ঢাকা ০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারীর প্রতিটি মুহূর্ত হোক নিরাপদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০০:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১
  • ৪২৪ বার
হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ অতি পরিচিত এই লাইন দুটি কাজী নজরুল তো কবেই লিখে গেছেন; তবুও পুরুষশাসিত সমাজে নারীরা আজ অবহেলিত, শোষিত।

বর্তমান সমাজে পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে নারীরাও এগিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রে নারীর অবদান ঈর্ষণীয়। তবুও নারীরা আজ ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়, দিন দিন বেড়েই চলছে নারীর প্রতি সহিংসতা।

আজ ৮ই মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীদের ওপর হওয়া বৈষম্য, নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাদের জাগ্রত করাই নারী দিবস পালনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা, ভালোবাসা প্রকাশ করে এই দিনটিকে পালন করা হয়।

নারী দিবস উপলক্ষে নারীর চাওয়া-পাওয়া ও স্বাধীনতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর ভাবনা ও মতামত তুলে ধরেছেন মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।

প্রতিটি মুহূর্ত হোক নিরাপদ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদা টুম্পা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নারীরা আজ নিরাপদ নয়। প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই দেখা যায় ধর্ষণ, খুন, নারীর প্রতি সহিংসতা কতটা বেড়ে গেছে। প্রায়ই শোনা যায় রাস্তাঘাটে এমনকি ক্যাম্পাসেও উত্ত্যক্ত হচ্ছে নারীরা। এমনকি মাঝরাতেও বখাটের দ্বারা হেনস্তা হয়েছে। প্রশাসনের পরিচয়ে নারীর ফোন ছিনতাই হয়েছে। এমনকি উপজাতিদের দ্বারাও হেনস্তা হয়েছে নারীরা। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই বখাটে ছেলেরা নারীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এসব কুকর্ম করে যাচ্ছে।

সবকিছু দেখেও আমাদের চুপ করে থাকাটা অন্যায়কে প্রশয় দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের মনুষ্যত্ব ও বিবেকের জোরে নারীর প্রতি এমন অন্যায়কে প্রতিহত করতে হবে। কঠোর আইন প্রণয়ন করে প্রতিটি মূহুর্তে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে যেনো নারী হয় স্বাধীন পায় চলার পূর্ণ স্বাধীনতা। নারীকে নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার, সমাজ, প্রশাসন ও জনসমাজ সকলকে একযোগে সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।

পূর্ণতা পাক নারীর অধিকার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোমেনা আক্তার। তিনি বলেন, নারী স্বাধীনতার মূল বিষয়গুলো শুধু গ্রন্থেই বন্দী হয়ে থাকার জন্য নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার প্রতিফলন জরুরি। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আমরা গলা উঁচু করে নির্দ্বিধায় নারী স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু আমরা আসলে নারী স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বুঝি না। নারী পরাধীনহেতু সমাজ ও পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করা হলেও নিজেদের দূর্বলতাও কম দায়ী নয়। নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে তাকে অবশ্যই সংযম হতে হবে। আমাদের সমাজকেও এ ব্যাপারে যথেষ্ঠ সচেতন হতে হবে।

নারীকে নারীর মতো করেই বাঁচতে দেওয়া উচিত। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, নারীর প্রথম পরিচয় হচ্ছে সে মানুষ। তাই নারী জ্ঞান অর্জন, আত্মসংযম, শ্রমনিষ্ঠা, সেবা, দৃঢ়তা, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে মানসিক দাসত্বের কঠিন শৃঙ্খল ভেঙে এগিয়ে চলতে হবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নির্যাতিত সকলের আত্মসম্মানবোধের চেতনা জাগ্রত হোক, মানুষ হিসেবে সবাই সম্মানিত হোক, সকলের অধিকার পূর্ণতা পাক।

প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, মানব সভ্যতার উষালগ্ন থেকে নারী-পুরুষ অসমতা বিদ্যমান যা আজ অবধিও আছে। এই অসমতার জন্য একমাত্র দায়ী হচ্ছে সমাজ। সচরাচর দেখা যায়, গ্রাম্য এলাকায় সাধারণত মহিলারাই কেবল বাড়ির যাবতীয় কাজসহ সন্তান লালন-পালন করে থাকেন আর পুরুষেরা ঘরের বাইরের কাজগুলো করে থাকেন। কিন্তু এই করোনার দীর্ঘ ছুটিতে একটু উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে গ্রামীণ এলাকায়। তন্মধ্যে পুরুষ শিক্ষকেরা তাদের বাড়ির মহিলাদের কাজে অনেক রকম সহযোগিতা করাসহ সন্তানের লালনপালনেও তারা বেশ সচেতন হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ দিনগুলোর থেকে মহিলাদের কাজের চাপ বর্তমানে বহুগুণে বেড়েছে।

প্রতিনিয়ত তাদের আগের থেকে আরও বেশি স্বাস্থ্য সম্মতভাবে জীবনযাপন নিশ্চিত করতে হচ্ছে এবং এটার সাথে মানসিক বিপর্যয় তো আছেই। এবারের নারী দিবসে আমাদের প্রত্যাশা হোক এটাই যেন শুধুমাত্র সংকটময় মুহূর্তেই নয়, সকল পেশার পুরুষেরা তাদের দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন করে নারীদের পাশে সব সময় যেন এমনি করেই থাকেন।

স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ পাক

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রওশন জাহান সুমাইয়া জানান, দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি যে, আমরা নারীরা স্বাধীন দেশ এর পরাধীন নাগরিক। সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি খুললেই দেখা যায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণের মতো হৃদয়বিতারক সংবাদ। যেই নারী তাদের জন্ম দেয় সেই নারী জাতিকেই অসম্মান করতে তারা বিন্দু মাত্র দ্বিধাবোধ করে না। উল্টা আরো নারীর চলাফেরা, পোশাকে তারা সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে তুলে ধরে। আফসোস যে নারী জতি এত কষ্ট করে জন্ম দেন একটি ফুটফুটে বাচ্চা, আলো দেখান এই সুন্দর পৃথিবীর আজ তারাই নিরাপদভাবে চলাফেরা করতে পারে না। কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমন কি বাসায় ও নিরাপদ নয় নারীরা।

আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র আছে অথচ নারীর স্বাধীনতা নেই, শুধুমাত্র নামেই পালিত হয় নারী দিবস এই দিনটি। কী হবে নারী দিবস পালন করে যদি নারীর স্বাধীনতাই না থাকে। নারীদের সকল ক্ষেত্রে কাজ করার সমান সুযোগ-সুবিধা লাভ, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। সকলের উচিত শুধুমাত্র নারী দিবসে নারীদের সম্মান না করে নারীরা যেন স্বাধীনভাবে স্বাধীন দেশের সুনাগরিক হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে সে ব্যবস্থা করা।

নারীর উন্নয়নেই হোক মুক্তি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিথিলা দেবনাথ ঝিলিক। তিনি বলেন, নারীই শক্তি, নারীই প্রেম আবার সেই নারীই ভালোবাসা। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ হচ্ছে নারী। নারীরা সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছেন। তবুও সমাজের নানা বাধা, নির্যাতনের শিকল অনেক নারীকে ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছে। নারীদের শক্তি ছাড়া পৃথিবী সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। এ সময়ে পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে নারীরাও এগিয়ে যাচ্ছে।

তাই নারীর উন্নয়ন এখন জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারীর মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। নারীর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে কোনরূপ বাঁধা দেওয়া যাবে না। প্রাথমিক হয়ে উচ্চশিক্ষা থেকে চাকুরিক্ষেত্রে সর্বত্রই নারী পুরুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি অসম্মানবোধ, সম্ভ্রমহীন এবং শত্রুভাবাপন্ন প্রতিযোগী মনোভাব দূর করতে হবে। পুরুষের পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রে নারীর সমসুযোগ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করলেই জাতীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব।

সর্বস্তরে নারীরা প্রাধান্য পাক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সিনথিয়া সুমি। তিনি বলেন, অভিধানে ‘উন্নয়নে নারী বা নারী উন্নয়ন’ একটি অতি আধুনিক সংযোজন। এই ধারণা বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকার করে। নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন দুটি বিষয়ই একটি অন্যটির পরিপূরক। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে নারী উন্নয়ন বিষয়টি বিশেষ ভূমিকা রাখে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেই যেখানে নারীদের পদযাত্রায় বারবার হোঁচট খেতে হয়, সেখানে তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশের নারী হিসেবে বাঙালি নারীদের প্রতিটি পদক্ষেপে অনেক বেশি প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। অশিক্ষা, কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা নারী উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়।

অথচ সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা আজ শুধু রান্নাঘরেই সীমাবদ্ধ নেই, নারীরা পৌঁছে গেছেন বিমানের ককপিট থেকে পর্বতশৃঙ্গে। দশভুজা নারী ঘরে-বাইরে নিজেকে আলোকিত করছেন নিজ প্রজ্ঞা আর মেধা দিয়ে। বর্তমানে এমন কোনো পেশা নেই যেখানে নারীর মর্যাদাপূর্ণ উপস্থিতি নেই। দেশে এখন প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দু’জন নারী। জাতীয় সংসদের স্পিকার একজন নারী। বর্তমানে সবক্ষেত্রেই রয়েছে নারীর পদচারণা। নারীর সমাধিকার ও নারীমুক্তির কথা যতই বলা হোক না কেন- উন্নত, অনুন্নত, উন্নয়নশীল সব দেশেই নারীরা কম-বেশি সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার। তাই নারীর নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা, নারীর প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও নারী-পুরুষ উভয়ের অন্তর্ভুক্তিতেই উন্নয়নের দেখা পাওয়া সম্ভব। এভাবেই নারীরা এগিয়ে যাবেন, তাদের ভবিষ্যৎ হবে কণ্টকমুক্ত।

পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফোরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা খানম ঊর্মি বলেন, ‘নারীর স্বাধীনতা’ কথাটি বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় একজন নারীর স্ব-অধীনতা। তবে স্ব-অধীনতা বলতে আমি অবশ্যই যা ইচ্ছে তা করা কিংবা উগ্রতা বুঝাচ্ছি না। একজন নারীরও অধিকার আছে নিজের স্বপ্নের পথে নির্বিঘ্নে এগিয়ে যাওয়ার, পরিবার কিংবা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় নিজের মতামতটুকু প্রকাশ করার এবং নির্দিষ্ট বয়সের পর নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার।

এসকল ক্ষেত্রে অহেতুক অন্যের হস্তক্ষেপ না করাটাই নারীর স্বাধীনতা। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বেশিরভাগ পরিবারেই ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর মধ্যে করা হয় হাজারো বৈষম্য, করা হয়না নারীদের সঠিক মূল্যায়ন যা পরিবারের ছেলে শিশুদের উপর প্রভাব ফেলে এবং সে ছেলেটিও বড় হয়ে একই আচরণ করে। তাই আমি বলবো, সমাজে নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা পূর্ণাঙ্গরুপে প্রতিষ্ঠা করতে প্রথমে প্রয়োজন পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।

অবারিত হোক নারীর স্বাধীনতা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সানজানা আলম নির্জনা। তিনি বলেন, পুরো দেশ আজ উন্নতির পথে। তবুও নারীর অবস্থানটি আজ অস্পষ্ট। বহু বছর ধরে নারীর স্বাধীনতা নিয়ে দফায় দফায় আন্দোলন, নানা কর্মসূচি হয়েই যাচ্ছে। কিন্তু সেটি অধরাই রয়ে গেলো। আজও নারীরা নানা ভাবে অবহেলিত, কোনঠাসা। সেটি মূলত শুরু হয় পরিবার থেকেই। জন্মের পর থেকেই তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয় একজন নারীর জন্য ঘরের বাহির কতটা অনিরাপদ। আর সেই বেড়াজালে আটকে পড়ে থাকে দিনের পর দিন। আর যেই বের হতে গেলো তখনি মানুষরূপী পুরুষ হায়েনাগুলোর দাবায় নিঃশেষ হচ্ছে দিনের পর দিন নারী সত্ত্বাগুলো। সেখানেও আংগুল তোলা হয় নারীর দিকেই।

তবে পুরোপুরি যে পুরুষ সমাজ দায়ী তা কিন্তু নয়। নারীই নারীর জন্য অনেকাংশে দায়ী। আজও নারীরা নিজেদের পুরনো ধ্যান-ধারণা থেকে সরে আসতে পারেনি। নারী পুরুষ সমান মানেই যে নারীকে পুরুষের অবয়ব নিয়ে চলতে হবে তেমনটাও কিন্তু নয়। চাই নারীর নিজস্ব সত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তার মতামতকে সম্মান দেয়া, নারীর অগ্রগতিতে বাধা প্রদান না করা এবং তাদের শক্ত মনোবল গড়ে তোলতে সাহায্য করা। নারী হোক পাখির মতো মুক্ত, নারীর স্বাধীনতা হোক অবারিত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নারীর প্রতিটি মুহূর্ত হোক নিরাপদ

আপডেট টাইম : ০১:০০:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১
হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ অতি পরিচিত এই লাইন দুটি কাজী নজরুল তো কবেই লিখে গেছেন; তবুও পুরুষশাসিত সমাজে নারীরা আজ অবহেলিত, শোষিত।

বর্তমান সমাজে পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে নারীরাও এগিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রে নারীর অবদান ঈর্ষণীয়। তবুও নারীরা আজ ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়, দিন দিন বেড়েই চলছে নারীর প্রতি সহিংসতা।

আজ ৮ই মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীদের ওপর হওয়া বৈষম্য, নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাদের জাগ্রত করাই নারী দিবস পালনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা, ভালোবাসা প্রকাশ করে এই দিনটিকে পালন করা হয়।

নারী দিবস উপলক্ষে নারীর চাওয়া-পাওয়া ও স্বাধীনতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর ভাবনা ও মতামত তুলে ধরেছেন মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।

প্রতিটি মুহূর্ত হোক নিরাপদ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদা টুম্পা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নারীরা আজ নিরাপদ নয়। প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই দেখা যায় ধর্ষণ, খুন, নারীর প্রতি সহিংসতা কতটা বেড়ে গেছে। প্রায়ই শোনা যায় রাস্তাঘাটে এমনকি ক্যাম্পাসেও উত্ত্যক্ত হচ্ছে নারীরা। এমনকি মাঝরাতেও বখাটের দ্বারা হেনস্তা হয়েছে। প্রশাসনের পরিচয়ে নারীর ফোন ছিনতাই হয়েছে। এমনকি উপজাতিদের দ্বারাও হেনস্তা হয়েছে নারীরা। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই বখাটে ছেলেরা নারীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এসব কুকর্ম করে যাচ্ছে।

সবকিছু দেখেও আমাদের চুপ করে থাকাটা অন্যায়কে প্রশয় দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের মনুষ্যত্ব ও বিবেকের জোরে নারীর প্রতি এমন অন্যায়কে প্রতিহত করতে হবে। কঠোর আইন প্রণয়ন করে প্রতিটি মূহুর্তে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে যেনো নারী হয় স্বাধীন পায় চলার পূর্ণ স্বাধীনতা। নারীকে নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার, সমাজ, প্রশাসন ও জনসমাজ সকলকে একযোগে সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।

পূর্ণতা পাক নারীর অধিকার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোমেনা আক্তার। তিনি বলেন, নারী স্বাধীনতার মূল বিষয়গুলো শুধু গ্রন্থেই বন্দী হয়ে থাকার জন্য নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার প্রতিফলন জরুরি। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আমরা গলা উঁচু করে নির্দ্বিধায় নারী স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু আমরা আসলে নারী স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বুঝি না। নারী পরাধীনহেতু সমাজ ও পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করা হলেও নিজেদের দূর্বলতাও কম দায়ী নয়। নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে তাকে অবশ্যই সংযম হতে হবে। আমাদের সমাজকেও এ ব্যাপারে যথেষ্ঠ সচেতন হতে হবে।

নারীকে নারীর মতো করেই বাঁচতে দেওয়া উচিত। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, নারীর প্রথম পরিচয় হচ্ছে সে মানুষ। তাই নারী জ্ঞান অর্জন, আত্মসংযম, শ্রমনিষ্ঠা, সেবা, দৃঢ়তা, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে মানসিক দাসত্বের কঠিন শৃঙ্খল ভেঙে এগিয়ে চলতে হবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নির্যাতিত সকলের আত্মসম্মানবোধের চেতনা জাগ্রত হোক, মানুষ হিসেবে সবাই সম্মানিত হোক, সকলের অধিকার পূর্ণতা পাক।

প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, মানব সভ্যতার উষালগ্ন থেকে নারী-পুরুষ অসমতা বিদ্যমান যা আজ অবধিও আছে। এই অসমতার জন্য একমাত্র দায়ী হচ্ছে সমাজ। সচরাচর দেখা যায়, গ্রাম্য এলাকায় সাধারণত মহিলারাই কেবল বাড়ির যাবতীয় কাজসহ সন্তান লালন-পালন করে থাকেন আর পুরুষেরা ঘরের বাইরের কাজগুলো করে থাকেন। কিন্তু এই করোনার দীর্ঘ ছুটিতে একটু উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে গ্রামীণ এলাকায়। তন্মধ্যে পুরুষ শিক্ষকেরা তাদের বাড়ির মহিলাদের কাজে অনেক রকম সহযোগিতা করাসহ সন্তানের লালনপালনেও তারা বেশ সচেতন হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ দিনগুলোর থেকে মহিলাদের কাজের চাপ বর্তমানে বহুগুণে বেড়েছে।

প্রতিনিয়ত তাদের আগের থেকে আরও বেশি স্বাস্থ্য সম্মতভাবে জীবনযাপন নিশ্চিত করতে হচ্ছে এবং এটার সাথে মানসিক বিপর্যয় তো আছেই। এবারের নারী দিবসে আমাদের প্রত্যাশা হোক এটাই যেন শুধুমাত্র সংকটময় মুহূর্তেই নয়, সকল পেশার পুরুষেরা তাদের দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন করে নারীদের পাশে সব সময় যেন এমনি করেই থাকেন।

স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ পাক

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রওশন জাহান সুমাইয়া জানান, দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি যে, আমরা নারীরা স্বাধীন দেশ এর পরাধীন নাগরিক। সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি খুললেই দেখা যায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণের মতো হৃদয়বিতারক সংবাদ। যেই নারী তাদের জন্ম দেয় সেই নারী জাতিকেই অসম্মান করতে তারা বিন্দু মাত্র দ্বিধাবোধ করে না। উল্টা আরো নারীর চলাফেরা, পোশাকে তারা সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে তুলে ধরে। আফসোস যে নারী জতি এত কষ্ট করে জন্ম দেন একটি ফুটফুটে বাচ্চা, আলো দেখান এই সুন্দর পৃথিবীর আজ তারাই নিরাপদভাবে চলাফেরা করতে পারে না। কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমন কি বাসায় ও নিরাপদ নয় নারীরা।

আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র আছে অথচ নারীর স্বাধীনতা নেই, শুধুমাত্র নামেই পালিত হয় নারী দিবস এই দিনটি। কী হবে নারী দিবস পালন করে যদি নারীর স্বাধীনতাই না থাকে। নারীদের সকল ক্ষেত্রে কাজ করার সমান সুযোগ-সুবিধা লাভ, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। সকলের উচিত শুধুমাত্র নারী দিবসে নারীদের সম্মান না করে নারীরা যেন স্বাধীনভাবে স্বাধীন দেশের সুনাগরিক হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে সে ব্যবস্থা করা।

নারীর উন্নয়নেই হোক মুক্তি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিথিলা দেবনাথ ঝিলিক। তিনি বলেন, নারীই শক্তি, নারীই প্রেম আবার সেই নারীই ভালোবাসা। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ হচ্ছে নারী। নারীরা সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছেন। তবুও সমাজের নানা বাধা, নির্যাতনের শিকল অনেক নারীকে ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছে। নারীদের শক্তি ছাড়া পৃথিবী সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। এ সময়ে পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে নারীরাও এগিয়ে যাচ্ছে।

তাই নারীর উন্নয়ন এখন জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারীর মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। নারীর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে কোনরূপ বাঁধা দেওয়া যাবে না। প্রাথমিক হয়ে উচ্চশিক্ষা থেকে চাকুরিক্ষেত্রে সর্বত্রই নারী পুরুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি অসম্মানবোধ, সম্ভ্রমহীন এবং শত্রুভাবাপন্ন প্রতিযোগী মনোভাব দূর করতে হবে। পুরুষের পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রে নারীর সমসুযোগ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করলেই জাতীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব।

সর্বস্তরে নারীরা প্রাধান্য পাক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সিনথিয়া সুমি। তিনি বলেন, অভিধানে ‘উন্নয়নে নারী বা নারী উন্নয়ন’ একটি অতি আধুনিক সংযোজন। এই ধারণা বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকার করে। নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন দুটি বিষয়ই একটি অন্যটির পরিপূরক। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে নারী উন্নয়ন বিষয়টি বিশেষ ভূমিকা রাখে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেই যেখানে নারীদের পদযাত্রায় বারবার হোঁচট খেতে হয়, সেখানে তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশের নারী হিসেবে বাঙালি নারীদের প্রতিটি পদক্ষেপে অনেক বেশি প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। অশিক্ষা, কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা নারী উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়।

অথচ সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা আজ শুধু রান্নাঘরেই সীমাবদ্ধ নেই, নারীরা পৌঁছে গেছেন বিমানের ককপিট থেকে পর্বতশৃঙ্গে। দশভুজা নারী ঘরে-বাইরে নিজেকে আলোকিত করছেন নিজ প্রজ্ঞা আর মেধা দিয়ে। বর্তমানে এমন কোনো পেশা নেই যেখানে নারীর মর্যাদাপূর্ণ উপস্থিতি নেই। দেশে এখন প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দু’জন নারী। জাতীয় সংসদের স্পিকার একজন নারী। বর্তমানে সবক্ষেত্রেই রয়েছে নারীর পদচারণা। নারীর সমাধিকার ও নারীমুক্তির কথা যতই বলা হোক না কেন- উন্নত, অনুন্নত, উন্নয়নশীল সব দেশেই নারীরা কম-বেশি সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার। তাই নারীর নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা, নারীর প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও নারী-পুরুষ উভয়ের অন্তর্ভুক্তিতেই উন্নয়নের দেখা পাওয়া সম্ভব। এভাবেই নারীরা এগিয়ে যাবেন, তাদের ভবিষ্যৎ হবে কণ্টকমুক্ত।

পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফোরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা খানম ঊর্মি বলেন, ‘নারীর স্বাধীনতা’ কথাটি বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় একজন নারীর স্ব-অধীনতা। তবে স্ব-অধীনতা বলতে আমি অবশ্যই যা ইচ্ছে তা করা কিংবা উগ্রতা বুঝাচ্ছি না। একজন নারীরও অধিকার আছে নিজের স্বপ্নের পথে নির্বিঘ্নে এগিয়ে যাওয়ার, পরিবার কিংবা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় নিজের মতামতটুকু প্রকাশ করার এবং নির্দিষ্ট বয়সের পর নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার।

এসকল ক্ষেত্রে অহেতুক অন্যের হস্তক্ষেপ না করাটাই নারীর স্বাধীনতা। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বেশিরভাগ পরিবারেই ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর মধ্যে করা হয় হাজারো বৈষম্য, করা হয়না নারীদের সঠিক মূল্যায়ন যা পরিবারের ছেলে শিশুদের উপর প্রভাব ফেলে এবং সে ছেলেটিও বড় হয়ে একই আচরণ করে। তাই আমি বলবো, সমাজে নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা পূর্ণাঙ্গরুপে প্রতিষ্ঠা করতে প্রথমে প্রয়োজন পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।

অবারিত হোক নারীর স্বাধীনতা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সানজানা আলম নির্জনা। তিনি বলেন, পুরো দেশ আজ উন্নতির পথে। তবুও নারীর অবস্থানটি আজ অস্পষ্ট। বহু বছর ধরে নারীর স্বাধীনতা নিয়ে দফায় দফায় আন্দোলন, নানা কর্মসূচি হয়েই যাচ্ছে। কিন্তু সেটি অধরাই রয়ে গেলো। আজও নারীরা নানা ভাবে অবহেলিত, কোনঠাসা। সেটি মূলত শুরু হয় পরিবার থেকেই। জন্মের পর থেকেই তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয় একজন নারীর জন্য ঘরের বাহির কতটা অনিরাপদ। আর সেই বেড়াজালে আটকে পড়ে থাকে দিনের পর দিন। আর যেই বের হতে গেলো তখনি মানুষরূপী পুরুষ হায়েনাগুলোর দাবায় নিঃশেষ হচ্ছে দিনের পর দিন নারী সত্ত্বাগুলো। সেখানেও আংগুল তোলা হয় নারীর দিকেই।

তবে পুরোপুরি যে পুরুষ সমাজ দায়ী তা কিন্তু নয়। নারীই নারীর জন্য অনেকাংশে দায়ী। আজও নারীরা নিজেদের পুরনো ধ্যান-ধারণা থেকে সরে আসতে পারেনি। নারী পুরুষ সমান মানেই যে নারীকে পুরুষের অবয়ব নিয়ে চলতে হবে তেমনটাও কিন্তু নয়। চাই নারীর নিজস্ব সত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তার মতামতকে সম্মান দেয়া, নারীর অগ্রগতিতে বাধা প্রদান না করা এবং তাদের শক্ত মনোবল গড়ে তোলতে সাহায্য করা। নারী হোক পাখির মতো মুক্ত, নারীর স্বাধীনতা হোক অবারিত।