অভিনয় করতে গিয়ে নিজেকে অনেক কন্ট্রোলে এনেছি। সেখানে কম কথা বললেও বাস্তবে একটু বেশিই কথা বলি আমি। পছন্দ করি আড্ডা দিতে, যা মন্দিরা চরিত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত’- বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এমনটাই জানালেন ‘অপরাজিতা’ নাটকের মন্দিরা চরিত্র রূপদানকারী নাইরুজ সিফাত। ওপার বাংলার প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবির উপন্যাস ‘বালুচারী’ অবলম্বনে দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত হচ্ছে ধারাবাহিক নাটক অপরাজিতা। হার না মানা এক নারীর গল্প এটি। আর এই অপরাজিতা নারী নাইরুজ।
মিডিয়ার সঙ্গে নাইরুজের সম্পর্ক শুরু ২০১২ সালে, বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে। এ পর্যন্ত প্রায় দেড় ডজন টিভিসিতে কাজ করেছেন লাস্যময়ী এ মডেল ও অভিনেত্রী। বাবা একেএম নুরুল আলম তালুকদার ছিলেন বিটিভির ‘এ’ তালিকাভুক্ত শিল্পী। নাইরুজ অল্প বয়স থেকেই অনুপ্রাণিত বাবার কাজ দেখে। ছোটবেলায় চেয়েছিলেন বড় হয়ে নাচের শিল্পী হবেন। সপ্তাহে সাতদিন শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও স্বপ্নটা এখনো বহন করেন তিনি। চেষ্টা করেন নাচ নিয়ে কিছু করতে।
মডেল থেকে অভিনয়ে আসার গল্পটা জানতে চাইলে নাইরুজ বলেন, ‘উপন্যাসের চরিত্র অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য বরাবরই চ্যালেঞ্জের। আমার জন্যও সেটা কম ছিল না। শুধু পর্দায়ই নয়, পর্দার পেছনেও চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে। অডিশন দিতে হয়েছে। দিতে হয়েছে স্ক্রিনটেস্ট। অর্ধশতাধিক প্রতিযোগীকে টপকে চরিত্রটি পেয়েছি। এ কারণে আর ভর্তি হতে পারিনি এমবিএ-তে। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করেই নাম লেখাই বাছাই প্রতিযোগিতায়।’
অপরাজিতা নাটকের শুটিংয়ের কোনো স্মৃতি বা মজার ঘটনা নাড়া দেয় কি না জানতে চাইলে অনেকটা হেসে নাইরুজ বলেন, ‘দেখুন, গোটা কাজটাই আমরা খুব এনজয় করছি। নির্দিষ্ট করে বলার কিছু নেই। তারপরও যেটা বলতে পারি সেটা হলো নাটকে বাবার মৃত্যুর দৃশ্যটি শুটিংয়ের সময় পুরোপুরি মিশে গিয়েছিলাম ক্যারেক্টারে। আমার বাবা এখনো আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। কিন্তু নাটকের ওই দৃশ্য করতে গিয়ে কিছুক্ষণের জন্য মনে হয়েছিল সত্যি সত্যিই আমি পিতৃহারা হলাম। এছাড়া সহকর্মী ও কাজের পরিবেশ এখানে খুবই আন্তরিক। এনজয় করে শুটিং করি আমরা।’
অনেকেই অভিযোগ করেছেন, নাটকটা ভারতীয় সিরিয়ালের আদলে। এ বিষয়ে কি বলবেন- নাইরুজ বলেন, ‘যারা নিয়মিত ভারতীয় সিরিয়াল দেখেন, তারা পার্থক্যটা অবশ্যই বুঝবেন। এখানে সেই রকম দাম্পত্য কলহের তীব্রতা নেই। এছাড়া হিন্দু সাংস্কৃতিক বলয়ের নাটক হওয়া সত্ত্বেও এখানে সেইভাবে পূজা-অর্চনাও দেখানো হয় না। তুলে ধরা হচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতি।’ তিনি আরও বলেন, ‘খেয়াল করে দেখবেন, মেকাপ এবং গেটআপে দেশীয় ঐতিহ্য রয়েছে। দেখানো হচ্ছে তাঁতের শাড়ির মতো দেশীয় শাড়ি। সুতরাং, ঢালাওভাবে এ অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়।’
আগামীতে বড় পর্দায় কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে নাইরুজের। তবে গতানুগতিক নয়। একটু ব্যতিক্রমী চরিত্রে। তার ভাষায় টি-টোয়েন্টি নয়, অভিনয়ে খেলতে চান টেস্ট ইনিংস।