ঢাকা ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ এর স্তর বৃদ্ধি করবেন যেভাবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:১০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অগাস্ট ২০২১
  • ১২৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের এই মহামারিকালে আমরা বুঝতে পেরেছি আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ডি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক বাঁচাতে যেখানে রোদ থেকে সবাই নিজেদের রক্ষা করে চলত, এখন সেই রোদ গায়ে মাখানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে বড় উৎস হলো সূর্যরশ্মি।

সূর্যরশ্মির সংস্পর্শে এলে আমাদের শরীর নিজে থেকেই ভিটামিন ডি তৈরি করে। শরীরে পর্যাপ্ত  ভিটামিন ডি তৈরি হলে নানা রোগ থেকে মুক্তি মেলে। ২০০৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি হৃদরোগের ভয় অনেকটাই কমিয়ে দেয়। এছাড়াও ২০১০ সালে আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, মৌসুমী নানা ফ্লু দূর করতেও সাহায্য করে এই ভিটামিন।

এই ভিটামিন ফ্যাটে দ্রবণীয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে, মজবুত করে হাড় ও মাংসপেশীকে। সেইসঙ্গে দূরে রাখে হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগকে। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক ভিটামিন ডি এর আরো কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। রোগ প্রতিরোধের কাজে উন্নতি ঘটিয়ে সংক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তাই করোনাসহ নানা ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে বাঁচতে নিয়মিত ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত।

মানসিক চাপ দূর করে

ভিটামিন ডি আমাদের মেজাজকে প্রভাবিত করতে পারে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, ডিপ্রেশনের শিকার কোনো রোগীকে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট দিলে তাদের ক্ষেত্রে উন্নতি দেখা গেছে। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয় তবে আপনি অবসাদ, হতাশা ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়বেন। এসব কাটাতে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা জরুরি।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

যারা ওজন কমাতে চান, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, যারা নিয়মিত ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি ওষুধ খান, তাদের জন্য ওজন কমানো বেশ সহজ। সাধারণত আমরা সূর্যরশ্মি থেকে যে ভিটামিন পাই বা যে ভিটামিন খেয়ে থাকি তা হলো ভিটামিন ডি৩। আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি২ গ্রহণ করতে পারে না।

শরীরে ভিটামিন ডি এর স্তর বৃদ্ধি করবেন যেভাবে

সূর্যরশ্মির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ভিটামিন ডি। তাই প্রতিদিন সকালে রোদ গায়ে লাগান। সূর্য ওঠার পর সকাল নয়টা পর্যন্ত শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি এর জোগান পাওয়া যায়। এরপর বেলা বাড়তে থাকলে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই রশ্মি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই বেলা হলে রোদে না বসাই ভালো। এর পাশাপাশি ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। এছাড়াও কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে শরীরে ভিটামিন ডি পৌঁছে যায়। জেনে নিন সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-

মাছ, মাংস ও ডিম

মাছ, মাংস ও ডিম প্রোটিনের পাশাপাশি জোগান দেয় ভিটামিন ডি এরও। মাছকে মনে করা হয় ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস। এক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ বিশেষ করে স্যামন ফিশকে এগিয়ে রাখা হয়। তাই ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণে এসব খাবার খান নিয়মিত।

মাশরুম

উপকারী সবজি মাশরুম। এতে থাকে প্রচুর ভিটামিন ডি। সাদা বাটন মাশরুম, ওয়াইল্ড এডিবল ও চ্যান্ট্রেল মাশরুম ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ। সূর্যরশ্মির পরে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি থাকে মাশরুম ও কড লিভার তেলে।

ফোর্টিফায়েড খাবার

অনেক খাবার আছে যেগুলো প্রক্রিয়াকরণের সময় ভিটামিন ও মিনারেল বেরিয়ে যায়। এই অভাব দূর করে ফোর্টিফায়েড ফুড। এটি খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়ায়। পাউরুটি, সিরিয়াল, দুধ, পনির, সয়া মিল্ক ও কমলার রস ইত্যাদি হলো ফোর্টিফায়েড খাবার। এতে মিলবে ভিটামিন ডি।

দুধ

দুধ একটি পরিপূর্ণ খাবার। এতে অন্যান্য পুষ্টির পাশাপাশি থাকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম। তাই প্রতিদিন একগ্লাস দুধ পান করা উচিত। এছাড়াও দই, চিজ ইত্যাদি খেলে মিলবে উপকার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ এর স্তর বৃদ্ধি করবেন যেভাবে

আপডেট টাইম : ০৪:১০:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অগাস্ট ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের এই মহামারিকালে আমরা বুঝতে পেরেছি আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ডি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক বাঁচাতে যেখানে রোদ থেকে সবাই নিজেদের রক্ষা করে চলত, এখন সেই রোদ গায়ে মাখানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে বড় উৎস হলো সূর্যরশ্মি।

সূর্যরশ্মির সংস্পর্শে এলে আমাদের শরীর নিজে থেকেই ভিটামিন ডি তৈরি করে। শরীরে পর্যাপ্ত  ভিটামিন ডি তৈরি হলে নানা রোগ থেকে মুক্তি মেলে। ২০০৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি হৃদরোগের ভয় অনেকটাই কমিয়ে দেয়। এছাড়াও ২০১০ সালে আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, মৌসুমী নানা ফ্লু দূর করতেও সাহায্য করে এই ভিটামিন।

এই ভিটামিন ফ্যাটে দ্রবণীয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে, মজবুত করে হাড় ও মাংসপেশীকে। সেইসঙ্গে দূরে রাখে হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগকে। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক ভিটামিন ডি এর আরো কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। রোগ প্রতিরোধের কাজে উন্নতি ঘটিয়ে সংক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তাই করোনাসহ নানা ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে বাঁচতে নিয়মিত ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত।

মানসিক চাপ দূর করে

ভিটামিন ডি আমাদের মেজাজকে প্রভাবিত করতে পারে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, ডিপ্রেশনের শিকার কোনো রোগীকে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট দিলে তাদের ক্ষেত্রে উন্নতি দেখা গেছে। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয় তবে আপনি অবসাদ, হতাশা ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়বেন। এসব কাটাতে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা জরুরি।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

যারা ওজন কমাতে চান, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, যারা নিয়মিত ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি ওষুধ খান, তাদের জন্য ওজন কমানো বেশ সহজ। সাধারণত আমরা সূর্যরশ্মি থেকে যে ভিটামিন পাই বা যে ভিটামিন খেয়ে থাকি তা হলো ভিটামিন ডি৩। আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি২ গ্রহণ করতে পারে না।

শরীরে ভিটামিন ডি এর স্তর বৃদ্ধি করবেন যেভাবে

সূর্যরশ্মির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ভিটামিন ডি। তাই প্রতিদিন সকালে রোদ গায়ে লাগান। সূর্য ওঠার পর সকাল নয়টা পর্যন্ত শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি এর জোগান পাওয়া যায়। এরপর বেলা বাড়তে থাকলে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই রশ্মি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই বেলা হলে রোদে না বসাই ভালো। এর পাশাপাশি ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। এছাড়াও কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে শরীরে ভিটামিন ডি পৌঁছে যায়। জেনে নিন সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-

মাছ, মাংস ও ডিম

মাছ, মাংস ও ডিম প্রোটিনের পাশাপাশি জোগান দেয় ভিটামিন ডি এরও। মাছকে মনে করা হয় ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস। এক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ বিশেষ করে স্যামন ফিশকে এগিয়ে রাখা হয়। তাই ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণে এসব খাবার খান নিয়মিত।

মাশরুম

উপকারী সবজি মাশরুম। এতে থাকে প্রচুর ভিটামিন ডি। সাদা বাটন মাশরুম, ওয়াইল্ড এডিবল ও চ্যান্ট্রেল মাশরুম ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ। সূর্যরশ্মির পরে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি থাকে মাশরুম ও কড লিভার তেলে।

ফোর্টিফায়েড খাবার

অনেক খাবার আছে যেগুলো প্রক্রিয়াকরণের সময় ভিটামিন ও মিনারেল বেরিয়ে যায়। এই অভাব দূর করে ফোর্টিফায়েড ফুড। এটি খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়ায়। পাউরুটি, সিরিয়াল, দুধ, পনির, সয়া মিল্ক ও কমলার রস ইত্যাদি হলো ফোর্টিফায়েড খাবার। এতে মিলবে ভিটামিন ডি।

দুধ

দুধ একটি পরিপূর্ণ খাবার। এতে অন্যান্য পুষ্টির পাশাপাশি থাকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম। তাই প্রতিদিন একগ্লাস দুধ পান করা উচিত। এছাড়াও দই, চিজ ইত্যাদি খেলে মিলবে উপকার।