ঢাকা ০৭:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিলুপ্তির ১৭২ বছর পর আবার দেখা মিললো এই পাখিটির

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মার্চ ২০২১
  • ১৮২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক-দু বছর নয়, আজ থেকে ১৭২ বছর আগেই এই পাখিটা পৃথিবীর বুক থেকে বেমালুম হারিয়ে গেছে। ইন্দোনেশিয়ার পুরনো বাসিন্দারা হয়তো দাদু-ঠাকুমার মুখে গল্প শুনেছে, চাক্ষুষ করেনি। ছাতারে প্রজাতির সেই পাখিটারই পোশাকি নাম ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলার। ১৯ শতকের গোড়ায় ইন্দোনেশিয়া তখন ডাচ উপনিবেশের অংশ। সমুদ্র উপকূলের সবুজ দ্বীপগুলোর বুকে সেসময় ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়াত খয়েরি ডানার একধরনের ছোট ছোট পাখিরা।

ব্যাবলার, মানে আমাদের খুব চেনা ছাতারে পাখির জাতভাই এই পাখিগুলোর স্বভাব ছিল একটু অন্যরকম। সমুদ্রের আশেপাশের ক্রান্তীয় আর্দ্র অরণ্য অঞ্চলেই বেশিরভাগ দেখা মিলত এই পাখির। তারপর আচমকাই একদিন হারিয়ে গেল সেই ছোট পাখিগুলো। যেমন ঝাঁকে ঝাঁকে ডানা মেলে উড়ে বেড়াত, তেমনই ঝাঁক বেঁধেই হারিয়ে গেল বেমালুম। পৃথিবীর আর কোথাও দেখা গেল না তাদের। রক্তমাংসের পৃথিবী থেকে যেন মিথ আর রূপকথার পাখি হয়ে গেল সেই ‘ ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলার ’- এর দল।

২০২০ সালের অক্টোবরে ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারটি পাওয়া যায়

২০২০ সালের অক্টোবরে ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারটি পাওয়া যায়

কেন এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গলের এই ছোট পাখিগুলো? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই অন্তর্ধানের কারণ একটা নয়, বিবিধ। সভ্যতার যত উন্নতি হয়েছে, ততই সমতলের জঙ্গল কেটে চাষের জমি আর বসতি তৈরি হয়েছে। পামতেলের ব্যবসা করতে গিয়ে ডাচেরাও একের পর এক জঙ্গল ইজারা নিয়ে কেটে সাফ করে পামগাছ লাগিয়েছে। যেহেতু সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি নিচু জঙ্গলগুলোই মালাকোকিংক্লা পার্সপিসিলটা গোত্রের পাখিগুলোর প্রিয় জায়গা ছিল, তাই জঙ্গল কমার সঙ্গে সঙ্গে তারাও কমে গেছে। দাবানলের মতো প্রাকৃতিক বিপদেও প্রাণ গেছে হাজার হাজার পাখির।

বার্ডপ্যাকার নামক পর্যটন সংস্থার কর্মী আকবর ইন্দোনেশিয়ায় কাজ করছেন অনেকদিন। জীবিকার প্রয়োজন ছাড়াও তিনি ভালোবাসেন অরণ্যের গাছপালা আর পাখপাখালির সঙ্গ। তবে ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারের ছবিটা যেন কিছুটা সম্মোহিত করে দিয়েছিল তাকে। তার মনে হয়েছিল, খয়েরি ডানায় কী যেন এক রহস্য ঢেকে রেখেছে নীলচে ধূসর রঙের পাখিটি! আশ্চর্যের তখনও অনেক বাকি। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে হোয়্যাটসাপে বন্ধুদের পাঠানো একটা মেসেজে চোখ আটকে যায় আকবরের।

আকবরের বার্ডস অফ ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অনুলিপি

আকবরের বার্ডস অফ ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অনুলিপি

মেসেজের সঙ্গে একটা ছবিও ছিল। ছবিটা বাদামি ডানার ছোট একটা পাখির, যার চোখের উপর কপালের কাছে কালো টানা দাগ। ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিওয়ের দক্ষিণ কালিমানটান এলাকায় ঘুরতে ঘুরতে দুজন মানুষ না কি দেখতে পেয়েছে এই নতুন ধরনের পাখিটাকে! পাখিটাকে ধরে ছবি তোলা হলেও, কোনো ক্ষতি না করেই আবার তাকে ছেড়েও দেয়া হয়েছে সেই জঙ্গলে।

আকবরের বুকে লাবডুব শুরু হয়ে গেছে ততক্ষণে। সেই পাখিটা না! বইয়ে যার ছবি দেখে একদিন অন্যরকম অনুভূতি হয়েছিল। প্রথম প্রথম তো বিশ্বাস করাই মুশকিল হচ্ছিল। সত্যিই সেই হারিয়ে যাওয়া পাখিটাই তো! কোনো ভুল হচ্ছে না! কিন্তু সে পাখি তো প্রায় ২০০ বছর ধরে নিখোঁজ! বিশ্বাস আর সন্দেহের দোলাচলে দুলতে দুলতেই পুরোনো গাইড বুক খুঁজে এনে পাতা ওল্টাতে থাকে আকবর। আর তারপরই তার চোখ আটকে যায়। বিশেষ পাতাটিতে। মাঝখানে অনেকগুলো দিন কেটে গেলেও পাখি চিনতে ভুল করেননি সেদিন আকবর।

আকবর চোখ আটকে যাওয়া বিশেষ পাতাটি

আকবর চোখ আটকে যাওয়া বিশেষ পাতাটি

জঙ্গলে দেখা মেলা পাখিটাই নিঃসংশয়ে সেই মিথ হয়ে যাওয়া ছোট পাখি ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলার। এটা যে বিরাট আবিষ্কার তা বুঝতে দেরি হয়নি আকবরের। কালবিলম্ব না করে চেনাজানা সমস্ত পাখি-গবেষকের কাছে ছুটে যান ওই পর্যটন কর্মী। সকলেই একমত, হোয়্যাটসাপের ছবির পাখিটার সঙ্গে একটা পাখিরই ভীষণ মিল, আর সেটা সেই হারিয়ে যাওয়া কালো ভুরুর ছাতারে। যদিও পা, গলা আর পেটের কাছের পালকের রঙ আগের প্রজন্মের পাখির থেকে বেশ কিছুটা আলাদা।

এই ঘটনার পর পরই আকবর আর তার সহকর্মীরা মিলে বার্ডিং এশিয়া পত্রিকায় এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন লেখেন, যেখানে ব্ল্যার্ড ব্রাউড ব্যাবলারের নতুন করে দেখা পাওয়ার কথাটাও লেখা ছিল। এই ঘটনায় পক্ষীপ্রেমী মহলে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। এর আগে এই ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারের শেষ নমুনাটি সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন জার্মান প্রকৃতিবিদ কার্ল এ.এল.এম শোয়ানের। ১৮৩৩ থেকে ১৮৪৮ সালের মাঝামাঝি কোনো একসময়ে পাওয়া সেই হোলোটাইপ স্পেসিমেনটা এখনও রাখা আছে নেদারল্যান্ডের বায়োডাইভারসিটি সেন্টারে।

শতবর্ষ পুরনো ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারের শেষ নমুনাটি

শতবর্ষ পুরনো ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারের শেষ নমুনাটি

লোকচক্ষুর আড়ালে কালিমানটান এলাকার জঙ্গলে এই পাখির দুএকটা প্রজাতি যে এখনও বেঁচেবর্তে আছে, সে ব্যাপারে এখন অনেকটাই নিশ্চিত জীববিজ্ঞানীরা। এই ঘন জঙ্গলে এমনিতেই মানুষের যাতায়াত কম, ফলে সংখ্যায় কম হলেও দীর্ঘদিন একরকম নিশ্চিন্তেই এখানে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে পাখিগুলো। এমনকি যারা প্রথম পাখিটা খুঁজে পেয়েছিল, শোরগোল হওয়ার আগে তারাও ভাবতে পারেননি, এক হারিয়ে যাওয়া বিরল পাখির মুখোমুখি হয়েছেন তারা।

এটি ইন্দোনেশিয়ান প্রাকৃতিক ইতিহাসের, বিশেষত পাখিবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধানগুলোর মধ্যে একটি সেকথা একবাক্যে মেনে নিয়েছেন জীববিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি এই ছোট পাখিটার সংরক্ষণ আর গবেষণা নিয়েও আগামীতে নানারকম কাজ করার চেষ্টা শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। চোরাশিকারীদের হাত থেকে এই হাতেগোনা গুটিকয় ছোট পাখিকে বাঁচানোটাও এখন বিজ্ঞানীদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই তৎপরতাগুলো সত্যিই এই ছোট প্রাণীটির কোনো কাজে লাগবে কি না, সেটাই এখন দেখার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিলুপ্তির ১৭২ বছর পর আবার দেখা মিললো এই পাখিটির

আপডেট টাইম : ০৯:৩৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মার্চ ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক-দু বছর নয়, আজ থেকে ১৭২ বছর আগেই এই পাখিটা পৃথিবীর বুক থেকে বেমালুম হারিয়ে গেছে। ইন্দোনেশিয়ার পুরনো বাসিন্দারা হয়তো দাদু-ঠাকুমার মুখে গল্প শুনেছে, চাক্ষুষ করেনি। ছাতারে প্রজাতির সেই পাখিটারই পোশাকি নাম ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলার। ১৯ শতকের গোড়ায় ইন্দোনেশিয়া তখন ডাচ উপনিবেশের অংশ। সমুদ্র উপকূলের সবুজ দ্বীপগুলোর বুকে সেসময় ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়াত খয়েরি ডানার একধরনের ছোট ছোট পাখিরা।

ব্যাবলার, মানে আমাদের খুব চেনা ছাতারে পাখির জাতভাই এই পাখিগুলোর স্বভাব ছিল একটু অন্যরকম। সমুদ্রের আশেপাশের ক্রান্তীয় আর্দ্র অরণ্য অঞ্চলেই বেশিরভাগ দেখা মিলত এই পাখির। তারপর আচমকাই একদিন হারিয়ে গেল সেই ছোট পাখিগুলো। যেমন ঝাঁকে ঝাঁকে ডানা মেলে উড়ে বেড়াত, তেমনই ঝাঁক বেঁধেই হারিয়ে গেল বেমালুম। পৃথিবীর আর কোথাও দেখা গেল না তাদের। রক্তমাংসের পৃথিবী থেকে যেন মিথ আর রূপকথার পাখি হয়ে গেল সেই ‘ ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলার ’- এর দল।

২০২০ সালের অক্টোবরে ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারটি পাওয়া যায়

২০২০ সালের অক্টোবরে ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারটি পাওয়া যায়

কেন এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গলের এই ছোট পাখিগুলো? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই অন্তর্ধানের কারণ একটা নয়, বিবিধ। সভ্যতার যত উন্নতি হয়েছে, ততই সমতলের জঙ্গল কেটে চাষের জমি আর বসতি তৈরি হয়েছে। পামতেলের ব্যবসা করতে গিয়ে ডাচেরাও একের পর এক জঙ্গল ইজারা নিয়ে কেটে সাফ করে পামগাছ লাগিয়েছে। যেহেতু সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি নিচু জঙ্গলগুলোই মালাকোকিংক্লা পার্সপিসিলটা গোত্রের পাখিগুলোর প্রিয় জায়গা ছিল, তাই জঙ্গল কমার সঙ্গে সঙ্গে তারাও কমে গেছে। দাবানলের মতো প্রাকৃতিক বিপদেও প্রাণ গেছে হাজার হাজার পাখির।

বার্ডপ্যাকার নামক পর্যটন সংস্থার কর্মী আকবর ইন্দোনেশিয়ায় কাজ করছেন অনেকদিন। জীবিকার প্রয়োজন ছাড়াও তিনি ভালোবাসেন অরণ্যের গাছপালা আর পাখপাখালির সঙ্গ। তবে ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারের ছবিটা যেন কিছুটা সম্মোহিত করে দিয়েছিল তাকে। তার মনে হয়েছিল, খয়েরি ডানায় কী যেন এক রহস্য ঢেকে রেখেছে নীলচে ধূসর রঙের পাখিটি! আশ্চর্যের তখনও অনেক বাকি। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে হোয়্যাটসাপে বন্ধুদের পাঠানো একটা মেসেজে চোখ আটকে যায় আকবরের।

আকবরের বার্ডস অফ ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অনুলিপি

আকবরের বার্ডস অফ ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অনুলিপি

মেসেজের সঙ্গে একটা ছবিও ছিল। ছবিটা বাদামি ডানার ছোট একটা পাখির, যার চোখের উপর কপালের কাছে কালো টানা দাগ। ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিওয়ের দক্ষিণ কালিমানটান এলাকায় ঘুরতে ঘুরতে দুজন মানুষ না কি দেখতে পেয়েছে এই নতুন ধরনের পাখিটাকে! পাখিটাকে ধরে ছবি তোলা হলেও, কোনো ক্ষতি না করেই আবার তাকে ছেড়েও দেয়া হয়েছে সেই জঙ্গলে।

আকবরের বুকে লাবডুব শুরু হয়ে গেছে ততক্ষণে। সেই পাখিটা না! বইয়ে যার ছবি দেখে একদিন অন্যরকম অনুভূতি হয়েছিল। প্রথম প্রথম তো বিশ্বাস করাই মুশকিল হচ্ছিল। সত্যিই সেই হারিয়ে যাওয়া পাখিটাই তো! কোনো ভুল হচ্ছে না! কিন্তু সে পাখি তো প্রায় ২০০ বছর ধরে নিখোঁজ! বিশ্বাস আর সন্দেহের দোলাচলে দুলতে দুলতেই পুরোনো গাইড বুক খুঁজে এনে পাতা ওল্টাতে থাকে আকবর। আর তারপরই তার চোখ আটকে যায়। বিশেষ পাতাটিতে। মাঝখানে অনেকগুলো দিন কেটে গেলেও পাখি চিনতে ভুল করেননি সেদিন আকবর।

আকবর চোখ আটকে যাওয়া বিশেষ পাতাটি

আকবর চোখ আটকে যাওয়া বিশেষ পাতাটি

জঙ্গলে দেখা মেলা পাখিটাই নিঃসংশয়ে সেই মিথ হয়ে যাওয়া ছোট পাখি ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলার। এটা যে বিরাট আবিষ্কার তা বুঝতে দেরি হয়নি আকবরের। কালবিলম্ব না করে চেনাজানা সমস্ত পাখি-গবেষকের কাছে ছুটে যান ওই পর্যটন কর্মী। সকলেই একমত, হোয়্যাটসাপের ছবির পাখিটার সঙ্গে একটা পাখিরই ভীষণ মিল, আর সেটা সেই হারিয়ে যাওয়া কালো ভুরুর ছাতারে। যদিও পা, গলা আর পেটের কাছের পালকের রঙ আগের প্রজন্মের পাখির থেকে বেশ কিছুটা আলাদা।

এই ঘটনার পর পরই আকবর আর তার সহকর্মীরা মিলে বার্ডিং এশিয়া পত্রিকায় এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন লেখেন, যেখানে ব্ল্যার্ড ব্রাউড ব্যাবলারের নতুন করে দেখা পাওয়ার কথাটাও লেখা ছিল। এই ঘটনায় পক্ষীপ্রেমী মহলে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। এর আগে এই ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারের শেষ নমুনাটি সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন জার্মান প্রকৃতিবিদ কার্ল এ.এল.এম শোয়ানের। ১৮৩৩ থেকে ১৮৪৮ সালের মাঝামাঝি কোনো একসময়ে পাওয়া সেই হোলোটাইপ স্পেসিমেনটা এখনও রাখা আছে নেদারল্যান্ডের বায়োডাইভারসিটি সেন্টারে।

শতবর্ষ পুরনো ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারের শেষ নমুনাটি

শতবর্ষ পুরনো ব্ল্যাক ব্রাউড ব্যাবলারের শেষ নমুনাটি

লোকচক্ষুর আড়ালে কালিমানটান এলাকার জঙ্গলে এই পাখির দুএকটা প্রজাতি যে এখনও বেঁচেবর্তে আছে, সে ব্যাপারে এখন অনেকটাই নিশ্চিত জীববিজ্ঞানীরা। এই ঘন জঙ্গলে এমনিতেই মানুষের যাতায়াত কম, ফলে সংখ্যায় কম হলেও দীর্ঘদিন একরকম নিশ্চিন্তেই এখানে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে পাখিগুলো। এমনকি যারা প্রথম পাখিটা খুঁজে পেয়েছিল, শোরগোল হওয়ার আগে তারাও ভাবতে পারেননি, এক হারিয়ে যাওয়া বিরল পাখির মুখোমুখি হয়েছেন তারা।

এটি ইন্দোনেশিয়ান প্রাকৃতিক ইতিহাসের, বিশেষত পাখিবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধানগুলোর মধ্যে একটি সেকথা একবাক্যে মেনে নিয়েছেন জীববিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি এই ছোট পাখিটার সংরক্ষণ আর গবেষণা নিয়েও আগামীতে নানারকম কাজ করার চেষ্টা শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। চোরাশিকারীদের হাত থেকে এই হাতেগোনা গুটিকয় ছোট পাখিকে বাঁচানোটাও এখন বিজ্ঞানীদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই তৎপরতাগুলো সত্যিই এই ছোট প্রাণীটির কোনো কাজে লাগবে কি না, সেটাই এখন দেখার।