বৈরী সময়েও ধান কাটার উৎসব,সংকট শ্রমিক ও পরিবহন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একদিকে করোনা মহামারি, অন্যদিকে রাতের আকাশে বৈশাখী ঝড়। দিনে আবার উত্তপ্ত ঝলমলে রোদ – এরই মধ্যে প্রায় সবকটি হাওরে কৃষকরা বৈশাখী ফসল তুলতে নেমেছেন। চলতি বোরো মৌসুমে সিলেটের চার জেলায় ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৮ টন চাল। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে এ পর্যন্ত গড়ে ২৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। প্রকৃতি সদয় থাকলে ১০ দিনের মধ্যে অনেক ধান ঘরে উঠে যাবে।

কিন্তু বোরো প্রধান অনেক হাওরে ‘গোপাট’ (ধান পরিবহনের একধরণের যান) না থাকায় কৃষক কাটা ধান বাড়ি আনতে পারছেন না। অন্যবার বৈশাখের শুরুতেই নদীতে পানি আসতো – বন্যার পানিতে ছোট-বড় খাল ভরাট হতো। সেই খাল দিয়ে নৌকাযোগে সোনালী ফসল গোলায় উঠত। কিন্তু পরিবহনজনিত সমস্যার কারণে এবার বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। অন্যদিকে শ্রমিক সংকটেও ভুগছেন কৃষকরা।

সাধারণত পহেলা বৈশাখ থেকে ধান কাটা শুরু হয়। তবে গত কয়েক বছর থেকে আগাম জাতের ধান আবাদ হওয়ায় কিছু ধান আগেই কাটা-মাড়াই শুরু হয়। তাই এবারও দক্ষিণ সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় আগে থেকেই ধান কাটা শুরু হয়েছে।

গত পহেলা এপ্রিল দক্ষিণ সুনামগঞ্জের হাওরে ধান কাটা উৎসবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে নেওয়ার আহ্বান জানান। গত শুক্রবার জামালগঞ্জের ছনুয়ার হাওরে ধান কাটা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামিমা শাহরিয়ার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন,জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ দেব প্রমুখ।

‘দেখার হাওর’-এ পাকা ধান কেটে দিয়েছেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসন, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান শাহারিয়ার প্রমুখ। মঙ্গলবার সকালে পাগনার হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসবের উদ্বোধন করেন, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এনডিসি।

সুনামগঞ্জে এবার ৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ৬০ হাজার টন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর