ঢাকা ০৯:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরের ডেমি ধান হাসি ফুটিয়েছে গরিবের মুখে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২১:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১
  • ২৪৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের হাওরে এবার বর্ষা বিলম্বিত হচ্ছে। প্রতিবছর আষাঢ় মাসের এ সময়ে চারদিকে পানি থৈ থৈ করে। নতুন পানিতে জেলেরা মাছ ধরে। হাট-বাজারে সমাহার ঘটতো নানাজাতের মাছের। কিন্তু এ বছর বর্ষা বিলম্বিত হওয়ায় জেলেরা অলস সময় কাটাচ্ছে।

অন্যদিকে হাওরে বোরো ধান কাটা, মাড়াই ও গোলায় তোলা আরো এক মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে। পানি না আসায় হাওরের সেসব বোরো ধানের জমিতে ধানের ডাটা থেকে এবছর প্রচুর পরিমাণে চারা গজিয়েছে। আঞ্চলিক ভাষায় একে ডেমি ধান বলে।

এই ডেমি ধানও পেঁকে এসেছে। ফলে দিনমজুর শ্রমিকরা ডেমি ধান কাটার জন্য হাওরে ছুটে যাচ্ছেন। ডেমি ধান কেটে তারা মহা আনন্দে বাড়ি ফিরছেন।

কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিদিন শত শত দিনমজুর হাওর থেকে গৃহস্তের জমি থেকে ডেমি ধান কাটছেন। একজন শ্রমিক দৈনিক এক থেকে দেড় মণ ধান কেটে আনতে পারেন।

ডেমি ধানের মূল্যও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। ১ মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়।

কোন কোন কৃষক হাওরে ডেমি গঁজানোর শুরু থেকেই বিশাল এরিয়ায় লাল কাপড়ের পতাকা পুঁতে রেখেছেন। পরে এসকল জমি থেকে ডেমি ধান কেটে নিয়ে আসেন। অন্য কৃষকরা এসব জমি থেকে ধান কাটতে পারে না।

চমকপুর গ্রামের কৃষক লাল মিয়া জানান, নদার হাওর থেকে ১৫ দিনে তিনি ৪০ মণ ডেমি ধান কেটে এনেছেন। ১০ মণ ধান বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকি ৩০ মণ রেখেছেন সারা বছরের খোরাকির জন্য।

এরকম অসংখ্য দিনমজুর রয়েছে যারা প্রতিদিন হাওর থেকে ডেমি কেটে এনে সারা বছরের খোরাকি সংগ্রহ করছেন।

বর্ষা বিলম্বিত হওয়ায় যোগাযোগ নিয়ে দোটানায় পড়েছেন মানুষ। সময় মত পানি না আসার কারণে যাত্রীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

এক ঘন্টার রাস্তা যেতে হয় ট্রলারে চার ঘন্টায়। ভাড়া গুণতে হয় দ্বিগুণ। বর্ষা হলে এ সমস্যা হবে না। দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছা যায়।

বর্তমানে কোন কোন রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে চলাচল প্রায় বন্ধের পথে। যাত্রী সাধারণ পড়ছে চরম বিপাকে।

অন্যদিকে সরাসরি জেলা শহর কিংবা অন্য স্থান থেকে ইটনা-অষ্টগ্রাম-মিঠামইন গাড়ি নিয়ে আসা যাচ্ছে না। কারণ বর্ষা না হলেও দুটি ফেরীর চলাচলের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে ফেরী দুটি বন্ধ রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওরের ডেমি ধান হাসি ফুটিয়েছে গরিবের মুখে

আপডেট টাইম : ০২:২১:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের হাওরে এবার বর্ষা বিলম্বিত হচ্ছে। প্রতিবছর আষাঢ় মাসের এ সময়ে চারদিকে পানি থৈ থৈ করে। নতুন পানিতে জেলেরা মাছ ধরে। হাট-বাজারে সমাহার ঘটতো নানাজাতের মাছের। কিন্তু এ বছর বর্ষা বিলম্বিত হওয়ায় জেলেরা অলস সময় কাটাচ্ছে।

অন্যদিকে হাওরে বোরো ধান কাটা, মাড়াই ও গোলায় তোলা আরো এক মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে। পানি না আসায় হাওরের সেসব বোরো ধানের জমিতে ধানের ডাটা থেকে এবছর প্রচুর পরিমাণে চারা গজিয়েছে। আঞ্চলিক ভাষায় একে ডেমি ধান বলে।

এই ডেমি ধানও পেঁকে এসেছে। ফলে দিনমজুর শ্রমিকরা ডেমি ধান কাটার জন্য হাওরে ছুটে যাচ্ছেন। ডেমি ধান কেটে তারা মহা আনন্দে বাড়ি ফিরছেন।

কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিদিন শত শত দিনমজুর হাওর থেকে গৃহস্তের জমি থেকে ডেমি ধান কাটছেন। একজন শ্রমিক দৈনিক এক থেকে দেড় মণ ধান কেটে আনতে পারেন।

ডেমি ধানের মূল্যও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। ১ মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়।

কোন কোন কৃষক হাওরে ডেমি গঁজানোর শুরু থেকেই বিশাল এরিয়ায় লাল কাপড়ের পতাকা পুঁতে রেখেছেন। পরে এসকল জমি থেকে ডেমি ধান কেটে নিয়ে আসেন। অন্য কৃষকরা এসব জমি থেকে ধান কাটতে পারে না।

চমকপুর গ্রামের কৃষক লাল মিয়া জানান, নদার হাওর থেকে ১৫ দিনে তিনি ৪০ মণ ডেমি ধান কেটে এনেছেন। ১০ মণ ধান বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকি ৩০ মণ রেখেছেন সারা বছরের খোরাকির জন্য।

এরকম অসংখ্য দিনমজুর রয়েছে যারা প্রতিদিন হাওর থেকে ডেমি কেটে এনে সারা বছরের খোরাকি সংগ্রহ করছেন।

বর্ষা বিলম্বিত হওয়ায় যোগাযোগ নিয়ে দোটানায় পড়েছেন মানুষ। সময় মত পানি না আসার কারণে যাত্রীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

এক ঘন্টার রাস্তা যেতে হয় ট্রলারে চার ঘন্টায়। ভাড়া গুণতে হয় দ্বিগুণ। বর্ষা হলে এ সমস্যা হবে না। দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছা যায়।

বর্তমানে কোন কোন রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে চলাচল প্রায় বন্ধের পথে। যাত্রী সাধারণ পড়ছে চরম বিপাকে।

অন্যদিকে সরাসরি জেলা শহর কিংবা অন্য স্থান থেকে ইটনা-অষ্টগ্রাম-মিঠামইন গাড়ি নিয়ে আসা যাচ্ছে না। কারণ বর্ষা না হলেও দুটি ফেরীর চলাচলের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে ফেরী দুটি বন্ধ রয়েছে।