ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রামের তুলনায় শহরে অটিস্টিক শিশু বাড়ছে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস আজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ এপ্রিল ২০২১
  • ১২৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রামের চেয়ে শহরে অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গ্রামে প্রতি ১০ হাজারে ১৪ জন এবং শহর এলাকায় প্রতি ১০ হাজারে ২৫ শিশু অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। মেয়ে শিশুর চাইতে ছেলে শিশুর মধ্যে অটিজমে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আড়াই গুণ বেশি। এছাড়া দেশে ১৬ থেকে ৩০ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে অটিজম বিস্তারের হার প্রতি ১০ হাজারে ১৭ জন। সম্প্রতি ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরো  ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা)-এর এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অটিজম সোসাইটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ১ শতাংশ অটিজম আক্রান্ত। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মতে, দেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মধ্যে ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। তবে ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে প্রায় দেড় লাখের মতো অটিজম আক্রান্ত মানুষ রয়েছে। প্রতি বছর তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরো প্রায় ১ হাজার ৫০০ শিশু।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ শুক্রবার দেশে পালিত হবে ১৪তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে—‘আলোকিত হউক উদারতায়’। দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তবে কারোনা সংক্রমণের কারণে এসব কর্মসূচির বেশির ভাগ অনলাইনে পরিচালিত হবে বলে জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অটিজম কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। অটিজম মূলত মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের প্রতিবন্ধকতাজনিত রোগ। এটি মানুষের হরমোনজনিত সমস্যার বহিঃপ্রকাশ। এটির প্রতীকী রং নীল। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের প্রত্যেকের বৈশিষ্ট্য যেমন আলাদা; তেমনি তাদের প্রতিভাও ভিন্ন। কেউ হয়তো ভালো ছবি আঁকতে পারছে, কেউ বা নিজের কাজগুলো গুছিয়ে করতে পারে। এসবই অটিজমে আক্রান্ত শিশুর সাফল্য বলে খুশি থাকতে হবে। তারা আরো বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর জন্য কেবল মাকে নয়, বাবাকেও কোয়ালিটি সময় দিতে হবে। জিমনেসিয়াম, সুইমিং পুলে সপ্তাহে অন্তত একদিন বিশেষ শিশুদের জন্য সুযোগ রাখা প্রয়োজন। অভিভাবকদের কাউন্সিলিং দরকার। কারণ এই শিশুদের অভিভাবকরা ভালো থাকলে তাদের সন্তানটিও ভালো থাকবে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি আগামী ৫ এপ্রিল চিকিত্সক, সাইকোলজিস্ট এবং থেরাপিস্টদের নিয়ে এক ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে ইপনা। সেই সঙ্গে আগামী ৮ এপ্রিল অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকদের নিয়ে অনলাইনে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে আজ নীল বাতি প্রজ্বালন করা হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক অনুষদের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিন ও ইপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহীন আখতার বলেন, শিশুদের অটিজম শনাক্তকরণ থেকে সাইকোলজিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট, থেরাপি এবং ম্যানেজমেন্ট সকল সেবাই প্রদান করা হয় ইপনাতে। বিশেষ শিশুদের অভিভাবকদের জন্য রয়েছে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। ৩ থেকে ১৪ বছর বয়সি এসব শিশুদের জন্য বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করে লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রা সহজ করার উপায়গুলো শেখানো হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এই অনলাইন ক্লাস, যা অব্যাহত রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গ্রামের তুলনায় শহরে অটিস্টিক শিশু বাড়ছে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস আজ

আপডেট টাইম : ০৯:৩৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ এপ্রিল ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রামের চেয়ে শহরে অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গ্রামে প্রতি ১০ হাজারে ১৪ জন এবং শহর এলাকায় প্রতি ১০ হাজারে ২৫ শিশু অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। মেয়ে শিশুর চাইতে ছেলে শিশুর মধ্যে অটিজমে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আড়াই গুণ বেশি। এছাড়া দেশে ১৬ থেকে ৩০ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে অটিজম বিস্তারের হার প্রতি ১০ হাজারে ১৭ জন। সম্প্রতি ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরো  ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা)-এর এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অটিজম সোসাইটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ১ শতাংশ অটিজম আক্রান্ত। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মতে, দেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মধ্যে ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। তবে ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে প্রায় দেড় লাখের মতো অটিজম আক্রান্ত মানুষ রয়েছে। প্রতি বছর তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরো প্রায় ১ হাজার ৫০০ শিশু।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ শুক্রবার দেশে পালিত হবে ১৪তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে—‘আলোকিত হউক উদারতায়’। দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তবে কারোনা সংক্রমণের কারণে এসব কর্মসূচির বেশির ভাগ অনলাইনে পরিচালিত হবে বলে জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অটিজম কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। অটিজম মূলত মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের প্রতিবন্ধকতাজনিত রোগ। এটি মানুষের হরমোনজনিত সমস্যার বহিঃপ্রকাশ। এটির প্রতীকী রং নীল। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের প্রত্যেকের বৈশিষ্ট্য যেমন আলাদা; তেমনি তাদের প্রতিভাও ভিন্ন। কেউ হয়তো ভালো ছবি আঁকতে পারছে, কেউ বা নিজের কাজগুলো গুছিয়ে করতে পারে। এসবই অটিজমে আক্রান্ত শিশুর সাফল্য বলে খুশি থাকতে হবে। তারা আরো বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর জন্য কেবল মাকে নয়, বাবাকেও কোয়ালিটি সময় দিতে হবে। জিমনেসিয়াম, সুইমিং পুলে সপ্তাহে অন্তত একদিন বিশেষ শিশুদের জন্য সুযোগ রাখা প্রয়োজন। অভিভাবকদের কাউন্সিলিং দরকার। কারণ এই শিশুদের অভিভাবকরা ভালো থাকলে তাদের সন্তানটিও ভালো থাকবে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি আগামী ৫ এপ্রিল চিকিত্সক, সাইকোলজিস্ট এবং থেরাপিস্টদের নিয়ে এক ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে ইপনা। সেই সঙ্গে আগামী ৮ এপ্রিল অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকদের নিয়ে অনলাইনে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে আজ নীল বাতি প্রজ্বালন করা হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক অনুষদের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিন ও ইপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহীন আখতার বলেন, শিশুদের অটিজম শনাক্তকরণ থেকে সাইকোলজিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট, থেরাপি এবং ম্যানেজমেন্ট সকল সেবাই প্রদান করা হয় ইপনাতে। বিশেষ শিশুদের অভিভাবকদের জন্য রয়েছে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। ৩ থেকে ১৪ বছর বয়সি এসব শিশুদের জন্য বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করে লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রা সহজ করার উপায়গুলো শেখানো হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এই অনলাইন ক্লাস, যা অব্যাহত রয়েছে।