বাসায় ‘মদের বার’ নিয়ে যা বললেন মডেল মৌ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি বাসা থেকে মডেল মৌ আক্তারকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার গভীর রাতে বাবর রোডে নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।

বাসার ভেতরে ড্রয়িং রুমের পাশেই একটি মিনি বার দেখতে পাওয়া যায়। ডিবি পুলিশের ধারণা— মডেল মৌ তার বাসাটিকে ‘মদের বার’ হিসেবেই ব্যবহার করতেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মৌ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি বার বলতে— আমরা পুরো বাসা সাজাইছি। শখ করে, নিজেদের জন্য।’

‘আপনারা যে আজকে আসবেন, সেটি তো আমরা জানি না। কিন্তু আপনারা এসে কোনো লোক পাইছেন? এগুলো (মদের বোতল) আমরা নিজেদের জন্য সাজাইছি।

মৌ দাবি করেন, ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

কেন আপনাকে টার্গেট করা হলো— আপনার বিরুদ্ধে কেন ষড়যন্ত্র করা হলো, জানতে চাইলে মৌ বলেন, ওর রিলেশন ছিল।

এ সময় সাংবাদিকরা মডেল মৌয়ের কাছে জানতে চান, কার সঙ্গে কার রিলেশন ছিল। পরে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে ডিবির কাছে অনুমতি চান। কিন্তু তাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।

পরে ডিবি কর্মকর্তাদের বলতে শোনা যায়, পাশের ঘরে আরেকটি মদের বার পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে আরও ১২টি বিদেশি মদের বোতল জব্দ করা হয়। এ সময় মৌকে বারবার বলতে শোনা যায়, আমার বাসা মদের বার না।

সরেজমিন মৌয়ের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ওই বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছিল। মিরপুর রোডসংলগ্ন ২২/৯ বাবর রোডের ওই বাসার নিচতলায় থাকতেন মৌ।

বাসার ভেতরে ড্রয়িং রুমের পাশেই একটি মিনি বার দেখা গেছে। বাসার ভেতরের বেডরুমের একটি ড্রয়ার থেকে পাঁচ প্যাকেট ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ওই বেডরুমের ভেতরে আরেকটি ড্রেসিং রুম থেকে অন্তত এক ডজন বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে বারিধারার বাসায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্যসহ আলোচিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে আটক করা হয়।

দুই মডেলকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর রশিদ। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হবে।

আটকের পর তাদের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দুজন পরস্পসের সঙ্গে যোগসাজশে নানা রকম অপরাধ করে আসছিলেন।

আটকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর রশীদ। তিনি বলেন, তারা দুজন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে আমরা অনেক ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ পেয়েছি। সেসব ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আজ তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। দুজনের বাসায় বিদেশি মদ, ইয়াবা ও সিসা পাওয়া গেছে। মৌয়ের বাড়িতে মদের বারও ছিল।

ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আটক দুই মডেল হচ্ছেন রাতের রানী। তারা দিনের বেলায় ঘুমান এবং রাতে এসব কর্মকাণ্ড করেন। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন তারা। বাসায় আসলে তারা তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ধারণ করে রাখতেন। পরে তারা সেসব ভিডিও ও ছবি ভুক্তভোগীদের পরিবারকে পাঠাবে বলে ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিতেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রোববার রাতে প্রথমে বারিধারার পিয়াসার বাসায় অভিযান চালানো হয়। তার বাসা থেকে মাদকদ্রব্যসহ পিয়াসাকে আটকের পর অভিযান চালানো হয় মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের একটি বাসায়। সেখান থেকে অন্তত এক ডজন বিদেশি মদ, পাঁচ প্যাকেট ইয়াবাসহ মৌকে আটক করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর