ঢাকা ০৯:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে বাড়ছে কালো মুরগি পালন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৩৩:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ নভেম্বর ২০২০
  • ২৭৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মহামারি একদিকে যেমন মানুষকে করেছে কর্মহীন। অন্যদিকে বিভিন্ন কাজের পথ উম্মোচনও করেছে। মাস্ক, স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক পণ্যগুলোর পাশাপাশি বেড়েছে খাবারের উৎপাদনও। বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ করে এমন সব খাবারের দিকেই মানুষ বেশি ঝুঁকছে।

মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর, ভোপাল জেলায় নতুন করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে সেখানে বেড়ে গেছে কালো মুরগি বা কড়কনাথ মুরগির চাহিদাও। তাই সরকারিভাবে সেখানে বাড়ান হয়েছে কড়কনাথ মুরগির উৎপাদন। কালো মুরগি বা কড়কনাথ মুরগির কথা শুনেছেন অনেকেই। নানা রকম রোগ থেকে বাঁচতে এমনকি চলমান ভাইরাসের বিরুদ্ধেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই মুরগিতেই ভরসা রাখছেন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।

ქათამი შავი ხორცით - Palitra TV-Radio

অ্যায়াম কেমানি বা কড়কনাথ মুরগি বিশ্বের সবচেয়ে দামি মাংস

চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উৎপাদন ও বিক্রিতে জোর দিতে চাইছেন সরকারি কর্মকর্তারাও। এতে পোল্ট্রি ফার্মিংয়ে লাভের মুখ দেখছেন স্থানীয় বিক্রেতারাও। একদিকে ভাইরাস থেকে বাঁচতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলছে অন্যদিকে কর্মহীন মানুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে।

এই মুরগি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি গুণেও ভরপুর। একে অ্যায়াম কেমানি বা কড়কনাথ মুরগিও বলা হয়। এর পালক থেকে শুরু করে ঠোঁট, পা, নখ, ঝুঁটি, চোখ, সবটাই কালো। এমনকি এই মুরগির মাংস ও হাড়ের রংও কালো। যে কারণে অনেকেই খেতে পছন্দ করেন না কিংবা বিষাক্ত ভেবে এড়িয়ে যান।

তবে জানেন কি? পৃথিবীর সমস্ত প্রজাতির মুরগির মধ্যে এই কুচকুচে কালো বর্ণের মুরগিই সবচেয়ে দামি। উপকারিতার দিক থেকেও এগিয়ে এটি। রীতিমতো ঔষধি গুণসম্পন্ন এই মুরগির মাংসে চর্বি প্রায় নেই বললেই চলে। উল্টো প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অন্যান্য খাদ্যগুণে ভরপুর। চলুন তবে এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন-

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, অন্যান্য মুরগির তুলনায় এই জাতের মুরগিতে পুষ্টিগুণ যেমন বেশি, তেমনি ফ্যাটের পরিমাণও অত্যন্ত কম, প্রায় নেই বললেই চলে। যে কারণে চিকিৎসকেরা ডায়েটে এই মুরগি মাংস খাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

Black chicken | নাগরিক

এই মুরগির মাংস, হাড়, রক্ত, ডিম, বাচ্চা সবই কালো

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি এর মাংসে ফ্যাট কম এবং বেশি প্রোটিন রয়েছে। যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন বা নিঃশ্বাসের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্যও খুব উপকারী এই মুরগির মাংস। প্রতি ১০০ গ্রাম অ্যায়াম কেমানি   মুরগিতে রয়েছে – প্রোটিন – ২৫ শতাংশ ফ্যাট – ১ শতাংশেরও কম কোলেস্টেরল – ১৮৫ মিলিগ্রাম লিনোলিক অ্যাসিড – ২৪ শতাংশ এছাড়াও, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৬, বি-১২, ভিটামিন-সি এবং ই, নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও আয়রন থাকে। কড়কনাথে ১৮টা অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। যার মধ্যে ৮ টি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

কোথায় এর আদি নিবাস? 

মহামারি ঠেকাতে বাড়ছে কালো মুরগি পালন

মধ্যপ্রদেশে বাড়ছে এর উৎপাদন

এই প্রজাতির মুরগি ইন্দোনেশিয়ায় প্রথম পাওয়া যায়, সেখানে এর নাম ‘অ্যায়াম কেমানি’। মধ্যপ্রদেশের আদিবাসীরা ইন্দোনেশিয়া থেকে এই মুরগি নিয়ে এসে একটি হাইব্রিড প্রজাতির সৃষ্টি করেন এবং দেশের মধ্যে প্রথম চাষ শুরু করেন। সেদেশে এই হাইব্রিড মুরগির নাম হয় ‘কড়কনাথ মুরগি’। গ্রাম বাংলায় কড়কনাথ প্রজাতির মুরগি কালো মুরগি বা ব্ল্যাক চিকেন হিসেবেই পরিচিত।

আবার ভারতের মধ্যপ্রদেশে একে ‘কালি মাসি’ও বলা হয়। আসলে এই মুরগির সমস্ত অংশই কুচকুচে কালো বর্ণের, এমনকি ডিম পর্যন্তও কালো বর্ণেরই হয়। তবে ভারতে এই প্রজাতির মুরগির ডিম মূলত সোনালী রঙের হয়। সাধারণ মুরগির থেকে এই মুরগির লড়াই করার ক্ষমতাও অনেক বেশি।

তবে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পাওয়া যায় এই মুরগি। চীনে কিন্তু এই মুরগির নাম সিল্কি-নেটিভ। বর্তমানে এই মুরগি মাংসের দাম তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তবে সবচেয়ে কম দাম হল কেজি প্রতি হাজার টাকা তো হবেই। এর এক একটি ডিমের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যে কারণে বাড়ছে কালো মুরগি পালন

আপডেট টাইম : ০৩:৩৩:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মহামারি একদিকে যেমন মানুষকে করেছে কর্মহীন। অন্যদিকে বিভিন্ন কাজের পথ উম্মোচনও করেছে। মাস্ক, স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক পণ্যগুলোর পাশাপাশি বেড়েছে খাবারের উৎপাদনও। বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ করে এমন সব খাবারের দিকেই মানুষ বেশি ঝুঁকছে।

মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর, ভোপাল জেলায় নতুন করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে সেখানে বেড়ে গেছে কালো মুরগি বা কড়কনাথ মুরগির চাহিদাও। তাই সরকারিভাবে সেখানে বাড়ান হয়েছে কড়কনাথ মুরগির উৎপাদন। কালো মুরগি বা কড়কনাথ মুরগির কথা শুনেছেন অনেকেই। নানা রকম রোগ থেকে বাঁচতে এমনকি চলমান ভাইরাসের বিরুদ্ধেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই মুরগিতেই ভরসা রাখছেন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।

ქათამი შავი ხორცით - Palitra TV-Radio

অ্যায়াম কেমানি বা কড়কনাথ মুরগি বিশ্বের সবচেয়ে দামি মাংস

চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উৎপাদন ও বিক্রিতে জোর দিতে চাইছেন সরকারি কর্মকর্তারাও। এতে পোল্ট্রি ফার্মিংয়ে লাভের মুখ দেখছেন স্থানীয় বিক্রেতারাও। একদিকে ভাইরাস থেকে বাঁচতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলছে অন্যদিকে কর্মহীন মানুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে।

এই মুরগি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি গুণেও ভরপুর। একে অ্যায়াম কেমানি বা কড়কনাথ মুরগিও বলা হয়। এর পালক থেকে শুরু করে ঠোঁট, পা, নখ, ঝুঁটি, চোখ, সবটাই কালো। এমনকি এই মুরগির মাংস ও হাড়ের রংও কালো। যে কারণে অনেকেই খেতে পছন্দ করেন না কিংবা বিষাক্ত ভেবে এড়িয়ে যান।

তবে জানেন কি? পৃথিবীর সমস্ত প্রজাতির মুরগির মধ্যে এই কুচকুচে কালো বর্ণের মুরগিই সবচেয়ে দামি। উপকারিতার দিক থেকেও এগিয়ে এটি। রীতিমতো ঔষধি গুণসম্পন্ন এই মুরগির মাংসে চর্বি প্রায় নেই বললেই চলে। উল্টো প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অন্যান্য খাদ্যগুণে ভরপুর। চলুন তবে এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন-

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, অন্যান্য মুরগির তুলনায় এই জাতের মুরগিতে পুষ্টিগুণ যেমন বেশি, তেমনি ফ্যাটের পরিমাণও অত্যন্ত কম, প্রায় নেই বললেই চলে। যে কারণে চিকিৎসকেরা ডায়েটে এই মুরগি মাংস খাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

Black chicken | নাগরিক

এই মুরগির মাংস, হাড়, রক্ত, ডিম, বাচ্চা সবই কালো

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি এর মাংসে ফ্যাট কম এবং বেশি প্রোটিন রয়েছে। যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন বা নিঃশ্বাসের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্যও খুব উপকারী এই মুরগির মাংস। প্রতি ১০০ গ্রাম অ্যায়াম কেমানি   মুরগিতে রয়েছে – প্রোটিন – ২৫ শতাংশ ফ্যাট – ১ শতাংশেরও কম কোলেস্টেরল – ১৮৫ মিলিগ্রাম লিনোলিক অ্যাসিড – ২৪ শতাংশ এছাড়াও, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৬, বি-১২, ভিটামিন-সি এবং ই, নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও আয়রন থাকে। কড়কনাথে ১৮টা অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। যার মধ্যে ৮ টি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

কোথায় এর আদি নিবাস? 

মহামারি ঠেকাতে বাড়ছে কালো মুরগি পালন

মধ্যপ্রদেশে বাড়ছে এর উৎপাদন

এই প্রজাতির মুরগি ইন্দোনেশিয়ায় প্রথম পাওয়া যায়, সেখানে এর নাম ‘অ্যায়াম কেমানি’। মধ্যপ্রদেশের আদিবাসীরা ইন্দোনেশিয়া থেকে এই মুরগি নিয়ে এসে একটি হাইব্রিড প্রজাতির সৃষ্টি করেন এবং দেশের মধ্যে প্রথম চাষ শুরু করেন। সেদেশে এই হাইব্রিড মুরগির নাম হয় ‘কড়কনাথ মুরগি’। গ্রাম বাংলায় কড়কনাথ প্রজাতির মুরগি কালো মুরগি বা ব্ল্যাক চিকেন হিসেবেই পরিচিত।

আবার ভারতের মধ্যপ্রদেশে একে ‘কালি মাসি’ও বলা হয়। আসলে এই মুরগির সমস্ত অংশই কুচকুচে কালো বর্ণের, এমনকি ডিম পর্যন্তও কালো বর্ণেরই হয়। তবে ভারতে এই প্রজাতির মুরগির ডিম মূলত সোনালী রঙের হয়। সাধারণ মুরগির থেকে এই মুরগির লড়াই করার ক্ষমতাও অনেক বেশি।

তবে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পাওয়া যায় এই মুরগি। চীনে কিন্তু এই মুরগির নাম সিল্কি-নেটিভ। বর্তমানে এই মুরগি মাংসের দাম তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তবে সবচেয়ে কম দাম হল কেজি প্রতি হাজার টাকা তো হবেই। এর এক একটি ডিমের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা।