হাওর বার্তা ডেস্কঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ দেড় হাজার কোটি টাকার আম উৎপাদন হলেও এক হাজার কোটি টাকা আসতে পারে। করোনায় লকডাউন পরিস্থিতির কারণে বাইরের আমচাষিরা আসতে পারেনি, যার কারণে অন্তত ৫শ কোটি টাকা ঘাটতি থেকেই যাবে।
সোমবার (২৮ জুন) সকালে জেলার শিবগঞ্জে কানসাটের আম বাজারে গিয়ে এমনই গল্প শোনা যায় আম বাগানি আর ব্যবসায়ীদের মুখে।
শামসুজ্জামান নামের এক আম বাগানি বলেন, এবার আমের মৌসুমে বাগান পরিচর্যার জন্য এক কীটনাশকের দোকান থেকে প্রায় ৬৫ হাজার টাকার বিষ কিনেছি। এবার আমের বাজার যেভাবে চলছে, টাকা পরিশোধ করতে পারবো কিনা জানিনা।
শিবগঞ্জর কালুপুর এলাকার মুনিরুল ইসলামের কেনা আছে ১২টি আমের বাগান। তিনি হতাশা নিয়ে বললেন, এবার আমের দাম না থাকার কারণে খুব হতাশায় ভূগছি। মৌসুমের প্রথম দিকে আমের যে মূল্য ছিল, সে মূল্য যদি বর্তমান বাজারে থাকতো তাহলে কিছুটা স্বস্তি পেতাম। আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ, আমের টাকা দিয়ে তার চিকিৎসা করাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু এবার আমের যে দাম কী করবো? আমার ছেলেকে কথা দিয়েছিলাম।তাকে ঢাকা নিয়ে যাবো।তার উন্নত চিকিৎসা করাবে। এখন অনিশ্চয়তায় ভূগছি।
তিনি জানান, মৌসুমের প্রথম দিকে ক্ষিরশাপাত আমের মণ ছিল ২৮০০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকা পর্যন্ত।গুটি জাতের আমের মণ ছিল ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা। লক্ষনভোগ আমের মণ ছিল ১২৫০ থেকে ১৪০০ টাকা।
তিনি বলেন, প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মণ আম পেরে বাজারে নিয়ে আসি।যাতায়াত খরচ, কর্মচারীর মজুরি আর দুই বেলার হোটেলে খাবার খেলেই সব টাকা শেষ।
তিনি জানান, বর্তমান বাজারে ফজলি আমের মণ ২০০-৪০০ টাকা, বোম্বাই আমের মণ ৪০০-৬০০ টাকা, ক্ষিরশাপাত আমের মণ ১৪০০ থেকে ২০০০ টাকা, আম্রপালি রকম ভেদে ১৫০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা, ল্যাংড়া আমের মণ রকমভেদে ১১০০-১৫০০ টাকা, লক্ষনভোগ আমের মণ ৪০০-৬০০ টাকা এবং গুটি জাতের আম ২০০-৪০০ টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন- এ বছরে জেলায় আমবাগানের পরিমাণ ৩৪ হাজার ৭৩৮ হেক্টর।আম গাছের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ।গতবছরের চেয়ে এবার জেলায় ৩ হাজার ৩৬০ হেক্টর বেশি জমিতে আমের আবাদ হয়েছে।এ আমের মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল আড়াই লাখ মে.টন, তবে এবার রেকর্ড ছাড়িয়ে প্রায় ৩ লাখ মে.টন আম উৎপাদন হয়েছে।