ঢাকা ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কষ্ট সয়ে সোনা আবাদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১০:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০১৬
  • ৫৪০ বার

বিদায়ের পথে ফাল্গুন। প্রকৃতিতে এখন সবুজের সমারোহ। শির শির করে বইছে দক্ষিণা বাতাস। সঙ্গে ফাল্গুনী ফুলের মনকাড়া গন্ধ। সে গন্ধ আর হাওয়া গায়ে মেখে কৃষকরাও সাতসকালেই ছুটছেন মাঠে। মিষ্টি রোদে বুনছেন সোনার ফসল।

চলছে বোরো আবাদের সময়। চারা রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন কিষানীও। সকালের খাবার তৈরি করে নিয়ে আসছেন মাঠে। স্কুল ফেরত শিশুরাও মাঠে ছুটছে বাবার সাহয্যে।

প্রতি বছর উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পেলেও আবাদের সময় এলেই কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েন চাষিরা। আবাদ করেন সোনার ফসল। যে ফসলে জোটে দেশের মানুষের অন্ন।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো চাষ। জমি চাষ আর ধান লাগানো জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এখন চাষিরা।

শুক্রবার ভোরে রাজধানীর নিকটবর্তী নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার আগেই মাঠে এসে হাজির হয়েছেন কৃষক। নেমে পড়েছেন চারা রোপনে। মনের সুখে গানের সূরে সূরে বুনে যাচ্ছেন সোনালী ফসল।

কথা হয় জসিম নামের এক কৃষকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ধানের দাম নেই। পরতা হয় না। সারের দাম বেশি হওয়ায় বেশি খরচ হচ্ছে। ধান রোপণ, নিড়ানি, ধান কাটা, ঘরে তোলা সব কিছুতেই বেশি খরচ। তবুও পেটের দায়েই করি। আমাদের চাষ করা ধানে অন্যের অন্ন জোটে সেটাও ভাবতে ভালো লাগে। তাই কষ্ট করে হলেও চাষ করে যাই।’

মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে বোরো চারা রোপন।

প্রতিবারের মত এবারও আগের হতাশা ভুলে জমি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। তবে রয়েছে সেচের জন্য যথাসময়ে চাহিদা অনুযায়ি বিদ্যুৎ, বীজ, সার ও কীটনাশকের সরবরাহ পাওয়া নিয়ে শংকাও। এ ছাড়া সেচ, বীজ, সার, কীটনাশকের মূল্য ও শ্রমিকের মজুরি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে আছেন চাষিরা।

কৃষকরা মনে করছেন, সঠিক সময়ে বিদ্যুৎ ও সার সরবরাহ পাওয়া না গেলে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে। ইতেমধ্যেই পানি সংকটে সেচ সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছেন উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কিছু এলাকার চাষিরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য বিভাগের উপ-পরিচালক (মনিটরিং) ড. মোহাম্মদ আবদুহু পূর্বপশ্চিমকে জানান, এবার বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯০ লাখ মেট্রিক টন। এ লক্ষ্য পূরণে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক কৃষকদের সেবায় কাজ করা হচ্ছে।

অনাকাঙ্খিত কোন দূর্য়োগ না হলে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কষ্ট সয়ে সোনা আবাদ

আপডেট টাইম : ১২:১০:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০১৬

বিদায়ের পথে ফাল্গুন। প্রকৃতিতে এখন সবুজের সমারোহ। শির শির করে বইছে দক্ষিণা বাতাস। সঙ্গে ফাল্গুনী ফুলের মনকাড়া গন্ধ। সে গন্ধ আর হাওয়া গায়ে মেখে কৃষকরাও সাতসকালেই ছুটছেন মাঠে। মিষ্টি রোদে বুনছেন সোনার ফসল।

চলছে বোরো আবাদের সময়। চারা রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন কিষানীও। সকালের খাবার তৈরি করে নিয়ে আসছেন মাঠে। স্কুল ফেরত শিশুরাও মাঠে ছুটছে বাবার সাহয্যে।

প্রতি বছর উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পেলেও আবাদের সময় এলেই কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েন চাষিরা। আবাদ করেন সোনার ফসল। যে ফসলে জোটে দেশের মানুষের অন্ন।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো চাষ। জমি চাষ আর ধান লাগানো জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এখন চাষিরা।

শুক্রবার ভোরে রাজধানীর নিকটবর্তী নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার আগেই মাঠে এসে হাজির হয়েছেন কৃষক। নেমে পড়েছেন চারা রোপনে। মনের সুখে গানের সূরে সূরে বুনে যাচ্ছেন সোনালী ফসল।

কথা হয় জসিম নামের এক কৃষকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ধানের দাম নেই। পরতা হয় না। সারের দাম বেশি হওয়ায় বেশি খরচ হচ্ছে। ধান রোপণ, নিড়ানি, ধান কাটা, ঘরে তোলা সব কিছুতেই বেশি খরচ। তবুও পেটের দায়েই করি। আমাদের চাষ করা ধানে অন্যের অন্ন জোটে সেটাও ভাবতে ভালো লাগে। তাই কষ্ট করে হলেও চাষ করে যাই।’

মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে বোরো চারা রোপন।

প্রতিবারের মত এবারও আগের হতাশা ভুলে জমি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। তবে রয়েছে সেচের জন্য যথাসময়ে চাহিদা অনুযায়ি বিদ্যুৎ, বীজ, সার ও কীটনাশকের সরবরাহ পাওয়া নিয়ে শংকাও। এ ছাড়া সেচ, বীজ, সার, কীটনাশকের মূল্য ও শ্রমিকের মজুরি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে আছেন চাষিরা।

কৃষকরা মনে করছেন, সঠিক সময়ে বিদ্যুৎ ও সার সরবরাহ পাওয়া না গেলে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে। ইতেমধ্যেই পানি সংকটে সেচ সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছেন উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কিছু এলাকার চাষিরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য বিভাগের উপ-পরিচালক (মনিটরিং) ড. মোহাম্মদ আবদুহু পূর্বপশ্চিমকে জানান, এবার বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯০ লাখ মেট্রিক টন। এ লক্ষ্য পূরণে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক কৃষকদের সেবায় কাজ করা হচ্ছে।

অনাকাঙ্খিত কোন দূর্য়োগ না হলে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।