হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি। ট্রাস্ট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান কবিরকে কুপিয়ে খুন করা হয়। রক্তাক্ত লাশ পড়েছিল তার স্কুলের অদূরে। পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে মেধাবী ছাত্র আদনান কিশোর গ্যাংয়ের নির্মম শিকার।
আদনান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নাইন স্টার, বিগবস এবং ডিস্কো বয়েজ নামের তিনটি গ্যাংয়ের সম্পৃক্ততা উঠে আসে। দেশজুড়ে আলোচিত চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার ৩ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু উত্তরায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য এতটুকুও কমেনি। বরং বেড়েছে।
গত ৪ বছরে উত্তরায় কিশোর গ্যাংয়ের হাতে একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সর্বশেষ খুন হয় আরেফিন সাকিল। গত বছর ১১ মে ৮ নম্বর সেক্টরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। সাকিলের পরিবার দক্ষিণখান থানার গোয়ালটেক এলাকার বাসিন্দা। হতদরিদ্র পরিবারটি এখনো বিচারের জন্য থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একেকটি খুনের ঘটনার পর যথারীতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ে। ব্যাপক ধরপাকড়ের মুখে কিশোর গ্যাং সদস্যদের কিছুটা নিবৃত্ত হতেও দেখা যায়। কিন্তু কিছুদিন পরই সব আগের মতো হয়ে যায়। বর্তমানে উত্তরা এলাকায় নিত্যনতুন গ্যাং গজিয়ে উঠছে।
বেশ কয়েকটি গ্যাংয়ের সদস্যরা ইতোমধ্যে মাদক সেবন থেকে শুরু করে মারামারি ও পেশাদার ছিনতাইকারী হিসাবেও নাম লিখিয়েছেন পুলিশের খাতায়। ইতোমধ্যে ৩২০ জন কিশোর গ্যাং সদস্যের নাম তালিকাভুক্ত করেছে পুলিশ। যারা রয়েছে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একেবারে সম্মুখভাগে।
সক্রিয় গ্যাং : র্যাব এবং পুলিশের তালিকায় উত্তরা এলাকায় সক্রিয় কিশোর গ্যাংয়ের বেশকিছু নাম উঠে আসে। এর মধ্যে পশ্চিম থানা এলাকায় ডিসকো বয়েজ, নাইন স্টার, নাইন এমএম বয়েজ গ্রুপ, বিগবস, পাওয়ার বয়েজ গ্রুপ এবং মাহবুবু গ্রুপ। তুরাগ এলাকায় সক্রিয় নিউ নাইন স্টার ও তালাচাবি গ্রুপ, দক্ষিণখান এলাকায় শান্ত গ্রুপ, ইয়াং স্টার ও ডিজে গ্রুপ। টঙ্গী এলাকায় বিগবস এমটি গ্রুপ, থ্রি স্টার গ্রুপ, ট্রিপল এক্স গ্রুপ, নাইট কিং ও সুপার ম্যাক্স গ্রুপ সক্রিয়।
এছাড়া উত্তরার অন্যান্য এলাকায় সক্রিয় রয়েছে এনএনএস, এফএইচবি, জিইউ, ক্যাকরা, ডিএইচবি, ব্যাক রোজ, রনো, কে-নাইন, ফিফটিন গ্যাং, পোটলা বাবু, সুজন ফাইটার, আলতাফ জিরো, ক্যাসল বয়েজ, ভাইপার, তুফান, থ্রি গোল গ্যাং, শাহীন-রিপন এবং নাজিম উদ্দিন গ্যাং। এছাড়া পূর্বাচল এলাকায় সক্রিয় আছে মেহেদী গ্রুপ।
পৃষ্ঠপোষক যারা : পুলিশের অনুসন্ধানে এসব গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন জনৈক প্রভাবশালী কবির হাসান ওরফে ভাগিনা হাসান। উত্তরা পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিলুজ্জামান বিপুল, দক্ষিণখান ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ফারুক আহম্মেদ, উত্তরা পূর্ব থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আলামিন প্রধান, ৪৯ ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান নাঈম, দক্ষিণখান থানার তালিকাভুক্ত অস্ত্র মামলার আসামি আলতাফ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ, পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান, ৫২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো. সোহেল, যুবলীগের সাবেক সদস্য আমির হোসেন এবং উত্তরখান থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহীন আলম ওরফে ফরেন শাহীন।
উত্তরা পশ্চিম থানা : উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় সক্রিয় রয়েছে দুটি গ্রুপ। একটি কুখ্যাত নাইন স্টার গ্রুপ। যে গ্রুপের হাতে একাধিক খুনের ঘটনা ঘটে। নাইন স্টার গ্রুপের সদস্য সংখ্যা অর্ধশতাধিক। গ্রুপ লিডারের নাম ইমরান হোসেন রাজু ওরফে তালাচাবি রাজু। পিতার নাম জামাল উদ্দিন। ঠিকানা তুরাগের পাকুরিয়া। বর্তমানে তিনি খিলক্ষেত এলাকায় বসবাস করছেন। তুরাগ এবং উত্তরা পশ্চিম থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তার সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম মেহেদী হাসান ওরফে শিশির। এছাড়া উত্তরা ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর সেক্টর নাইন স্টার গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে।
পুলিশের তালিকায় নাইন স্টার গ্রুপের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে উত্তরা এলাকার একজন জনপ্রতিনিধির ভাগিনা হিসাবে পরিচিত জনৈক কবির হোসেনের নাম উঠে আসে। উত্তরা ময়লার মোড় এবং ১২ নম্বর খালপাড়া এলাকায় নাইন স্টার বাহিনীর সদস্যদের আড্ডা দিতে দেখা যায়। তাদের অপরাধ ফিরিস্তির অন্যতম হচ্ছে-চাঁদাবাজি, মাদক সেবন এবং ইভটিজিং।
এছাড়া ৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় সক্রিয় একটি কিশোর গ্যাংয়ের লিডারের নাম রুবেল হোসেন ওরফে জয়। রংপুরের ছেলে জয়ের পিতার নাম বাবুল। তবে জয়ের নেতৃত্বাধীন গ্রুপের নাম জানতে পারেনি পুলিশ। তাদের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন উত্তরা পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিলুজ্জামান বিপুল।
উত্তরা পূর্ব থানা : উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরে সক্রিয় কিশোর গ্যাং এইচবিটি বা হিটার বয়েজ গ্রুপ। সদস্য সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০ জন। গ্রুপ লিডার বিষু চন্দ্র শীল। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পুলিশের তালিকায় হিটার বয়েজ গ্রুপের ৩ জন সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এরা হলেন নাঈম মিয়া, ইব্রাহিম এবং শুভ। গ্রুপ লিডার ছাড়া বাকিদের সবাই ছাত্র। দক্ষিণখান ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ এ গ্রুপের পৃষ্ঠপোষক। ৬নং সেক্টরের দাদা গার্মেন্টসের পেছনে রাজউক অফিসের সামনে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের আনাগোনা দেখা যায়।
এছাড়া ৮ নম্বর সেক্টর এলাকায় সক্রিয় সানি গ্রুপ। লিডারের নাম সাকিবুল হাসান ওরফে সানি। তার পিতার নাম তাইজুল ইসলাম। সানি গ্রুপের অন্যতম সদস্য হলেন শাকিল ওরফে ড্যান্সার শাকিল। পৃষ্ঠপোষক হিসাবে পুলিশের তালিকায় যার নাম আছে। তিনি হলেন উত্তরা পূর্ব থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আলামিন প্রধান।
দক্ষিণখান থানা : দক্ষিণখান এলাকায় দুটি কিশোর গ্রুপ সক্রিয়। একটির নাম ইয়ংস্টার গ্রুপ এবং অন্যটি বিগবস গ্রুপ। ইয়ংস্টার গ্রুপের লিডার হাসিবুল হাসান ওরফে শান্ত। তার অন্যতম সহযোগী আরাফাত মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেলহাজতে আছেন।
গ্রুপের উল্লেখযোগ্য সদস্যরা হলেন তৌকির, ফয়জুল ইসলাম ওরফে সিফাত, সোহরাব হোসেন, সাগর, আনছার আলী, সাকিল, আপেল ওরফে পিচ্চি আপেল, সোহেল রানা, সাইফুল ইসলাম এবং সৌরভ।
ইয়াংস্টার গ্রুপের রাজনৈতিক প্রশ্রয়দাতা হিসাবে ৪৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান ওরফে নাঈমের নাম জানিয়েছে পুলিশ। দক্ষিণখানের ক্যাসি হাসপাতালের আশপাশ গাওয়াইর, নগরীয়াবাড়ী ও দক্ষিণখানের বাজার এলাকা ইয়াংস্টার গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে।
দক্ষিণখানের বিগবস গ্রুপের লিডার হলেন আক্তারুজ্জামান ওরফে ছোটন। তিনি ছিনতাইকারী হিসাবে পুলিশের খাতায় তালিকাভুক্ত। কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা ছোটনের পিতার নাম আব্দুস সামাদ। বর্তমান ঠিকানা গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকার জাহিদ হাসানের ভাড়াটিয়া। বিগবস গ্রুপের সদস্যরা হলেন শামীম ওরফে দুধ শামী, আবিদ বিন আজাদ, উমুল, জোবায়ের ইসলাম রাসেল, নাদিম ইসলাম, খাইরুল, কাজী মো. ইলিয়াস ওরফে বাবু, মোখলেছুর রহমান, রাকিব, চাঁন মিয়া ওরফে সবুজ। বিগবস গ্রুপের বেশির ভাগ সদস্য ভবঘুরে এবং বয়স ২০ বছরের নিচে। বিগবস গ্রুপের নিয়ন্ত্রিত এলাকা ট্রান্সমিটার ও বালুর মাঠ। রাজনৈতিক প্রশ্রয়দাতা হলেন ফায়দাবাদা এলাকার বাসিন্দা আলতাফ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা রয়েছে।
তুরাগ থানা : ‘রানা ভোলা কিং মহল’ নামের কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে উত্তরা ১০নং সেক্টর, রানা ভোলা এবং ফুলবাড়িয়া সানভিম স্কুলের আশপাশের এলাকা। গ্রুপ লিডারের বয়স ১৭ বছর। তার নাম রাসেল। পিতা আরমান আলী। গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন সামাদ, আহাদ, মাহবুব, কামরুল এবং মামুন। রানা ভোলা কিং মহল গ্রুপের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক উত্তরা পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান।
তুরাগে সক্রিয় আরেকটি কিশোর গ্যাং জিদান গ্রুপ। লিডারের নাম জিয়াউল ইসলাম ওরফে জিদান। তিনি একাধিক মামলার আসামি। তবে তার রাজনৈতিক পদ-পদবি রয়েছে। তিনি বর্তমানে উত্তরা ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। জিদানের পিতার নাম ফারুক আহমেদ মজুমদার।
গ্রুপের অন্য সদস্যরা হলেন-শিশির, মামুন, গাজী মিয়া এবং শাকিল। পাকুন্দিয়া, বৃন্দাবন, দিয়াবাড়ী ও উলুদাহ এলাকা জিদান গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। রাজনৈতিক আশ্রয়দাতা বা পৃষ্ঠপোষক হলেন ৫২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সোহেল।
উত্তরখান থানা : উত্তরখানের বড়বাগ ইসমাইল গ্যারেজের পশ্চিম পাশ, আটিপাড়া ও বড়বাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে শাহীন ও রিপন গ্যাং। লিডারের নাম রিপন হোসেন। সদস্য সংখ্যা ১০-১২ জন। এদের মধ্যে ডাকু শাহীন, তুষার, বাবু, মুন্না, শরীফ এবং বিশু অন্যতম।
গ্রুপের রাজনৈতিক প্রশ্রয়দাতা হিসাবে যুবলীগের সাবেক কার্যকরী সদস্য আমির হোসেনের নাম উঠে এসেছে পুলিশের তালিকায়। এছাড়া উত্তরখানের খ্রিস্টানপাড়া, রাজাবাড়ি ও আটিপাড়া এলাকায় সক্রিয় সলেমান গ্যাং। লিডারের নাম সলেমান। সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন। এদের মধ্যে সাগর, রাব্বি, সোহান, মুরাদ হোসেন রাব্বি এবং তৌহিদ মিয়া অন্যতম।
উত্তরখান থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহীন আলম ওরফে ফরেন শাহীনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে। ফায়দাবাদ, কোটবাড়ী এবং ৮ নম্বর সেক্টর এলাকায় সক্রিয় দি বস (হৃদয় গ্যাং) গ্রুপ। লিডারের নাম হৃদয়। গ্রুপের ৮-১০ জন সদস্যের মধ্যে ৪ জনের নাম তালিকাভুক্ত করেছে পুলিশ। এরা হলেন মাহবুবুল ইসলাম রাসেল ওরফে কাটা রাসেল, ছাব্বির হোসেন, সাদ এবং সানি। গ্রুপের বেশির ভাগ সদস্য বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
এদিকে পুলিশের তালিকায় বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলশান এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা সবচেয়ে কম। ভাটারা থানা এলাকায় ডি নাইন নামের একটি মাত্র কিশোর গ্যাং তালিকাভুক্ত করেছে পুলিশ। এর লিডার ফারিহাজ আহম্মেদ মুন। লিডারসহ গ্রুপের ৩০-৩৫ জন সদস্যের প্রায় সবাই ছাত্র।
সদস্যদের মধ্যে সান, নুর হাসান নিয়ন, ইসতিয়াক, সাব্বির, কাজিম তানভির এবং ফারদিন পুলিশের তালিকাভুক্ত। সাইদুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতাসহ আরও বেশ কয়েকজন ডি নাইন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষক।
বক্তব্য : কিশোর গ্যাংয়ের রাজনৈতিক শেল্টারের অভিযোগ অস্বীকার করে বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তরা পূর্ব থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আলামিন প্রধান বলেন, সানি গ্রুপকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে-সানি গ্রুপের লিডার সাকিবুল হাসান সানি এক সময় থানা ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন। অভিযোগ ওঠার পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে দক্ষিণখান ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ফারুক আহম্মেদ বলেন, তিনি মূলত একজন ব্যবসায়ী। সমাজে ভালো কিছু করার জন্য তিনি রাজনীতি করেন। কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে তিনি কখনোই জড়িত নন। এছাড়া এইচবিটি বা হিটার বয়েজ গ্রুপের লিডার বিষ্ণু চন্দ্র শীল নামের কাউকে তিনি চেনেন না।
কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে পুলিশের তালিকায় নাম আছে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান নাঈমের। এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে চাইলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এ ধরনের ভূতুড়ে তালিকা কিসের ভিত্তিতে প্রণয়ন করেছে? একটি মহল ষড়ন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে চায়।’ প্রকৃতপক্ষে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে এলাকার জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের কোনো সম্পর্ক থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
উত্তরা পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে স্থানীয় থানা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি পুলিশকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বলেছেন, এর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে কিশোর গ্যাংয়ের একটি গ্রুপের লিডারসহ সদস্যদের শনাক্তের ক্ষেত্রে পুলিশ সহায়তা চেয়েছে।
বক্তব্য জানার জন্য ফোন করা হলে উত্তরা পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিলুজ্জামান বিপুল এবং উত্তরখান থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহীন আলম ওরফে ফরেন শাহীনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।