ঢাকা ০৯:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিলখানা হত্যা মামলা এক আপিলেই ব্যয় ১০ লাখ টাকার বেশি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০
  • ১৮১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পিলখানা হত্যা মামলায় উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের নিয়ে দণ্ডিতদের আইনজীবী ও স্বজনদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। আপিল দায়েরের ব্যয় নিয়েই এই উৎকণ্ঠা। আইনজীবীরা বলছেন, নৃশংস এই হত্যা মামলার হাইকোর্টের ৩০ হাজার পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি তুলতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা।

এখন আনুষঙ্গিক কাগজাদি (নিম্ন আদালতের রায়, সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা, আত্মপক্ষ সমর্থন) দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ আপিল করলে তার পৃষ্ঠাসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৬৫ হাজারে। ফলে সব মিলিয়ে এক আপিল দায়েরে সম্ভাব্য খরচ পড়বে ১০ লাখ টাকার ওপরে। তারা বলছেন, হত্যা মামলার দণ্ডিত আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি। তাদের পরিবারের অনেক সদস্যই এখন যোগাযোগ করছেন না। যারা যোগাযোগ করছেন তারা স্বল্পসংখ্যক এবং অর্থসংকটের কথাও উল্লেখ করেছেন। ফলে এত অর্থ সংকুলান করে দণ্ডিত দরিদ্র আসামিদের পক্ষে নিয়মিত লিভ টু আপিল করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তারা।

এদিকে পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বৃহস্পতিবার ঐ আপিল দায়ের সম্পন্ন হয়। আপিলে খালাস পাওয়া আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন ইত্তেফাককে বলেন, যারা খালাস পেয়েছেন তাদের সবার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ সাজার আবেদন জানানো হয়েছে।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহের নামে তৎকালীন বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় নারকীয় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে ঢাকার আদালত ১৫২ বিডিআর জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৬১ জনকে। সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান আরো ২৫৬ জন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৮ জন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। ২০১৭ সালে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ ১৫২ জনের মধ্যে ১৩৯ জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। যাবজ্জীবন দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় আরো ২০০ জনকে। খালাস পান ৪৫ জন।

এদিকে প্রায় ৩০ হাজার পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেয়েছে আসামি পক্ষ। চলছে রায় পর্যালোচনার কাজ। পর্যালোচনা শেষ হলেই দণ্ডিত আসামিদের খালাস চেয়ে আপিল দায়ের করা হবে বলে জানান আসামি পক্ষের অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম আমিনুল ইসলাম। দণ্ডিত দরিদ্র আসামিরা আপিল করার সুযোগ পান।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম সরকার ও মো. মাসুদ রানা বলেন, আসামিদের স্বজনরা যোগাযোগ করেছেন। তারা উত্কণ্ঠিত আপিল দায়েরের ব্যয় নিয়ে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পিলখানা হত্যা মামলা এক আপিলেই ব্যয় ১০ লাখ টাকার বেশি

আপডেট টাইম : ০৯:১১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পিলখানা হত্যা মামলায় উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের নিয়ে দণ্ডিতদের আইনজীবী ও স্বজনদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। আপিল দায়েরের ব্যয় নিয়েই এই উৎকণ্ঠা। আইনজীবীরা বলছেন, নৃশংস এই হত্যা মামলার হাইকোর্টের ৩০ হাজার পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি তুলতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা।

এখন আনুষঙ্গিক কাগজাদি (নিম্ন আদালতের রায়, সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা, আত্মপক্ষ সমর্থন) দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ আপিল করলে তার পৃষ্ঠাসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৬৫ হাজারে। ফলে সব মিলিয়ে এক আপিল দায়েরে সম্ভাব্য খরচ পড়বে ১০ লাখ টাকার ওপরে। তারা বলছেন, হত্যা মামলার দণ্ডিত আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি। তাদের পরিবারের অনেক সদস্যই এখন যোগাযোগ করছেন না। যারা যোগাযোগ করছেন তারা স্বল্পসংখ্যক এবং অর্থসংকটের কথাও উল্লেখ করেছেন। ফলে এত অর্থ সংকুলান করে দণ্ডিত দরিদ্র আসামিদের পক্ষে নিয়মিত লিভ টু আপিল করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তারা।

এদিকে পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বৃহস্পতিবার ঐ আপিল দায়ের সম্পন্ন হয়। আপিলে খালাস পাওয়া আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন ইত্তেফাককে বলেন, যারা খালাস পেয়েছেন তাদের সবার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ সাজার আবেদন জানানো হয়েছে।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহের নামে তৎকালীন বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় নারকীয় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে ঢাকার আদালত ১৫২ বিডিআর জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৬১ জনকে। সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান আরো ২৫৬ জন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৮ জন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। ২০১৭ সালে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ ১৫২ জনের মধ্যে ১৩৯ জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। যাবজ্জীবন দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় আরো ২০০ জনকে। খালাস পান ৪৫ জন।

এদিকে প্রায় ৩০ হাজার পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেয়েছে আসামি পক্ষ। চলছে রায় পর্যালোচনার কাজ। পর্যালোচনা শেষ হলেই দণ্ডিত আসামিদের খালাস চেয়ে আপিল দায়ের করা হবে বলে জানান আসামি পক্ষের অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম আমিনুল ইসলাম। দণ্ডিত দরিদ্র আসামিরা আপিল করার সুযোগ পান।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম সরকার ও মো. মাসুদ রানা বলেন, আসামিদের স্বজনরা যোগাযোগ করেছেন। তারা উত্কণ্ঠিত আপিল দায়েরের ব্যয় নিয়ে।