ঢাকা ০১:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মধুর রসে টইটম্বুর বেলাবরের কাঁঠাল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫৫:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১
  • ২৮৫ বার

বাহারি স্বাদ,গন্ধ আর রঙের কাঁঠালে ভরপুর গাছগুলো। এটাই এখন নরসিংদীর বেলাব এলাকার স্বাভাবিক চিত্র। বাগানে, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে, ক্ষেতের ধারে যেদিকে চোখ যায় দেখা যাবে গাছে ঝুলছে শুধু কাঁঠাল আর কাঁঠাল। স্থানীয়দের দাবি, ফল মৌসুমে সকালের নাস্তা মানেই কাঁঠাল। মধুর মতো মিষ্টি এখানকার কাঁঠাল। মুখে দিতেই রসে টইটম্বুর।   

সবুজ, লালচে, কালচে, হলুদাভ ইত্যাদি রঙের কাঁঠালের পাশাপাশি গালা, খাজা ও রসখাজা এ তিন জাতের কাঁঠালই এখানে বেশি। তাছাড়া গোল, মাঝারি, লম্বা এ তিন আকারের কাঁঠাল বেশি। স্বাদে ও গন্ধে এখানকার কাঁঠালের সুনাম সারাদেশে। বিশেষ গুণসম্পন্ন এ অঞ্চলের কাঁঠাল ক্রয় করতে জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা বেলাবতে আসেন এবং তাদের পছন্দমতো কাঁঠাল কিনে নিজ নিজ এলাকার বাজারগুলোতে বিক্রি করেন।

এ সময় বেলাবতে পুরাতন বাজারগুলোর পাশাপাশি কাঁঠাল কেন্দ্রিক স্বল্প সময়ের বাজার গড়ে ওঠে। বেলাবতে জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসকে মধুরসের মাসের পাশাপাশি উৎসবের মাসও বলা হয়। কাঁঠালের সময় অনেক দোকানিরা হালখাতা খুলেন। কারণ এ সময় কৃষকদের হাতে টাকা থাকে।

গাছে ঝুলছে গোলাকৃতির সুবজ রঙের কাঁঠাল

গাছে ঝুলছে গোলাকৃতির সুবজ রঙের কাঁঠাল

এছাড়া এ সময় ঘরে ঘরে কাঁঠাল দিয়ে উপাদেয় পিঠা তৈরি করা হয়। কাঁঠালসহ অন্যান্য ফলের এ মাসে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ী আর ফলপ্রেমীদের সঙ্গে স্থানীয়দের গড়ে উঠে ভালোবাসার সেতুবন্ধন। সবধরনের কাঁঠাল সুস্বাদু হলেও সাধারণত কাল বা কালচে কাঁঠালের স্বাদ ও গন্ধ বেশি হওয়ায় এ জাতীয় কাঁঠালের চাহিদা বেশি। লোকমুখে কালো কাঁঠালের বিভিন্ন গুণের কথা প্রচলিত। মন মাতানো গন্ধ আর অধিক মিষ্টি হওয়ায় এ ধরনের কাঁঠালের বেশি চাহিদা। এ জাতের কাঁঠাল খুব কমই পাওয়া যায়। এখানকার উজিলাব, আমলাব, চন্দনপুর, পোড়াদিয়া, হাড়িসাংগান আর বাবলাতে এ জাতীয় কাঁঠালের অধিক দেখা মেলে।

সাধারণত স্থানীয়রাই এ কাঁঠাল কিনে বেশি। গ্রীষ্মকালের এ মধুফলের মাসে অন্যান্য সব খাবারের থেকেও ফলই যেন মানুষকে বেশি রসনা তৃপ্ত করে। আর তার মধ্যে কাঁঠালের জুড়ি মেলা ভার। কাঁঠালের পাগল করা গন্ধেই অর্ধেক পেট ভরে যায়। বর্তমানে কাঁঠাল দিয়ে বিভিন্ন রকমের ডেজার্টও তৈরি হচ্ছে। তবে শুধু স্বাদে নয়, উপকারের দিক থেকেও এই ফল যথেষ্ট সমৃদ্ধ। কাঁঠাল ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। এ ফাইবারই হজম শক্তি ঠিক রাখতে ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

কাঁঠালে রয়েছে সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। শুধু তাই নয়, এ ফল হৃদযন্ত্র ভালো রাখতেও সাহায্য করে। কাঁঠালে আয়রন থাকে যা রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। কাঁঠালে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। বলিরেখাও কমে অনেকটা। শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ক্যান্সার ও টিউমারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে, পাইলস ও কোলন ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে। প্রচুর ভিটামিন সমৃদ্ধ এ ফল চোখ ও দেহ ভালো রাখতে সাহায্য করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মধুর রসে টইটম্বুর বেলাবরের কাঁঠাল

আপডেট টাইম : ০৭:৫৫:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১

বাহারি স্বাদ,গন্ধ আর রঙের কাঁঠালে ভরপুর গাছগুলো। এটাই এখন নরসিংদীর বেলাব এলাকার স্বাভাবিক চিত্র। বাগানে, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে, ক্ষেতের ধারে যেদিকে চোখ যায় দেখা যাবে গাছে ঝুলছে শুধু কাঁঠাল আর কাঁঠাল। স্থানীয়দের দাবি, ফল মৌসুমে সকালের নাস্তা মানেই কাঁঠাল। মধুর মতো মিষ্টি এখানকার কাঁঠাল। মুখে দিতেই রসে টইটম্বুর।   

সবুজ, লালচে, কালচে, হলুদাভ ইত্যাদি রঙের কাঁঠালের পাশাপাশি গালা, খাজা ও রসখাজা এ তিন জাতের কাঁঠালই এখানে বেশি। তাছাড়া গোল, মাঝারি, লম্বা এ তিন আকারের কাঁঠাল বেশি। স্বাদে ও গন্ধে এখানকার কাঁঠালের সুনাম সারাদেশে। বিশেষ গুণসম্পন্ন এ অঞ্চলের কাঁঠাল ক্রয় করতে জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা বেলাবতে আসেন এবং তাদের পছন্দমতো কাঁঠাল কিনে নিজ নিজ এলাকার বাজারগুলোতে বিক্রি করেন।

এ সময় বেলাবতে পুরাতন বাজারগুলোর পাশাপাশি কাঁঠাল কেন্দ্রিক স্বল্প সময়ের বাজার গড়ে ওঠে। বেলাবতে জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসকে মধুরসের মাসের পাশাপাশি উৎসবের মাসও বলা হয়। কাঁঠালের সময় অনেক দোকানিরা হালখাতা খুলেন। কারণ এ সময় কৃষকদের হাতে টাকা থাকে।

গাছে ঝুলছে গোলাকৃতির সুবজ রঙের কাঁঠাল

গাছে ঝুলছে গোলাকৃতির সুবজ রঙের কাঁঠাল

এছাড়া এ সময় ঘরে ঘরে কাঁঠাল দিয়ে উপাদেয় পিঠা তৈরি করা হয়। কাঁঠালসহ অন্যান্য ফলের এ মাসে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ী আর ফলপ্রেমীদের সঙ্গে স্থানীয়দের গড়ে উঠে ভালোবাসার সেতুবন্ধন। সবধরনের কাঁঠাল সুস্বাদু হলেও সাধারণত কাল বা কালচে কাঁঠালের স্বাদ ও গন্ধ বেশি হওয়ায় এ জাতীয় কাঁঠালের চাহিদা বেশি। লোকমুখে কালো কাঁঠালের বিভিন্ন গুণের কথা প্রচলিত। মন মাতানো গন্ধ আর অধিক মিষ্টি হওয়ায় এ ধরনের কাঁঠালের বেশি চাহিদা। এ জাতের কাঁঠাল খুব কমই পাওয়া যায়। এখানকার উজিলাব, আমলাব, চন্দনপুর, পোড়াদিয়া, হাড়িসাংগান আর বাবলাতে এ জাতীয় কাঁঠালের অধিক দেখা মেলে।

সাধারণত স্থানীয়রাই এ কাঁঠাল কিনে বেশি। গ্রীষ্মকালের এ মধুফলের মাসে অন্যান্য সব খাবারের থেকেও ফলই যেন মানুষকে বেশি রসনা তৃপ্ত করে। আর তার মধ্যে কাঁঠালের জুড়ি মেলা ভার। কাঁঠালের পাগল করা গন্ধেই অর্ধেক পেট ভরে যায়। বর্তমানে কাঁঠাল দিয়ে বিভিন্ন রকমের ডেজার্টও তৈরি হচ্ছে। তবে শুধু স্বাদে নয়, উপকারের দিক থেকেও এই ফল যথেষ্ট সমৃদ্ধ। কাঁঠাল ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। এ ফাইবারই হজম শক্তি ঠিক রাখতে ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

কাঁঠালে রয়েছে সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। শুধু তাই নয়, এ ফল হৃদযন্ত্র ভালো রাখতেও সাহায্য করে। কাঁঠালে আয়রন থাকে যা রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। কাঁঠালে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। বলিরেখাও কমে অনেকটা। শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ক্যান্সার ও টিউমারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে, পাইলস ও কোলন ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে। প্রচুর ভিটামিন সমৃদ্ধ এ ফল চোখ ও দেহ ভালো রাখতে সাহায্য করে।