বিশ্বের কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়া জিকা ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে রয়েছে দেশটি।
তবে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে বেনাপোল বন্দরে সীমান্ত পাড়ি দেওয়া লোকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
তাছাড়া বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে একটি টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠকে জিকা ভাইরাস ঠেকাতে বিমানবন্দরে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।
তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ নিয়ে উদ্বেগের তেমন কোনো কারণ নেই।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, জিকা ভাইরাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একেবারে ‘লো রিস্কে’ রয়েছে। ব্রাজিলের মতো বাংলাদেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার কোনোই আশঙ্কা নেই।
এই চিকিৎসা বিজ্ঞানী আরও বলেন, বাংলাদেশে জিকা ভাইরাসের বাহক এডিশ ও চিকনগুনিয়া মশার অস্তিত্ব রয়েছে এবং এ দুই মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমণ রয়েছে। সুতরাং জিকা ভাইরাসের ঝুঁকি উড়িয়ে দেয়া যায় না। তবে দেশে সেটা উদ্বেগের পর্যায়ে নয়।
সামনে বর্ষা মৌসুম আসছে, আর বর্ষা মৌসুমে এডিশ ও ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে থাকে বাংলাদেশ। সেজন্য মশা নিধনে সরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেন তিনি।
স্থল ও বিমানবন্দরে সতর্কতার ব্যাপারে বিশিষ্ট এ রোগ তত্ত্ববিদ বলেন, জিকা আক্রান্ত হলে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে জ্বর থাকে না। আর ২০ ভাগ ক্ষেত্রে জ্বর থাকলেও তার তীব্রতা বেশি নয়। তাই সীমান্তে শরীরের তাপমাত্রা গ্রহণ খুব কার্যকর পদ্ধতি নয়।
অন্যদিকে, দেশের বিশিষ্ট রোগ তত্ত্ববিদ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এডিশ ও চিকনগুনিয়ার ঝুঁকি থাকায় জিকার ঝুঁকিও রয়েছে। তবে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে ততটা ঝুঁকি নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাতৃগর্ভে জিকা ভাইরাস সদৃশ্ এক ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের উপস্থিতি পাওয়া গেলেও সেটা জিকা ভাইরাস কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা ও পরীক্ষা চলছে।
জিকা ভাইরাসের ঝুঁকি মোকাবিলায় আগাম সতর্কতা হিসেবে এই দুই বিশেষজ্ঞ সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে যৌথভাবে মশা নিধনের পরামর্শ দেন।