ঢাকা ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিযায়ী পাখির কলরবে মুখরিত করতোয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৪৮:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২০
  • ১৮৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীতের হিমেল হাওয়া শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির দেখা মিলছে সিরাজগঞ্জের করতোয়া নদীতে।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রাম ঘেঁষা করতোয়া নদী এখন হাজার হাজার পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর। পাখি দেখতে প্রতিদিনই সকাল-বিকেল নদী তীরে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরাও। কেবল দৃশ্য উপভোগই নয়, অনেকেই তা ক্যামেরাবন্দী করছেন। বিশেষ মুহূর্তগুলো স্মরণী করে রাখতে চাইছেন।

ঝাঁক বেঁধে আসা পরিযায়ীদের আগমনকে আনন্দের সাথে নিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোনো শিকারিকে এই এলাকায় প্রবেশ করতে দিবেন না। একই সাথে স্থানীয়রাও পাখি শিকার না করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। পরিযায়ী ও দেশীয় পাখির নিরাপদ বিচরণে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতাও চেয়েছেন তারা।

শাহজাদপুর থেকে পাখি দেখতে আসা মাতুয়ারা ইসলাম স্বপ্না বলেন, এবছর করতোয়া নদীতে অনেক পাখি এসেছে। পাখিদের দেখে খুব ভালো লাগছে। আমি প্রতি বছরই অতিথি পাখিদের দেখতে এখানে আসি।

নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, এ বছর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি এসেছে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায়। তবে নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে তারা জড়ো হচ্ছে করতোয়া নদীতে। এখানে গাছপালা বেশি।  এ ছাড়া বিস্তীর্ণ জলাশয় থাকায় পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় মনে করছে।

তাড়াশ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মর্জিনা ইসলাম বলেন, অতিথি পাখি শীতকালের সৌন্দর্য। এর উপস্থিতিতে প্রকৃতিতে আসে নতুন রূপ। নির্দিষ্ট সময়ের পর এই পাখিগুলো চলে যায়। অতিথি পাখি আমাদের ক্ষতি করে না।  অথচ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পাখি শিকার করা হয়। জীবন বাঁচাতে এসে জীবন দিতে হয় ভিনদেশের এসব অতিথিদের।

জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা সিরাজগঞ্জের দ্যা বার্ড সেফটি হাউজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস বলেন, এই মুহূর্তে জরুরি কাজ হচ্ছে অতিথি পাখিদের কোনোভাবে বিরক্ত না করা। এ ছাড়াও এই এলাকায় জনসচেতনতা বাড়াতে বিলবোর্ড, লিফলেট বিতরণ করা দরকার। আমরা এরই মধ্যে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণের স্বার্থে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবেও চলনবিল এলাকার পাখি রক্ষায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম বলেন, পাখি প্রকৃতির অলংকার। এ অলংকার ধ্বংস করা মানে পরিবেশ ধ্বংস করা।  প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণক্ষেত্র মুক্তভাবে রক্ষা করতে হবে। আমি নিজে পাখির অভায়শ্রম দেখতে যাবো। সেখানে জনগণকে সচেতন করা হবে- যেন কেউ পাখিদেরকে বিরক্ত ও শিকার না করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পরিযায়ী পাখির কলরবে মুখরিত করতোয়া

আপডেট টাইম : ০৬:৪৮:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীতের হিমেল হাওয়া শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির দেখা মিলছে সিরাজগঞ্জের করতোয়া নদীতে।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রাম ঘেঁষা করতোয়া নদী এখন হাজার হাজার পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর। পাখি দেখতে প্রতিদিনই সকাল-বিকেল নদী তীরে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরাও। কেবল দৃশ্য উপভোগই নয়, অনেকেই তা ক্যামেরাবন্দী করছেন। বিশেষ মুহূর্তগুলো স্মরণী করে রাখতে চাইছেন।

ঝাঁক বেঁধে আসা পরিযায়ীদের আগমনকে আনন্দের সাথে নিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোনো শিকারিকে এই এলাকায় প্রবেশ করতে দিবেন না। একই সাথে স্থানীয়রাও পাখি শিকার না করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। পরিযায়ী ও দেশীয় পাখির নিরাপদ বিচরণে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতাও চেয়েছেন তারা।

শাহজাদপুর থেকে পাখি দেখতে আসা মাতুয়ারা ইসলাম স্বপ্না বলেন, এবছর করতোয়া নদীতে অনেক পাখি এসেছে। পাখিদের দেখে খুব ভালো লাগছে। আমি প্রতি বছরই অতিথি পাখিদের দেখতে এখানে আসি।

নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, এ বছর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি এসেছে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায়। তবে নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে তারা জড়ো হচ্ছে করতোয়া নদীতে। এখানে গাছপালা বেশি।  এ ছাড়া বিস্তীর্ণ জলাশয় থাকায় পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় মনে করছে।

তাড়াশ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মর্জিনা ইসলাম বলেন, অতিথি পাখি শীতকালের সৌন্দর্য। এর উপস্থিতিতে প্রকৃতিতে আসে নতুন রূপ। নির্দিষ্ট সময়ের পর এই পাখিগুলো চলে যায়। অতিথি পাখি আমাদের ক্ষতি করে না।  অথচ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পাখি শিকার করা হয়। জীবন বাঁচাতে এসে জীবন দিতে হয় ভিনদেশের এসব অতিথিদের।

জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা সিরাজগঞ্জের দ্যা বার্ড সেফটি হাউজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস বলেন, এই মুহূর্তে জরুরি কাজ হচ্ছে অতিথি পাখিদের কোনোভাবে বিরক্ত না করা। এ ছাড়াও এই এলাকায় জনসচেতনতা বাড়াতে বিলবোর্ড, লিফলেট বিতরণ করা দরকার। আমরা এরই মধ্যে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণের স্বার্থে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবেও চলনবিল এলাকার পাখি রক্ষায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম বলেন, পাখি প্রকৃতির অলংকার। এ অলংকার ধ্বংস করা মানে পরিবেশ ধ্বংস করা।  প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণক্ষেত্র মুক্তভাবে রক্ষা করতে হবে। আমি নিজে পাখির অভায়শ্রম দেখতে যাবো। সেখানে জনগণকে সচেতন করা হবে- যেন কেউ পাখিদেরকে বিরক্ত ও শিকার না করে।