হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলছে সর্বাত্মক লকডাউন, চলবে ১ এপ্রিল পর্যন্ত। শিল্প-কারখানা খোলা থাকলেও সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রয়েছে। চলছে না গণপরিহনও। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে জনসাধারণের চলাচলে। ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে বের হতে হচ্ছে বাইরে। বের হলেই পড়তে হচ্ছে পুলিশি চেকপোস্টে। পাস দেখাতে ব্যর্থ হলে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে লকডাউনে ব্যাংক বন্ধের ঘোষণা দেয়া হলেও সর্ব মহলের সমালোচনায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়েছে। শিল্প ও ব্যবসার কথা মাথায় রেখে সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা রাখা হয়েছে। তবে ব্যাংক খোলা থাকলেও সেখানে গ্রাহকের উপস্থিতি নেই। একই অবস্থা দেখা গেছে ব্যাংকের এটিএম বুথগুলোতেও। মোবাইল ভিত্তিক লেনদেন ছোট দোকানগুলোর অধিকাংশ বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংক, এটিএম বুথ এবং মোবাইল ভিত্তিক লেনদেনের দোকান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সর্বাত্মক লকডাউনে ব্যাংক বন্ধ থাকবে এমন শঙ্কায় আগেই টাকা উত্তোলন করেছেন গ্রাহকরা। তাছাড়া কোভিড-১৯ ভীতি ও মুভমেন্ট পাসের ঝামেলা এড়াতে সাধারণ গ্রাহক ব্যাংকমুখী হচ্ছেন না।
এটিএম বুথে আসা মেহেদি হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘সবারই মৃত্যুর ভয় আছে তাই কেউ বের হচ্ছেন না। আমার বাসার কাছে এটিএম বুথ না থাকলে আমিও আজ টাকার জন্য বের হতাম না। গতকালের মৃত্যুর খবর শুনে আর ব্যাংকমুখী হওয়ার চিন্তা আপাতত নেই।’
অপরদিকে বিকাশ, রকেট ও নগদের দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে। মুদি ও কনফেকশনারির দোকানগুলোতেই মূলত এসব লেনদেন হতো।
এ নিয়ে মুদি দোকানি ফকিরাপুল এলাকার এনামুল জানান, পুলিশ তাড়া করছে অন্যসব দোকানগুলোতে। তাই সবারই দোকান বন্ধ আছে। দু’একটা অর্ধখোলা (অর্ধেক সাটার নামানো) দোকানে বেচা বিক্রির জন্য বিকাশ-নগদ খোলা। তবে ক্রেতা কম আছে এজন্য অনেকে এ সময় খুলছেন না।
সোনালি ব্যাংক মতিঝিল শাখার ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘লকডাউনের সিদ্ধান্ত গত সপ্তাহে হয়, সে হিসেবে যে যার মতো লেনদেন করেন। যাদের খুব ইমার্জেন্সি তারা আসবে তবে অন্যদিনের তুলনায় খুবই কম। অন্যদিনের মতো সব সেবা দেয়া হচ্ছে আজ পূর্ণ জনবল আছে সে তুলনায় গ্রাহক নেই।’
ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জানান, আজ গ্রাহক কম আসার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো-লকডাউনে ব্যাংক বন্ধ এমন খবরে তারা আগেই টাকা উত্তোলন করেছেন, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করেছেন। তাছাড়া রাস্তায় বের হতে মুভমেন্ট পাসের প্রয়োজন হচ্ছে, রাস্তায় চেকপোস্ট বসেছে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ আক্রান্তের হার গতকাল রেকর্ড হয়েছে। সব মিলিয়ে রোজায় বাড়তি ঝামেলা এড়িয়ে চলার জন্য হয়তো গ্রাহকের উপস্থিতি নেই।
এর আগে লকডাউনে বিধিনিষেধের মধ্যে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। নির্দেশনার আলোকে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারি করা সার্কুলার বলা হয়, ‘সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। তবে অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যাবলী সম্পন্ন করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত।’