ঢাকা ০৫:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুক জ্বালাপোড়া কমাবে ঘরোয়া কৌশল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২৩:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ ২০২১
  • ১৯৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বুক জ্বালাপোড়া করা একটি সাধারণ একটি শারীরিক সমস্যা। দেশের অধিকাংশ মানুষই বিষয়টি অবহেলা করেন। অথচ এর থেকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি পর্যন্ত রয়েছে। মূলত পাকস্থলীর ভেতরকার অম্লরস কোনো কারণে পাকস্থলী থেকে ওপরের দিকে উঠে আসতে থাকলে বুকে জ্বালাপোড়া ও অস্বস্তিবোধ হয়।

সাধারণত তেল, প্রচুর মশলা, ঝাল ও চর্বি জাতীয় খাবার খেলে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। তাছাড়া একগাদা খাবার খুব তাড়াতাড়ি গোগ্রাসে গিললে, খেয়েই চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি দেখা যায়। মূলত এসব কিছুর কারণে অম্লরস যদি পাকস্থলী থেকে ওপরের দিকে উঠে আসে তখনই বুক জ্বালা করে।

বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা সমাধানে পরামর্শ দিয়েছেন হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সজল আশফাক কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। এসব ঘরোয়া কৌশল মানলে বুক জ্বালাপোড়া অনেকাংশেই কমে যাবে।

বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা সমাধানে কী করবেন

>> রাতে শুতে যাবার সময় কোমরের বাঁধন শিথিল করে শোবেন। নইলে পেট জ্বালাপোড়া সমস্যা হবে।

>> খেয়েই যারা শুয়ে পড়েন তারা একটু সতর্ক হয়ে শোবেন। অর্থাৎ শোবার সময় মাথার দিকটা পায়ের দিকের তুলনায় অন্তত চার থেকে ছয় ইঞ্চি উঁচু করে শোবেন। এটা মাথার নিচে অতিরিক্ত বালিশ দিয়ে অথবা মাথার দিকের খাটের পায়ার নিচে ইট বা কাঠের টুকরা ঢুকিয়ে করা যায়।

>> রাতের খাবার শোবার অন্তত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আগেই খেয়ে ফেলুন। কারণ খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়লে, ভরপেট এবং গ্র্যাভিটি দুটো মিলে অম্লরসকে খাদ্যনালি দিয়ে ঠেলে উপরে তুলবে। এতে বুক জ্বালা করবে।

>> যতটা সম্ভব চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন, কারণ মানসিক চাপে পাককস্থলীতে অম্লরস বাড়ে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো নানা কৌশল অবলম্বন করে মনকে শিথিল রাখুন।

>> কোনোকিছু টেনে তুলবার দরকার হলে অবশ্যই হাঁটু ভাঁজ করে তুলুন। পেট ভাঁজ করে তুলবেন না। কারণ এভাবে পেটে চাপ পড়ার কারণে অম্লরস ওপরের দিকে উঠে যাবার সুযোগ থাকে।

>> প্রয়োজন হলে খাবার পর তিন চা চামচ করে অ্যান্টাসিড জাতীয় সিরাপ যেমন- ফ্ল্যাটামিল ডি এস/ এন্টাসিড প্লাস ইত্যাদি খেতে পারেন। এ ছাড়া অনেক সময় রেনিটিডিন অথবা ফেমোটিডিন জাতীয় অন্যান্য ওষুধ দেয়া যেতে পারে। তবে এগুলো শুরু করার আগে চিকিৎসককে দেখিয়ে নেয়াই ভালো।

বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা সমাধানে কী করবেন না

>> চর্বিওয়ালা মাংস, দুগ্ধজাত দ্রব্য খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আর যদি খেতেই হয়, তবে পরিমাণে কম খান। কেননা এ জাতীয় খাবার পাকস্থলীতে বেশিক্ষণ অবস্থান করে। এতে বাড়তি অম্লরস তৈরি হয়।

>> ঝালমরিচ, আগ্নেয় মশলা যাদের ক্ষেত্রে বুক জ্বলুনি ঘটায় তারা এগুলো খাবেন না।

>> ধূমপানে বিষপান। ধূমপানে শুধু বুক জ্বালাপোড়া নয়, সর্বোচ্চ পরিণতি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তাই ধূমপান নিজেও করবেন না, অন্যকেও করতে দেবেন না।

>> ক্যাফিন সমৃদ্ধ পানীয় যেমন- চা, কোলা এগুলো খাদ্যনালির ক্ষতি করে, তাই এসব খাবার এড়িয়ে চলুন।

>> চকলেটও বেশ ক্যাফিন আছে, তাই এটি খাওয়াও বাদ দিন।

>> অম্লখাবার যেমন- কমলা, লেবু এগুলোতে যে পরিমাণ অম্লরস আছে তা পাকস্থলীর তুলনায় কিছুই না, তাই ভয় পেয়ে এগুলো খাওয়া বাদ দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বুক জ্বালাপোড়া কমাবে ঘরোয়া কৌশল

আপডেট টাইম : ০৮:২৩:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বুক জ্বালাপোড়া করা একটি সাধারণ একটি শারীরিক সমস্যা। দেশের অধিকাংশ মানুষই বিষয়টি অবহেলা করেন। অথচ এর থেকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি পর্যন্ত রয়েছে। মূলত পাকস্থলীর ভেতরকার অম্লরস কোনো কারণে পাকস্থলী থেকে ওপরের দিকে উঠে আসতে থাকলে বুকে জ্বালাপোড়া ও অস্বস্তিবোধ হয়।

সাধারণত তেল, প্রচুর মশলা, ঝাল ও চর্বি জাতীয় খাবার খেলে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। তাছাড়া একগাদা খাবার খুব তাড়াতাড়ি গোগ্রাসে গিললে, খেয়েই চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি দেখা যায়। মূলত এসব কিছুর কারণে অম্লরস যদি পাকস্থলী থেকে ওপরের দিকে উঠে আসে তখনই বুক জ্বালা করে।

বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা সমাধানে পরামর্শ দিয়েছেন হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সজল আশফাক কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। এসব ঘরোয়া কৌশল মানলে বুক জ্বালাপোড়া অনেকাংশেই কমে যাবে।

বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা সমাধানে কী করবেন

>> রাতে শুতে যাবার সময় কোমরের বাঁধন শিথিল করে শোবেন। নইলে পেট জ্বালাপোড়া সমস্যা হবে।

>> খেয়েই যারা শুয়ে পড়েন তারা একটু সতর্ক হয়ে শোবেন। অর্থাৎ শোবার সময় মাথার দিকটা পায়ের দিকের তুলনায় অন্তত চার থেকে ছয় ইঞ্চি উঁচু করে শোবেন। এটা মাথার নিচে অতিরিক্ত বালিশ দিয়ে অথবা মাথার দিকের খাটের পায়ার নিচে ইট বা কাঠের টুকরা ঢুকিয়ে করা যায়।

>> রাতের খাবার শোবার অন্তত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আগেই খেয়ে ফেলুন। কারণ খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়লে, ভরপেট এবং গ্র্যাভিটি দুটো মিলে অম্লরসকে খাদ্যনালি দিয়ে ঠেলে উপরে তুলবে। এতে বুক জ্বালা করবে।

>> যতটা সম্ভব চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন, কারণ মানসিক চাপে পাককস্থলীতে অম্লরস বাড়ে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো নানা কৌশল অবলম্বন করে মনকে শিথিল রাখুন।

>> কোনোকিছু টেনে তুলবার দরকার হলে অবশ্যই হাঁটু ভাঁজ করে তুলুন। পেট ভাঁজ করে তুলবেন না। কারণ এভাবে পেটে চাপ পড়ার কারণে অম্লরস ওপরের দিকে উঠে যাবার সুযোগ থাকে।

>> প্রয়োজন হলে খাবার পর তিন চা চামচ করে অ্যান্টাসিড জাতীয় সিরাপ যেমন- ফ্ল্যাটামিল ডি এস/ এন্টাসিড প্লাস ইত্যাদি খেতে পারেন। এ ছাড়া অনেক সময় রেনিটিডিন অথবা ফেমোটিডিন জাতীয় অন্যান্য ওষুধ দেয়া যেতে পারে। তবে এগুলো শুরু করার আগে চিকিৎসককে দেখিয়ে নেয়াই ভালো।

বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা সমাধানে কী করবেন না

>> চর্বিওয়ালা মাংস, দুগ্ধজাত দ্রব্য খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আর যদি খেতেই হয়, তবে পরিমাণে কম খান। কেননা এ জাতীয় খাবার পাকস্থলীতে বেশিক্ষণ অবস্থান করে। এতে বাড়তি অম্লরস তৈরি হয়।

>> ঝালমরিচ, আগ্নেয় মশলা যাদের ক্ষেত্রে বুক জ্বলুনি ঘটায় তারা এগুলো খাবেন না।

>> ধূমপানে বিষপান। ধূমপানে শুধু বুক জ্বালাপোড়া নয়, সর্বোচ্চ পরিণতি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তাই ধূমপান নিজেও করবেন না, অন্যকেও করতে দেবেন না।

>> ক্যাফিন সমৃদ্ধ পানীয় যেমন- চা, কোলা এগুলো খাদ্যনালির ক্ষতি করে, তাই এসব খাবার এড়িয়ে চলুন।

>> চকলেটও বেশ ক্যাফিন আছে, তাই এটি খাওয়াও বাদ দিন।

>> অম্লখাবার যেমন- কমলা, লেবু এগুলোতে যে পরিমাণ অম্লরস আছে তা পাকস্থলীর তুলনায় কিছুই না, তাই ভয় পেয়ে এগুলো খাওয়া বাদ দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।