হাওর বার্তা ডেস্কঃ বংশগত কিংবা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে অনেকেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বর্তমানে ডায়াবেটিসকে খুবই সাধারণ একটি রোগ হিসেবে ধরা হয়। তবে এটি মোটেও সাধারণ কোনো রোগ নয়, আর না অবহেলার। কারণ এই রোগ মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মনে করেন, ডায়াবেটিস থাকলে হার্ট ফেইলিওর হয়ে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগলে স্নায়বিক সমস্যা অনিবার্য হয়ে ওঠে। তা থেকে হৃদযন্ত্রের সমস্যা হলেও বুকে অস্বস্তি তেমন হয় না, হয় না যন্ত্রণার অনুভূতি। এই সূত্রেই হার্ট ফেইলিওর হয়ে প্রাণ সংশয় ঘটে। একাধিক সমীক্ষা ও গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে, এই দুই অসুখ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
বিজ্ঞান পত্রিকা এনসিবিআই’র প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র জানাচ্ছে, ব্লাড সুগার থাকলে হার্ট ফেইলিওরের রোগী হয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি। রক্তে গ্লুকোজ ও ফ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে সব সময় বেশি থাকা এবং ডায়াবেটিসের জেরে বিপাকজনিত হরেক বিশৃঙ্খলার কারণেই রক্ত সংবহন তন্ত্রে এই অনিয়ম জাঁকিয়ে বসে ক্রমাগত। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে হার্ট ফেইলিওরের হার বেশি।
কারণ হার্ট ফেইলিওর হৃদযন্ত্রের এমন একটা সমস্যা, যা বিনা চিকিৎসায় লাগাতার বেড়েই চলে এবং এক সময় হার্ট আর পেরে উঠে না, তখন প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
কোন অবস্থাকে হার্ট ফেইলিওর বলে?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হৃদপেশি ধীরে ধীরে এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে তা পর্যাপ্ত ক্ষমতার সঙ্গে হার্ট পাম্প করে উঠতে পারে না। ফলে প্রতি পাম্পে যতটা রক্ত ও অক্সিজেন হার্ট থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার কথা, ঘাটতি থেকে যায় তাতে। হার্ট থেকে শরীরের দূরবর্তী অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এর জেরে। সে জন্যই পা ফুলে যাওয়া হার্ট ফেইলিওরের অন্যতম বড় লক্ষণ।
অন্য আরেকটি একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ডায়াবেটিসের কারণে হার্ট ফেইলিওরের হয়ে সত্তরোর্ধ্বদের চেয়ে তরুণ ও প্রৌঢ়দের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি। তাই বয়স ২৫ পেরোলেই একবার হার্ট চেকআপ করার কথা বলেন চিকিৎসকরা। পরিবারে বা পূর্বপুরুষেরও যদি কারও ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে অন্যদের তুলনায় তার হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটা।