হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জ জেলার লাখাইয়ে বান্ধবীর বিয়েতে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বাগেরহাটের এক গার্মেন্টস কর্মী। শুধু তাই নয়, সিলিংফ্যানে ঝুঁলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাঁজানোর চেষ্টা করে ধর্ষণকারীরা। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানায়, বাগেরহাটের স্মরণখোলা উপজেলার কোন্তাকাটা গ্রামের ১৯ বছর বয়সী এক যুবতী ঢাকার একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। চাকুরীর সুবাধে পরিচয় হয় লাখাই উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দিলুর মেয়ে কোহিনুর আক্তারের সাথে। সম্প্রতি কোহিনুরের বিয়ে ঠিক করার সময় তার বাড়িতে বেড়াতে আসে ওই যুবতী। এ সময় কোহিনুরের আত্মীয় ও একই গ্রামের মনা মিয়ার ছেলে শিপন মিয়ার সাথে পরিচয় হয় তার। একপর্যায়ে তাদের মাঝে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক।
গত ১২ মার্চ ছিল কোহিনুরের বিয়ে। বিয়েতে অংশ নেয়ার জন্য ওইদিন ঢাকা থেকে আসে ওই যুবতী। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার সাথে দেখা করে শিপন। পূর্ব থেকে সম্পর্ক থাকায় তাকে পার্শ¦বর্তী আশরাফ উদ্দিনের ঘরে নিয়ে যায় সে। সেখানে শিপন মিয়া ও ৩ সহযোগী মিলে ওই যুবতীকে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার জন্য সবাই মিলে ওই ঘরের সিলিংয়ে ঝুঁলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় ধর্ষণকারীরা।
বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাৎক্ষনিক ওই বাড়ীর লোকজন ঘরের দরজা খুলে তাকে উদ্ধার করেন। কিন্তু তারা ধর্ষণের বিষয়টি লুকিয়ে রেখে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে গিয়ে অসুস্থ্য হয়েছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এভাবে কেটে যায় ৩ দিন।
গত ১৫ মার্চ ওই যুবতীকে তার বড় বোনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বোনকে পেয়ে সাহস ফিরে পায় এবং ঘটনার সবকিছু খুলে বলে সে। পরে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার ভিকটিম ও তার বোন লাখাই থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে ওইদিন রাতেই লাখাই থানা পুলিশ নোয়াগাঁও গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে আশরাফ উদ্দিনের স্ত্রী আফিয়া বেগম, মকবুল হোসেনের পুত্র দেলোয়ার হোসেন দিলু ও দেলোয়ার হোসেন দিলুর স্ত্রী রাবেয়া খাতুনকে গ্রেফতার করে।
আফিয়া বেগম ও রাবেয়া খাতুনকে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা বেগম এর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘটনার বিষয়টি স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছ তারা। পরে একই আদালতে ২২ ধারায় ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
লাখাই থানার ওসি তদন্ত মহিউদ্দিন বলেন, গর্মেন্টস কর্মীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে শিপন মিয়া ও তার তিন সহযোগি । তারা মিলে তাকে ধর্ষণ করে ঘরের সিলিংয়ে ঝুঁলিয়ে রাখে। তবে ভিকটিম এর মৃত্যু না হওয়ায় প্রকৃত রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। যারা এঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাকরে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মাঝে ২জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ধামাচাপা দেয়ার কথা স্বীকার করেছে। আমরা মূল আসামিদেরকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।