ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিতে পতিত হাওরের উর্বর ভূমি ড. নিয়াজ পাশা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
  • ৫৮৬ বার

স্বাধীনতাত্তোর বঙ্গবন্ধু সরকারের বদান্যতায় জার্মানি থেকে বিশেষ বিমানে করে আনা সেচ পাম্পের বদৌলতে হাওরের বিশা্‌ল বিরাণভূমি, গো-চারণ ক্ষেত্র ইরি ধান চাষের আওতায় আসে । এর পর থেকে প্রতি বছর এ সব জমিতে ধান চাষ হয়ে আসছিল ।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিতে পতিত রয়েছে হাওরের বহু একর উর্বর ধানী জমি। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সেখানকার কৃষকরা।

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার লাইমপাশা গ্রামের ‘মৃগা হাওর’ এ শতাধিক একর জমিতে কোন ধান আবাদ না হওয়ার পেছনে কৃষকরা অস্বাভাবিক উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পেশা কৃষিতে, বিশেষ করে ধান চাষে তাদের লোকসান ছাড়া লাভবান হওয়া কোনো আশা নেই বলেও জানিয়েছেন তারা।

যার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে ধান চাষ হওয়া এসব জমি এখন পতিত ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এতে জমি ‘পত্তণ’ দিয়ে খাওয়া ব্যক্তিরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

নিকট অতীতেও এই অঞ্চলে বৈশাখ মাসে ধান কাটার পরই চাষীরা পরবর্তী বছরের জন্য জমি ‘পত্তণ’ নিতে প্রতিযোগিতায়ও নামত। কিন্ত এখন অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন । ধানের কম দাম, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, পরিবহণে দুর্ভোগ ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহী করছে। কেবল লইমপাশাই নয়-এচিত্র হাওরের অনেক এলাকাতেও।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় বড় অবদান রেখে চলা ‘খাদ্য ভান্ডার’ হাওরের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার এই বেহালদশা নিসন্দেহে উদ্বেগের।

পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে হাওরে শুধু ধান চাষের উপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে ফসল বৈচিত্র প্রবর্তন, সেচে বিদ্যুতায়ন, ধান পরিবহণে যোগাযোগের উন্নয়ন, যান্ত্রীকিকরণ এবং ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণই পারে হাওরবাসী কৃষকদের রক্ষা করতে।

ড. নিয়াজ পাশা: কৃষি প্রকৌশলী ও একজন হাওর ভূমিপুত্র

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিতে পতিত হাওরের উর্বর ভূমি ড. নিয়াজ পাশা

আপডেট টাইম : ১২:০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

স্বাধীনতাত্তোর বঙ্গবন্ধু সরকারের বদান্যতায় জার্মানি থেকে বিশেষ বিমানে করে আনা সেচ পাম্পের বদৌলতে হাওরের বিশা্‌ল বিরাণভূমি, গো-চারণ ক্ষেত্র ইরি ধান চাষের আওতায় আসে । এর পর থেকে প্রতি বছর এ সব জমিতে ধান চাষ হয়ে আসছিল ।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিতে পতিত রয়েছে হাওরের বহু একর উর্বর ধানী জমি। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সেখানকার কৃষকরা।

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার লাইমপাশা গ্রামের ‘মৃগা হাওর’ এ শতাধিক একর জমিতে কোন ধান আবাদ না হওয়ার পেছনে কৃষকরা অস্বাভাবিক উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পেশা কৃষিতে, বিশেষ করে ধান চাষে তাদের লোকসান ছাড়া লাভবান হওয়া কোনো আশা নেই বলেও জানিয়েছেন তারা।

যার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে ধান চাষ হওয়া এসব জমি এখন পতিত ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এতে জমি ‘পত্তণ’ দিয়ে খাওয়া ব্যক্তিরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

নিকট অতীতেও এই অঞ্চলে বৈশাখ মাসে ধান কাটার পরই চাষীরা পরবর্তী বছরের জন্য জমি ‘পত্তণ’ নিতে প্রতিযোগিতায়ও নামত। কিন্ত এখন অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন । ধানের কম দাম, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, পরিবহণে দুর্ভোগ ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহী করছে। কেবল লইমপাশাই নয়-এচিত্র হাওরের অনেক এলাকাতেও।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় বড় অবদান রেখে চলা ‘খাদ্য ভান্ডার’ হাওরের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার এই বেহালদশা নিসন্দেহে উদ্বেগের।

পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে হাওরে শুধু ধান চাষের উপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে ফসল বৈচিত্র প্রবর্তন, সেচে বিদ্যুতায়ন, ধান পরিবহণে যোগাযোগের উন্নয়ন, যান্ত্রীকিকরণ এবং ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণই পারে হাওরবাসী কৃষকদের রক্ষা করতে।

ড. নিয়াজ পাশা: কৃষি প্রকৌশলী ও একজন হাওর ভূমিপুত্র