এক-এগারোর কুশীলবদের বিচার দাবি করেছে বিএনপি। বুধবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ দাবি করেন। তারা প্রশ্ন তোলেন— এক-এগারোর সময় গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহ করা প্রতিবেদন প্রকাশ করায় মাহ্ফুজ আনামের বিচারে মামলা হতে পারলে কুশীলবদের কেন বিচার হবে না।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম নামে একটি সংগঠন ‘ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাস্তবতা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘৫২-তে বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছিল, আমরা কোন ভাষায় কথা বলব। আজ প্রশ্ন হয়ে উঠেছে, আমরা আদৌ কথা বলব কি না?’
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এক-এগারোর সময় লেখালেখি করে কেউ যদি অন্যায় করে থাকেন, তাহলে তাঁর বিচার হতে পারে। কিন্তু যারা এক-এগারোর কুশীলব, যারা বাংলাদেশের সংবিধান অমান্য করে দুইটি বছর অসাংবিধানিকভাবে দেশ পরিচালনা করল, দেশের সর্বক্ষেত্রে বিপর্যয় ডেকে আনল, সেই কুশীলবদের কেন বিচার হবে না? যারা দুই নেত্রীকে মাইনাস করতে চেয়েছিল, অসংখ্য রাজনীতিককে অন্যায়ভাবে কারাগারে নিক্ষিপ্ত করে ভাবমূর্তি নষ্ট করেছিল, প্রথমে তাদের বিচার করতে হবে।
খন্দকার মোশাররফ আরো বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের কিছু নেতা সংসদে জরুরি সরকার সম্পর্কে কথা বলা শুরু করেছিলেন। পত্র-পত্রিকায় এসেছে, সরকার প্রধানের নির্দেশে সেদিন কথা বলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মাহ্ফুজ আনামের বিচার চাচ্ছেন। বিচারের জন্য শত শত মামলা হচ্ছে। তাহলে এক-এগারোর ফসল হিসেবে আপনারা কীভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন? শেখ হাসিনা কীভাবে নির্দেশনা দিয়ে জরুরি আইনের সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা বন্ধ করে দিলেন? কীভাবে এক-এগারোর হোতা একজন জেনারেলকে রাষ্ট্রদূত করা হয়। এসব তো বিবেচনার বিষয়।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, মাহ্ফুজ আনাম যাদের সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন, তাঁদের বিচারের কথা কেন আসে না? কেন তাঁদের বিচার হবে না? তিনি বলেন, মাহ্ফুজ আনাম তো বার্তাবাহক ছিলেন। তাঁর লেখালেখির জন্য কিছু হয়নি। আজকের গণমাধ্যমকে ভয়ভীতির মধ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ভয়ভীতির মাধ্যমে গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকার অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছু না।
মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি শামা ওবায়েদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত প্রমুখ।
মানবকণ্ঠ