করোনা তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্কবার্তা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আসা নিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণেই দেশে দ্বিতীয় ঢেউ এলো। এখন তৃতীয় ঢেউয়ে যেন আক্রান্ত না হই সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে ভার্চুয়াল এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা বেসামালভাবে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করলাম, মাস্ক পরলাম না, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলাম না। যার ফলে আমরা দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হলাম। এখনই এর কারণ কী সেটা চিহ্নিত করতে হবে। আমরা করোনার বিস্তার রোধে বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ করেছি। জনসমাগম নিরুৎসাহে সব ধরনের সভা-সমাবেশ সীমিত করা হয়েছে। করোনার উৎপত্তি স্থানগুলোসহ পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলসহ সব ধরনের মেলা, পিকনিক বন্ধ রয়েছে। এভাবে কিছুদিন চললে আশা করা যায় করোনা সংক্রমণের হার কমে আসবে। তবে সেই একই কাজ যদি আমরা আবারও করি, তাহলে দেশে আবার তৃতীয় ঢেউ আসবে।

তিনি বলেন, আমরা আর কত চিকিৎসা দেব, হাসপাতলে আর কত শয্যা বাড়াবো। কত হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা দেব, আমরা কত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করবো। হাসপাতালতো আর রাতারাতি বৃদ্ধি করা যায় না। হাসপাতালের বেডওতো রাতারাতি বৃদ্ধি করা যায় না। তারপরেও আমরা এই অল্প সময়ের মধ্যে আড়াই হাজার বেড থেকে ৭/৮ হাজার বেড বৃদ্ধি করেছি। দশ গুণ রোগীও আমরা সামাল দিতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু তারপরও বাড়লে আর সম্ভব হবে না। সেই জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমরা চাই করোনা থেকে যেন আমরা রক্ষা পাই। আশা করি, আমরা যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাই, আমাদের জীবনযাত্রা যেন ভালো হয়। আমাদের যেন পুষ্টিকর খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।

সুষম খাবার বেশি খাওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, পুষ্টি সপ্তাহে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি শাক-সবজি, ফলমূলসহ সুষম খাবার খেতে হবে। তেল, চিনি, লবণ কম খান। এ ম্যাসেজ আমরা মানুষকে দিতে চাই।

তিনি আরো যোগ করেন, আমাদের দেশে ১০ শতাংশ মানুষ এখনও পুষ্টিহীনতায় ভোগে। পুষ্টির অভাবে ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে। পুষ্টির দিকে ঘাটতি থাকলেও আশপাশের দেশ থেকে ভালো। এমনকি ভারতের থেকে পুষ্টির দিক থেকে আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি।

এসময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে আসছে, তবে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা পিছিয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবিষয়ে আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক শাহানারা বেগম।

জাতীয় পুষ্টিসপ্তাহের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর