌগাছায় এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে হয়েছে শিম চাষ। শিম শীতকালীন সবজি হিসেবে গ্রাম বাংলা এমনকি শহরের মানুষের কাছেও অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। শীত মৌসুম শুরুর দিকে উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে দাম বেশি থাকে। এই অসময়েও বেশি দামে শিম বিক্রির আশায় যশোরের চৌগাছার চাষিরা গ্রীষ্মের শিম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে অধিকাংশ ক্ষেতের প্রতিটি গাছ ফুলে ফুলে ভরে গেছে। কোনো প্রাকৃতিক দূুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে শিম বিক্রি করে চাষিরা বেশ লাভবান হবেন বলে আশায় বুক বেঁধেছেন।

শীত মৌসুম শুরুর আগেই কৃষক ক্ষেত প্রস্তুত করে বপন করেন শিমের বীজ। পুরো শীতে শিম বিক্রি করে বেশ লাভবান হন। শীতের শিম এখন চাষ হচ্ছে গরমে। নতুন চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেকেই হয়েছেন স্বাবলম্বী। শিমে অন্যান্য সবজির মতো ভাইরাস নেই বললেই চলে। সব ধরনের মাটিতেই শিমের চাষ হয়। বাড়ির চালে, মাচায়, রাস্তা বা পুকুর পাড় এমনকি জমির আইলে এ সবজি চাষ করা যায়। বাজারে শিমের চাহিদা ভালো, দামও বেশি, তাই গ্রীষ্মের শিম চাষে ঝুঁকছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চৌগাছাতে এবারের গ্রীষ্ম মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। রূপবান ও ইসপা-২ জাতের শিম বেশি চাষ হচ্ছে।

উপজেলার সিংহঝুলী, ফুলসারা, নারায়নপুর, স্বরুপদাহ ইউনিয়নের বেশ কিছু মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা গ্রীষ্মের শিম অত্যন্ত যত্নসহকারে মাচায় চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমির শিমে ইতোমধ্যে ফুলে ভরে উঠেছে। আর সপ্তাহ দুয়েক পরেই কৃষক তার পরিশ্রমের ফল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন।

কথা হয় পেটভরা গ্রামের শিম চাষি ইনতাদুল বিশ্বাসের সাথে। তিনি বলেন, শিম মূলত শীতের সবজি, কিন্তু গ্রীষ্মেও এর চাষ হচ্ছে, ফলনও আশানুরূপ। তাই আগাম শিম চাষ করেছি। চলতি মৌসুমে আমি ১ বিঘা জমিতে রূপবান জাতের শিমের চাষ করেছি। এপর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। কোনো দুর্যোগ দেখা না দিলে লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, গ্রীষ্মের শিম চাষে পোকা-মাকড়ের উপদ্রব কিছুটা বেশি থাকে, তবে নিয়মিত জমি পরিচর্যা করলে পোকায় শিম বেশি ক্ষতি করতে পারে না। নিয়মিত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করলে শীতের মতোই শিম গাছের গ্রোথ খুবই ভালো থাকে। এই মাঠে কৃষক ইনতাদুল বিশ্বাসের মতো কৃষক আব্দুল মালেক ১ বিঘা, শহিদুল ইসলাম দেড় বিঘা, শফিকুল ইসলাম ১ বিঘা, সাইফুল ইসলাম ২ বিঘা, হাবিবুর রহমান ১ বিঘা, টিপু সুলতান ১ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন।

উপজেলার ফুলসারা ও সিংহঝুলী ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের চাষিরা তুলনামূলক নিচু জমিতে গ্রীষ্মের শিম চাষ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। কৃষকরা যেসব জমিতে বছরের বেশির ভাগ সময় পানি জমে থাকে, সেই জমিতে শিম চাষ করে লাভবান হয়েছেন। গত ৬/৭ বছর ধরে চাষিরা নিচু জমিতে উঁচু বেড তৈরি করে সেই বেডে রোপণ করেন শিমের বীজ। একাধারে বৃষ্টিপাত হলেও এসব জমির শিম নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম থাকে বলে কৃষকরা জানান।

উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস বলেন, নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে চৌগাছার কৃষকরা বেশ পারদর্শী। অনেক আগে থেকেই এ অঞ্চলে গ্রীষ্মের শিম চাষ হচ্ছে। কৃষক যাতে এসব ফসল উৎপাদনে কোনো সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য কৃষি অফিস সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।