ঢাকা ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছয় বছর পর জীবিত ফিরলো ‘নিহত’ যুবক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০২০
  • ১৮৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় অপহরণের ছয় বছর ও মামলার চার বছর পর ‘নিহত’ সেই যুবক নিজেই আদালতে হাজির হয়েছেন। এ ঘটনায় কথিত মামলার সেই ছয় বিবাদীকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।

এছাড়া সিআইডি ও পুলিশের তিনজনের মধ্যে দুইজনকে পরের শুনানিতে নথিপত্রসহ উপস্থিত হতে বলেছেন নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসের আদালত। বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন তিনি।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন সোহেল জানান, এর আগে ১ নভেম্বর আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিআইডি ও পুলিশের তিনজনকে স্ব-শরীরে তলব করে আদালত।

বৃহস্পতিবার ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ও এসআই জিয়াউদ্দিন উজ্জ্বল আদালতে হাজির হন। পরে বিচারক সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদকে বাদ দিয়ে অপর দুইজনকে পরের শুনানিতে নথিসহ হাজির হতে বলেছেন।

এছাড়া বিবাদী তাসলিমা, রকমত, রফিক, সাগর, সাত্তার, সোহেলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে মামলার পর পুলিশ অভিযুক্ত ছয়জনকেই গ্রেফতার করে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।

অভিযোগ রয়েছে রিমান্ডে থাকা সময়ে গ্রেফতার ছয়জনকে মারধর করা হয়। ছয়জনকেই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানের জন্য আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু তাদের কেউ আদালতে জবানবন্দী দেয়নি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১০ মে মামুন অপহরণ হয়েছে অভিযোগ এনে দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন বাবা আবুল কালাম। ওই মামলায় ৬ জনকে বিবাদী করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামুনকে অপহরণের পর গুমের অভিযোগ করা হয়েছিল।

ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান। তিনি আদালতে আসামিদের রিমান্ড চাওয়ার সময়ে আর্জিতে উল্লেখ করেন, ‘খালাতো বোন তাসলিমা ২০১৪ সালের ১০ মে মামুনকে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে বিষাক্ত শরবত পান করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়ে গুম করেছে।’

পরবর্তীতে মামলাটি পুলিশের অপরাধ বিভাগ সিআইডিকে ন্যস্ত করা হয়। সিআইডি সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। এতে মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জনকেই অভিযুক্ত করেন। সাক্ষী করা হয়েছিল ২১ জনকে।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১০ মে খালাতো বোন তাসলিমাকে দিয়ে কৌশলে মামুনকে বাড়ি ডেকে আনা হয়। পরবর্তীতে মামনুকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাসলিমা। কিন্তু বিয়েতে রাজী না হওয়ায় বিবাদী ছয়জন মিলে মামুনকে কোমল পানির সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে সিএনজি চালিতা অটোরিকশা করে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। তবে কোথায় কিভাবে কি অবস্থায় রাখা হয়েছে সেটা জানা যায়নি।

এরই মধ্যে ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে এসে উপস্থিত হন কথিত অপহৃত হওয়ার চাঁদপুরের মতলব থানা এলাকার মো. আবুল কালামের ছেলে মামুন। সেই সঙ্গে বিচার কার্যক্রমও অন্যদিকে মোড় নেয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ছয় বছর পর জীবিত ফিরলো ‘নিহত’ যুবক

আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় অপহরণের ছয় বছর ও মামলার চার বছর পর ‘নিহত’ সেই যুবক নিজেই আদালতে হাজির হয়েছেন। এ ঘটনায় কথিত মামলার সেই ছয় বিবাদীকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।

এছাড়া সিআইডি ও পুলিশের তিনজনের মধ্যে দুইজনকে পরের শুনানিতে নথিপত্রসহ উপস্থিত হতে বলেছেন নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসের আদালত। বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন তিনি।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন সোহেল জানান, এর আগে ১ নভেম্বর আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিআইডি ও পুলিশের তিনজনকে স্ব-শরীরে তলব করে আদালত।

বৃহস্পতিবার ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ও এসআই জিয়াউদ্দিন উজ্জ্বল আদালতে হাজির হন। পরে বিচারক সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদকে বাদ দিয়ে অপর দুইজনকে পরের শুনানিতে নথিসহ হাজির হতে বলেছেন।

এছাড়া বিবাদী তাসলিমা, রকমত, রফিক, সাগর, সাত্তার, সোহেলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে মামলার পর পুলিশ অভিযুক্ত ছয়জনকেই গ্রেফতার করে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।

অভিযোগ রয়েছে রিমান্ডে থাকা সময়ে গ্রেফতার ছয়জনকে মারধর করা হয়। ছয়জনকেই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানের জন্য আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু তাদের কেউ আদালতে জবানবন্দী দেয়নি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১০ মে মামুন অপহরণ হয়েছে অভিযোগ এনে দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন বাবা আবুল কালাম। ওই মামলায় ৬ জনকে বিবাদী করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামুনকে অপহরণের পর গুমের অভিযোগ করা হয়েছিল।

ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান। তিনি আদালতে আসামিদের রিমান্ড চাওয়ার সময়ে আর্জিতে উল্লেখ করেন, ‘খালাতো বোন তাসলিমা ২০১৪ সালের ১০ মে মামুনকে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে বিষাক্ত শরবত পান করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়ে গুম করেছে।’

পরবর্তীতে মামলাটি পুলিশের অপরাধ বিভাগ সিআইডিকে ন্যস্ত করা হয়। সিআইডি সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। এতে মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জনকেই অভিযুক্ত করেন। সাক্ষী করা হয়েছিল ২১ জনকে।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১০ মে খালাতো বোন তাসলিমাকে দিয়ে কৌশলে মামুনকে বাড়ি ডেকে আনা হয়। পরবর্তীতে মামনুকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাসলিমা। কিন্তু বিয়েতে রাজী না হওয়ায় বিবাদী ছয়জন মিলে মামুনকে কোমল পানির সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে সিএনজি চালিতা অটোরিকশা করে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। তবে কোথায় কিভাবে কি অবস্থায় রাখা হয়েছে সেটা জানা যায়নি।

এরই মধ্যে ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে এসে উপস্থিত হন কথিত অপহৃত হওয়ার চাঁদপুরের মতলব থানা এলাকার মো. আবুল কালামের ছেলে মামুন। সেই সঙ্গে বিচার কার্যক্রমও অন্যদিকে মোড় নেয়।