ঢাকা ০৯:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে এমপি রানা সাম্রাজ্যের পতন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪২:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০১৬
  • ২০৪ বার

টাঙ্গাইল জেলার এক সময়ের প্রভাবশালী খান পরিবার এখন এলাকাছাড়া। খান সাম্রাজ্যের খলনায়ক টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমানুর রহমান খান রানা। বিরোধী দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, এমনকি খোদ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও এই এমপি রানা ও তার ভাইদের কাছে জিম্মি ছিল। তাদের বিরুদ্ধে যে কারোর মুখ খোলা ছিল বারণ। অনেকটা অঘোষিতভাবেই টাঙ্গাইল জেলার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেছেন তারা। রানা এবং তার তিন ভাই— টাঙ্গাইল পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সারনিয়াত খান বাপ্পা ও স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ঠিকাদারি থেকে শুরু করে পরিবহন খাত পর্যন্ত সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। বাদ ছিল না টাঙ্গাইল শহরের পতিতাপল্লীও। তবে খান সাম্রাজ্যের সব কিছু বদলে যায় যখন ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় খুন হন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ। নিজ বাসার কাছ থেকে তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে এই ত্যাগী নেতা প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে এমপি রানা ও তার ভাই মুক্তি, কাকন, বাপ্পাসহ ১০-১২ জন অভিযুক্ত হন। খুনের সঙ্গে জড়িত গ্রেফতারকৃত আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী ফারুকের জবানবন্দিতে জানা যায়, এমপি রানা ঘটনার দিন রাতে রাজাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ফারুক আহমেদকে জেলা আওয়ামী লীগ অফিস থেকে কলেজপাড়া এলাকায় তার গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে ডেকে আনার জন্য। আওয়ামী লীগ অফিসে যাওয়ার সময় পথেই রাজার সঙ্গে ফারুক আহমেদের দেখা হয়। রাজা তখন নিজের রিকশা ছেড়ে দিয়ে ফারুক আহমেদের রিকশায় ওঠেন এবং তাকে গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়ে উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে কথা হয়। তাদের একজন ফারুক আহমেদকে জানান, সাধারণ সম্পাদক পদে মেয়র সাহেব (এমপি রানার ভাই মুক্তি) প্রার্থী হবেন। এমপি রানার ছোট ভাই সানিয়াত খান বাপ্পা ফারুককে এ পদে প্রার্থী হতে নিষেধ করেন। কিন্তু ফারুক তাতে রাজি নন বলে সাফ সাফ জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, সব পদ তোমরাই দখল করে নিয়েছ। আমি মাত্র জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থী হতে চেয়েছি। এতেই তোমরা আমার ওপর ক্ষেপে গেলে। যাক তোমরাই সব গিলে খাও। এসব কথা বলতে বলতেই ফারুক আহমেদ ওই ট্রেনিং সেন্টার থেকে বের হতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসী কবির পেছন থেকে তার পিঠে গুলি করে। বাকিরা তার মুখ চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে নেতাদের নির্দেশে তাত্ক্ষণিকভাবে সেখানকার রক্ত মুছে ফেলা হয়। পরে একটি অটোরিকশায় লাশ বসিয়ে রাজাসহ দুজন দুই পাশে বসেন এবং ফারুক আহমেদের বাসার কাছে তার লাশ ফেলে রেখে চলে যান। এদিকে আটককৃত আসামিরা এমপি রানা ও তার ভাইদের নাম বলে দেওয়ায় বিষয়টি জটিল হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই তারা টাঙ্গাইল ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতারে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। এমনকি টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার তানভীর আহমেদ জানান, কেবল টাঙ্গাইলে নয়, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সন্দেহজনক সব স্থানে অভিযান চালিয়েছেন তারা।

এদিকে শুধু আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ নন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ফারুক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও এমপি রানার ভাইয়েরা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। বহুল আলোচিত এই খান পরিবারের ছোট ছেলে ও এমপি রানার ভাই ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার নির্দেশেই তার দেহরক্ষী শাহজাহান মিয়া আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই বিএনপি নেতাকে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত শাহজাহান মিয়া টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা উল্লেখ করেছেন বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) অশোক কুমার সিংহ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের উপনির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন আমানুর রহমান খান রানা। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। কিন্তু এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ফের আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপিও হন রানা। পুলিশের হিসাবে, তার নামে তিনটি হত্যাসহ ৪৬টি মামলা রয়েছে। যদিও মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে বলে দাবি করে আসছে অভিযুক্ত খান পরিবার। রানার ভাই সহিদুর রহমান মুক্তির নামে ৫টি হত্যাসহ ৩৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলা কিছু নিষ্পত্তি ও কিছু রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। অপর দুই ভাই জাহিদুর রহমান কাকন ও সানিয়াত খান বাপ্পার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা আছে পুলিশ তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। ফারুক হত্যার রহস্য উদঘাটন হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেন, মামলাটি এতদিন অন্ধকারে ছিল। পুলিশের তদন্তে রহস্য উন্মোচিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। এসব নেতারা বলেন, এখন আমরা আরও খুশি হব যদি এমপি রানা ও তার ভাইদের গ্রেফতার করা হয়।

সূত্র মতে, এসব ছাড়াও অভিযোগের পাহাড় ছিল এমপি পরিবারের বিরুদ্ধে। সব ঘটনা জেনে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। নীতিনির্ধারক মহলের নির্দেশে টাঙ্গাইলের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা খান পরিবারের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। সে কারণেই তারা এলাকাছাড়া। টাঙ্গাইলের একজন নেতা জানান, একজন এমপির এভাবে এলাকা ছাড়ার ঘটনা নজিরবিহীন। এ অপরাধী যত শক্তিশালী হোক, তার বিচার নজির স্থাপন করেছে। আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকের পরিবার কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। দায়িত্বশীল সূত্র মতে, এখনো তারা আটক না হলেও তাদের বিরুদ্ধে সরকারের নীতি একই রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যে কারণে এমপি রানা সাম্রাজ্যের পতন

আপডেট টাইম : ০৯:৪২:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০১৬

টাঙ্গাইল জেলার এক সময়ের প্রভাবশালী খান পরিবার এখন এলাকাছাড়া। খান সাম্রাজ্যের খলনায়ক টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমানুর রহমান খান রানা। বিরোধী দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, এমনকি খোদ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও এই এমপি রানা ও তার ভাইদের কাছে জিম্মি ছিল। তাদের বিরুদ্ধে যে কারোর মুখ খোলা ছিল বারণ। অনেকটা অঘোষিতভাবেই টাঙ্গাইল জেলার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেছেন তারা। রানা এবং তার তিন ভাই— টাঙ্গাইল পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সারনিয়াত খান বাপ্পা ও স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ঠিকাদারি থেকে শুরু করে পরিবহন খাত পর্যন্ত সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। বাদ ছিল না টাঙ্গাইল শহরের পতিতাপল্লীও। তবে খান সাম্রাজ্যের সব কিছু বদলে যায় যখন ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় খুন হন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ। নিজ বাসার কাছ থেকে তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে এই ত্যাগী নেতা প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে এমপি রানা ও তার ভাই মুক্তি, কাকন, বাপ্পাসহ ১০-১২ জন অভিযুক্ত হন। খুনের সঙ্গে জড়িত গ্রেফতারকৃত আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী ফারুকের জবানবন্দিতে জানা যায়, এমপি রানা ঘটনার দিন রাতে রাজাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ফারুক আহমেদকে জেলা আওয়ামী লীগ অফিস থেকে কলেজপাড়া এলাকায় তার গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে ডেকে আনার জন্য। আওয়ামী লীগ অফিসে যাওয়ার সময় পথেই রাজার সঙ্গে ফারুক আহমেদের দেখা হয়। রাজা তখন নিজের রিকশা ছেড়ে দিয়ে ফারুক আহমেদের রিকশায় ওঠেন এবং তাকে গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়ে উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে কথা হয়। তাদের একজন ফারুক আহমেদকে জানান, সাধারণ সম্পাদক পদে মেয়র সাহেব (এমপি রানার ভাই মুক্তি) প্রার্থী হবেন। এমপি রানার ছোট ভাই সানিয়াত খান বাপ্পা ফারুককে এ পদে প্রার্থী হতে নিষেধ করেন। কিন্তু ফারুক তাতে রাজি নন বলে সাফ সাফ জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, সব পদ তোমরাই দখল করে নিয়েছ। আমি মাত্র জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থী হতে চেয়েছি। এতেই তোমরা আমার ওপর ক্ষেপে গেলে। যাক তোমরাই সব গিলে খাও। এসব কথা বলতে বলতেই ফারুক আহমেদ ওই ট্রেনিং সেন্টার থেকে বের হতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসী কবির পেছন থেকে তার পিঠে গুলি করে। বাকিরা তার মুখ চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে নেতাদের নির্দেশে তাত্ক্ষণিকভাবে সেখানকার রক্ত মুছে ফেলা হয়। পরে একটি অটোরিকশায় লাশ বসিয়ে রাজাসহ দুজন দুই পাশে বসেন এবং ফারুক আহমেদের বাসার কাছে তার লাশ ফেলে রেখে চলে যান। এদিকে আটককৃত আসামিরা এমপি রানা ও তার ভাইদের নাম বলে দেওয়ায় বিষয়টি জটিল হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই তারা টাঙ্গাইল ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতারে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। এমনকি টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার তানভীর আহমেদ জানান, কেবল টাঙ্গাইলে নয়, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সন্দেহজনক সব স্থানে অভিযান চালিয়েছেন তারা।

এদিকে শুধু আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ নন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ফারুক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও এমপি রানার ভাইয়েরা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। বহুল আলোচিত এই খান পরিবারের ছোট ছেলে ও এমপি রানার ভাই ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার নির্দেশেই তার দেহরক্ষী শাহজাহান মিয়া আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই বিএনপি নেতাকে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত শাহজাহান মিয়া টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা উল্লেখ করেছেন বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) অশোক কুমার সিংহ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের উপনির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন আমানুর রহমান খান রানা। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। কিন্তু এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ফের আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপিও হন রানা। পুলিশের হিসাবে, তার নামে তিনটি হত্যাসহ ৪৬টি মামলা রয়েছে। যদিও মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে বলে দাবি করে আসছে অভিযুক্ত খান পরিবার। রানার ভাই সহিদুর রহমান মুক্তির নামে ৫টি হত্যাসহ ৩৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলা কিছু নিষ্পত্তি ও কিছু রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। অপর দুই ভাই জাহিদুর রহমান কাকন ও সানিয়াত খান বাপ্পার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা আছে পুলিশ তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। ফারুক হত্যার রহস্য উদঘাটন হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেন, মামলাটি এতদিন অন্ধকারে ছিল। পুলিশের তদন্তে রহস্য উন্মোচিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। এসব নেতারা বলেন, এখন আমরা আরও খুশি হব যদি এমপি রানা ও তার ভাইদের গ্রেফতার করা হয়।

সূত্র মতে, এসব ছাড়াও অভিযোগের পাহাড় ছিল এমপি পরিবারের বিরুদ্ধে। সব ঘটনা জেনে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। নীতিনির্ধারক মহলের নির্দেশে টাঙ্গাইলের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা খান পরিবারের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। সে কারণেই তারা এলাকাছাড়া। টাঙ্গাইলের একজন নেতা জানান, একজন এমপির এভাবে এলাকা ছাড়ার ঘটনা নজিরবিহীন। এ অপরাধী যত শক্তিশালী হোক, তার বিচার নজির স্থাপন করেছে। আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকের পরিবার কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। দায়িত্বশীল সূত্র মতে, এখনো তারা আটক না হলেও তাদের বিরুদ্ধে সরকারের নীতি একই রয়েছে।