হারিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এই প্রাণীটির সংখ্যা দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। এমনকি সুন্দরবন বাঘের স্বর্গরাজ্য হলেও এখন সেখানে আছে মাত্র ১০৬টি। এমনটিই জানিয়েছেন বাংলাদেশ বন বিভাগের প্রধান সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে এলাকায় অবস্থিত একটি পত্রিকা অফিসের অডিটোরিয়ামে বুধবার সকাল ১১টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী বলেন, বাঘ আমাদের গর্ব। বিশ্বজুড়ে বাঘের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বিশ্বে মাত্র ৩,২০০টি বাঘ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে আছে ১০৬টি। আমরা টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নে কাজ করছি। জনগণের উদ্দেশে আমি বলতে চাই, বাঘ আমাদের বনের প্রহরী, তাকে মারবেন না।
ইউএসএইড এর পক্ষ থেকে জানা যায়, বনভূমি ধ্বংস, অবৈধ বন্যপ্রাণী শিকার আরো নানাবিধ কারণে হিসাব মতে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কমে ১০৬টিতে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে জাতীয় পর্যায়ে জনসচেতনতা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে টাইগার ক্যারাভ্যান নামক উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি বাস বিভিন্ন স্থানে সুন্দরবন ও বাঘ বিষয়ক প্রদর্শনীতে অংশ নেবে।
ইউএসএইডের ইকোনোমিক গ্রোথ এনভায়রনমেন্ট এন্ড এনার্জির টিম লিডার ডা. কার্ল উরস্টার বাংলাদেশে বাঘের সম্ভাবনার কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বাঘের টিকে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আমরা চাই বাংলাদেশের সাথে বাঘ সংরক্ষণে এক সাথে কাজ করতে। ইতোমধ্যে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পে বাংলাদেশের সাথে কাজ করছি। টাইগার ক্যারাভান কার্যক্রমটির উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে বলে আমি আশা করছি।
বাঘ মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক জহির উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, বাঘ মানুষের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। আর সেই দ্বন্দ্ব নিরসনে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। বাঘের হামলায় কোনো মানুষ নিহত হলে ১ লাখ টাকা ও আহত হলে ৫০,০০০ টাকা দেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা প্রায় ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে বিতরণ করেছি।
সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম।