মেহেরপুরে হুইট ব্লাস্ট ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গমের দানা চিটা হয়ে যাচ্ছে। গম পরিপক্ব হওয়ার আগেই পাকার উপক্রম হয়ে যাচ্ছে। ওই পাকা গমে তার ভিতরে কোনো দানা নেই । আবার কোনো কোনো গমে চিটা দেখা যাচ্ছে। গমের এই ফলন বিপর্যয় নিয়ে মেহেরপুরের গমচাষীরা দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে তাদের দেয়া পরামর্শ চাষিরা ঠিকমতো কাজে লাগালে ফলন বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হবে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার তিন উপজেলায় চলতি বছর ১৩ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ, প্রদীপ, ছাব্বিশ জাতের গমের আবাদ বেশি হয়েছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের কৃষক আবু তালেব জানান, এ বছর তিনি তিন বিঘা জমিতে প্রদিপ জাতের গমের আবাদ করেছেন। আশা করছিলেন বিঘা প্রতি ১৬ থেকে ১৮ মণ গম ঘরে তুলতে পারবেন। কিন্তু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গম পাকার উপত্রম হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ওই গমে চিটা পড়েছে।
একই গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, গতবছর গমের বাম্পার ফলন পেয়ে চলতি বছরে ৫ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছেন। বিঘা প্রতি ৭ থেকে ৮ হাজার করে খরচ হয়েছে। গমের অবস্থা দেখে সব মিলিয়ে ৪-৫ হাজার টাকা ফিরে পাবেন কিনা দুঃশ্চিন্তাই আছেন।
গোভিপুর গ্রামের গমচাষি উজ্জ্বল হোসেন বলেন, গম কাঠা মাড়া করতে যে খরচ হবে সেই খরচই উঠবে না। তাই ভাবছেন আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ক্ষেত্র পরিষ্কার করবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর গম হইট ব্লাস্ট নামের নতুন এক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। খবর পেয়ে জাতীয় গম গবেষণা কেন্দ্রে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরামর্শে চাষিদের ন্যাটিভো ও ফলিকুর কীটনাশক সঠিকমাত্রায় প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় গম গবেষণা কেন্দ্রে থেকে তিন সদস্যর একটি টিম ২৪ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুরের বিভিন্ন গম ক্ষেত পরিদর্শন করে আগের পরামর্শ মেনে চলার কথা বলেছেন। আশা করছেন চাষিরা এই কীটনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার কললে ফলন বিপর্যয় রোধ হবে।