ঢাকা ০২:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের ভয়ংকর এসব কারাগার এখন দর্শনীয় স্থান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ নভেম্বর ২০২০
  • ২০৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কারাগার বা জেল হাজত কারো জন্যই সুখের বা আরামের জায়গা নয়। মূলত অপরাধীদের শাস্তি এবং সংশোধনের জন্যই কারাগারে রাখা হয়। তবে পৃথিবীর কিছু কিছু কারাগার আছে খুবই নৃশংস এর শাস্তি।

এসব কারাগারে থাকা বন্দিরা খুবই কষ্টে দিনপার করে। কিছু কিছু কারাগার আছে, যেগুলো লোকালয় থেকে অনেকটা দূরে। জেলখানার বন্দি জীবনের কথা মনে হলে শরীরে রীতিমতো কাঁটা দিয়ে উঠবে। তবে সেই ভয়ংকর কারাগারই যদি হয়ে ওঠে দর্শনীয় স্থান। তাহলে কেমন হয়?

হ্যাঁ এমনই কিছু কারাগার রয়েছে বিশ্বে। যেগুলোতে একসময় বন্দিরা থাকলেও এখন তা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। চলুন জেনে নেয়া যাক তেমনই কিছু কারাগারের কথা। আজ থাকছে ১ম পর্ব-

অ্যালকাট্রাজ, যুক্তরাষ্ট্র

অ্যালকাট্রাজ, যুক্তরাষ্ট্র

অ্যালকাট্রাজ, যুক্তরাষ্ট্র

স্প্যানিশ ভ্রমণপিপাসু হুয়ান ম্যানুয়েল ডি আয়ালা ১৭৭৫ সালে এই জায়গার নাম রেখেছেন ‘ইজেল অব দ্য পেলিক্যানস’। বর্তমানে এটি অ্যালকাট্রাজ দ্বীপ নামেই বেশি পরিচিত। দূর থেকে সবার আগে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার চোখে পড়লেই বোঝা যাবে সেখানে ছিল কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত কারাগার। সেখানে বন্দি ছিলেন আমেরিকান গ্যাংস্টার আল ক্যাপোন, ব্যাংক ডাকাত জর্জ মেশিন গান কেলি, খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত রবার্ট ফ্রাঙ্কলিন স্ট্রাউড। তাদের মধ্যে রবার্ট পরিচিত ছিলেন ‘বার্ডম্যান অব অ্যালকাট্রাজ’ নামে। তারা কেউই বেঁচে নেই।

আমেরিকান গ্যাংস্টার আল ক্যাপোন ছিলেন ১৮১ নম্বর সেলে। তার নম্বর ছিল ৮৫। অপহরণ ও ডাকাতির কারণে অ্যালকাট্রাজে জেল খেটেছেন এমন আরেক কয়েদি জিম কুইলেন। তিনি জানিয়ে গেছেন, বন্দিদের শুধু একটি করে নম্বর থাকে জেলে। কোনো নাম নেই কারও। নিজের নামের চেয়েও এটিই এখানে বড় পরিচয়! সেখানে আমি জিম কুইলেন ছিলাম না। আমার নম্বর ছিল ৫৮৬।’

ক্যালিফোর্নিয়ার এই কারাগারের সেল ও ব্যায়ামের স্থান ঘুরে দেখার সময় দর্শনার্থীরা অডিওতে বন্দি জীবনের ইতিহাস শুনবেন। একইসঙ্গে জানতে পারবেন অন্যরকম ইতিহাস। দ্বীপের একটি অংশ ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৮৯ জন আমেরিকানের দখলে ছিল। ওই আন্দোলনকে বলা হয় ‘ওকুপেশন অব অ্যালকাট্রাজ’।

রোবেন আইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা

রোবেন আইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা

রোবেন আইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা

রোবেন দ্বীপে চুনাপাথরের খনি থেকে সংগৃহীত পাথর ভাঙানোর কঠোর পরিশ্রম করানো হতোদক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরের উপকূলে অবস্থিত রোবেন দ্বীপ নিপীড়ন ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিজয় ও স্বাধীনতার সাক্ষী। তাই এটি স্থান পেয়েছে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায়। সেখানকার কারাগারে ছিল চূড়ান্ত নিরাপত্তা। রাজনৈতিক বন্দি, বিশেষ করে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনকারীদের পাঠানো হতো সেখানে।

রোবেন দ্বীপের সাবেক বন্দি আহমেদ কাত্রাদার তোলা ছবিতাদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত নেলসন ম্যান্ডেলা। ২৭ বছর কারাজীবনের ১৮ বছরই রোবেন দ্বীপে কেটেছে তার। পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হন তিনি। তার বন্দিজীবনের বর্ণনা ছিল এমন, ‘কোনও সন্দেহ নেই, দক্ষিণ আফ্রিকান বিচার ব্যবস্থার সবচেয়ে কঠোর দিক এই কারাগার।’
কারাগারে ম্যান্ডেলার বন্ধু ছিলেন রোবেন দ্বীপের সাবেক বন্দি আহমেদ কাত্রাদা। রোবেন দ্বীপে সাড়ে তিন ঘণ্টার ট্যুর দেওয়া যায়। এরমধ্যে আছে ফেরি ভ্রমণ। গাইড হিসেবে পাবেন সাবেক রাজনৈতিক একজন বন্দিকে।

ওল্ড মেলবোর্ন গাওল, অস্ট্রেলিয়া

 ওল্ড মেলবোর্ন গাওল, অস্ট্রেলিয়া

ওল্ড মেলবোর্ন গাওল, অস্ট্রেলিয়া

অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অস্ট্রেলিয়ায় স্বর্ণের সন্ধান পাওয়ার পর শুরু হয় অরাজকতা। অপরাধ বেড়ে যেতে থাকে আশঙ্কাজনক হারে। তখন কুখ্যাত অপরাধীদের পাশাপাশি গৃহহীন ও মানসিক ভারসাম্যহীনরা বন্দি ছিল ওল্ড মেলবোর্ন গাওল কারাগারে। মোট ১৩৩ কয়েদির ফাঁসির সাক্ষী এই জায়গা।

তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার দায়ে ১৮৮০ সালে নেড কেলির ফাঁসিও হয়েছে সেখানে। তার মুখের ছাঁচ প্রদর্শন করা হয় ওল্ড মেলবোর্ন গাওলে। ১৯২৯ সালে এই কারাগার বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭২ সালে এটি অধিগ্রহণ করে ন্যাশনাল ট্রাস্ট। বন্দি জীবন কেমন ছিল তা দেখতে পর্যটকদের জন্য এই কারাগার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

ডেভিল’স আইল্যান্ড, ফ্রেঞ্চ গিয়ানা

ডেভিল’স আইল্যান্ড, ফ্রেঞ্চ গিয়ানা

ডেভিল’স আইল্যান্ড, ফ্রেঞ্চ গিয়ানা

দক্ষিণ আমেরিকায় ফ্রেঞ্চ গিয়ানার উপকূলে জনহীন আইল্যান্ড অব স্যালভেশনে ফরাসি উপনিবেশ ছিল ১৮৫২ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত। এখন রয়েল আইল্যান্ডে ওয়ার্ডেন ও কর্মীরা থাকেন। ফলে কেবল সেখানেই পর্যটকদের যাওয়ার সুযোগ আছে। এই জায়গায় কয়েকটি কারাকক্ষ আছে। এখন অবশ্য তা হোটেল ও রেস্তোরাঁয় রূপ নিয়েছে। নির্জন কারাবাসের জায়গা দেখতে জার্নি লাতিন আমেরিকা ট্যুরে স্পিডবোটে চড়ে সেন্ট-জোসেফ আইল্যান্ডে যেতে পারেন। এখন এটি পরিণত হয়েছে জঙ্গলে।

আরেকটি দ্বীপ হলো ডেভিল’স আইল্যান্ড। রাজনৈতিক কয়েদি ক্যাপ্টেন আলফ্রেড ড্রেফাসকে বন্দি রাখা হয়েছিল সেখানেই। হলিউডে এই কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘প্যাপিলন’ নামের একটি ছবি। চারপাশে হাঙর উপদ্রুত ও বৈদ্যুতিক জলপ্রবাহের কারণে সেখানে যাওয়ার কোনও অনুমতি নেই। তবে নৌকায় চড়ে রয়েল আইল্যান্ড থেকে ২০০ মিটার দূরে কারাগার স্পষ্ট দেখা যায়।

অক্সফোর্ড ক্যাসেল, ইংল্যান্ড

অক্সফোর্ড ক্যাসেল, ইংল্যান্ড

অক্সফোর্ড ক্যাসেল, ইংল্যান্ড

ইংলিশ গৃহযুদ্ধের সময় বিদ্রোহীদের বন্দি রাখতে ১০৭১ সালে শীর্ষ সামন্তদের দিয়ে অক্সফোর্ড ক্যাসেল গড়ে তোলেন রাজা চার্লস। মূলত বিদ্রোহী সংসদ সদস্যদর সেখানে রেখে অত্যাচার করা হতো। দীর্ঘ ১০০ বছর কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এই জায়গা। ১৯৯৬ সালে এর কার্যক্রম শেষ হয়। ২০০৪ সালে এই জায়গা সংস্কারের মাধ্যমে অট্টালিকা, রেস্তোরাঁ, একটি আর্ট গ্যালারিসহ, রেস্তোরাঁ, গ্যালারি স্থাপন করা হয়। তবে কারাগারের মূল অংশ সংরক্ষিত আছে।

এখন পর্যটকদের জন্য অক্সফোর্ড ক্যাসেল-আনলকড নামের একটি গাইড ট্যুরস প্যাকেজ রয়েছে। এর মাধ্যমে ৯০০ বছরের পুরনো ভূগর্ভস্থ দুঃসহ পরিবেশের অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে। এছাড়া স্যাক্সন সেন্ট জর্জের টাওয়ার থেকে অক্সফোর্ডের ঐতিহাসিক শহরের চারপাশ দেখা যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিশ্বের ভয়ংকর এসব কারাগার এখন দর্শনীয় স্থান

আপডেট টাইম : ০৫:৩০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কারাগার বা জেল হাজত কারো জন্যই সুখের বা আরামের জায়গা নয়। মূলত অপরাধীদের শাস্তি এবং সংশোধনের জন্যই কারাগারে রাখা হয়। তবে পৃথিবীর কিছু কিছু কারাগার আছে খুবই নৃশংস এর শাস্তি।

এসব কারাগারে থাকা বন্দিরা খুবই কষ্টে দিনপার করে। কিছু কিছু কারাগার আছে, যেগুলো লোকালয় থেকে অনেকটা দূরে। জেলখানার বন্দি জীবনের কথা মনে হলে শরীরে রীতিমতো কাঁটা দিয়ে উঠবে। তবে সেই ভয়ংকর কারাগারই যদি হয়ে ওঠে দর্শনীয় স্থান। তাহলে কেমন হয়?

হ্যাঁ এমনই কিছু কারাগার রয়েছে বিশ্বে। যেগুলোতে একসময় বন্দিরা থাকলেও এখন তা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। চলুন জেনে নেয়া যাক তেমনই কিছু কারাগারের কথা। আজ থাকছে ১ম পর্ব-

অ্যালকাট্রাজ, যুক্তরাষ্ট্র

অ্যালকাট্রাজ, যুক্তরাষ্ট্র

অ্যালকাট্রাজ, যুক্তরাষ্ট্র

স্প্যানিশ ভ্রমণপিপাসু হুয়ান ম্যানুয়েল ডি আয়ালা ১৭৭৫ সালে এই জায়গার নাম রেখেছেন ‘ইজেল অব দ্য পেলিক্যানস’। বর্তমানে এটি অ্যালকাট্রাজ দ্বীপ নামেই বেশি পরিচিত। দূর থেকে সবার আগে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার চোখে পড়লেই বোঝা যাবে সেখানে ছিল কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত কারাগার। সেখানে বন্দি ছিলেন আমেরিকান গ্যাংস্টার আল ক্যাপোন, ব্যাংক ডাকাত জর্জ মেশিন গান কেলি, খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত রবার্ট ফ্রাঙ্কলিন স্ট্রাউড। তাদের মধ্যে রবার্ট পরিচিত ছিলেন ‘বার্ডম্যান অব অ্যালকাট্রাজ’ নামে। তারা কেউই বেঁচে নেই।

আমেরিকান গ্যাংস্টার আল ক্যাপোন ছিলেন ১৮১ নম্বর সেলে। তার নম্বর ছিল ৮৫। অপহরণ ও ডাকাতির কারণে অ্যালকাট্রাজে জেল খেটেছেন এমন আরেক কয়েদি জিম কুইলেন। তিনি জানিয়ে গেছেন, বন্দিদের শুধু একটি করে নম্বর থাকে জেলে। কোনো নাম নেই কারও। নিজের নামের চেয়েও এটিই এখানে বড় পরিচয়! সেখানে আমি জিম কুইলেন ছিলাম না। আমার নম্বর ছিল ৫৮৬।’

ক্যালিফোর্নিয়ার এই কারাগারের সেল ও ব্যায়ামের স্থান ঘুরে দেখার সময় দর্শনার্থীরা অডিওতে বন্দি জীবনের ইতিহাস শুনবেন। একইসঙ্গে জানতে পারবেন অন্যরকম ইতিহাস। দ্বীপের একটি অংশ ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৮৯ জন আমেরিকানের দখলে ছিল। ওই আন্দোলনকে বলা হয় ‘ওকুপেশন অব অ্যালকাট্রাজ’।

রোবেন আইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা

রোবেন আইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা

রোবেন আইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা

রোবেন দ্বীপে চুনাপাথরের খনি থেকে সংগৃহীত পাথর ভাঙানোর কঠোর পরিশ্রম করানো হতোদক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরের উপকূলে অবস্থিত রোবেন দ্বীপ নিপীড়ন ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিজয় ও স্বাধীনতার সাক্ষী। তাই এটি স্থান পেয়েছে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায়। সেখানকার কারাগারে ছিল চূড়ান্ত নিরাপত্তা। রাজনৈতিক বন্দি, বিশেষ করে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনকারীদের পাঠানো হতো সেখানে।

রোবেন দ্বীপের সাবেক বন্দি আহমেদ কাত্রাদার তোলা ছবিতাদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত নেলসন ম্যান্ডেলা। ২৭ বছর কারাজীবনের ১৮ বছরই রোবেন দ্বীপে কেটেছে তার। পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হন তিনি। তার বন্দিজীবনের বর্ণনা ছিল এমন, ‘কোনও সন্দেহ নেই, দক্ষিণ আফ্রিকান বিচার ব্যবস্থার সবচেয়ে কঠোর দিক এই কারাগার।’
কারাগারে ম্যান্ডেলার বন্ধু ছিলেন রোবেন দ্বীপের সাবেক বন্দি আহমেদ কাত্রাদা। রোবেন দ্বীপে সাড়ে তিন ঘণ্টার ট্যুর দেওয়া যায়। এরমধ্যে আছে ফেরি ভ্রমণ। গাইড হিসেবে পাবেন সাবেক রাজনৈতিক একজন বন্দিকে।

ওল্ড মেলবোর্ন গাওল, অস্ট্রেলিয়া

 ওল্ড মেলবোর্ন গাওল, অস্ট্রেলিয়া

ওল্ড মেলবোর্ন গাওল, অস্ট্রেলিয়া

অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অস্ট্রেলিয়ায় স্বর্ণের সন্ধান পাওয়ার পর শুরু হয় অরাজকতা। অপরাধ বেড়ে যেতে থাকে আশঙ্কাজনক হারে। তখন কুখ্যাত অপরাধীদের পাশাপাশি গৃহহীন ও মানসিক ভারসাম্যহীনরা বন্দি ছিল ওল্ড মেলবোর্ন গাওল কারাগারে। মোট ১৩৩ কয়েদির ফাঁসির সাক্ষী এই জায়গা।

তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার দায়ে ১৮৮০ সালে নেড কেলির ফাঁসিও হয়েছে সেখানে। তার মুখের ছাঁচ প্রদর্শন করা হয় ওল্ড মেলবোর্ন গাওলে। ১৯২৯ সালে এই কারাগার বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭২ সালে এটি অধিগ্রহণ করে ন্যাশনাল ট্রাস্ট। বন্দি জীবন কেমন ছিল তা দেখতে পর্যটকদের জন্য এই কারাগার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

ডেভিল’স আইল্যান্ড, ফ্রেঞ্চ গিয়ানা

ডেভিল’স আইল্যান্ড, ফ্রেঞ্চ গিয়ানা

ডেভিল’স আইল্যান্ড, ফ্রেঞ্চ গিয়ানা

দক্ষিণ আমেরিকায় ফ্রেঞ্চ গিয়ানার উপকূলে জনহীন আইল্যান্ড অব স্যালভেশনে ফরাসি উপনিবেশ ছিল ১৮৫২ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত। এখন রয়েল আইল্যান্ডে ওয়ার্ডেন ও কর্মীরা থাকেন। ফলে কেবল সেখানেই পর্যটকদের যাওয়ার সুযোগ আছে। এই জায়গায় কয়েকটি কারাকক্ষ আছে। এখন অবশ্য তা হোটেল ও রেস্তোরাঁয় রূপ নিয়েছে। নির্জন কারাবাসের জায়গা দেখতে জার্নি লাতিন আমেরিকা ট্যুরে স্পিডবোটে চড়ে সেন্ট-জোসেফ আইল্যান্ডে যেতে পারেন। এখন এটি পরিণত হয়েছে জঙ্গলে।

আরেকটি দ্বীপ হলো ডেভিল’স আইল্যান্ড। রাজনৈতিক কয়েদি ক্যাপ্টেন আলফ্রেড ড্রেফাসকে বন্দি রাখা হয়েছিল সেখানেই। হলিউডে এই কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘প্যাপিলন’ নামের একটি ছবি। চারপাশে হাঙর উপদ্রুত ও বৈদ্যুতিক জলপ্রবাহের কারণে সেখানে যাওয়ার কোনও অনুমতি নেই। তবে নৌকায় চড়ে রয়েল আইল্যান্ড থেকে ২০০ মিটার দূরে কারাগার স্পষ্ট দেখা যায়।

অক্সফোর্ড ক্যাসেল, ইংল্যান্ড

অক্সফোর্ড ক্যাসেল, ইংল্যান্ড

অক্সফোর্ড ক্যাসেল, ইংল্যান্ড

ইংলিশ গৃহযুদ্ধের সময় বিদ্রোহীদের বন্দি রাখতে ১০৭১ সালে শীর্ষ সামন্তদের দিয়ে অক্সফোর্ড ক্যাসেল গড়ে তোলেন রাজা চার্লস। মূলত বিদ্রোহী সংসদ সদস্যদর সেখানে রেখে অত্যাচার করা হতো। দীর্ঘ ১০০ বছর কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এই জায়গা। ১৯৯৬ সালে এর কার্যক্রম শেষ হয়। ২০০৪ সালে এই জায়গা সংস্কারের মাধ্যমে অট্টালিকা, রেস্তোরাঁ, একটি আর্ট গ্যালারিসহ, রেস্তোরাঁ, গ্যালারি স্থাপন করা হয়। তবে কারাগারের মূল অংশ সংরক্ষিত আছে।

এখন পর্যটকদের জন্য অক্সফোর্ড ক্যাসেল-আনলকড নামের একটি গাইড ট্যুরস প্যাকেজ রয়েছে। এর মাধ্যমে ৯০০ বছরের পুরনো ভূগর্ভস্থ দুঃসহ পরিবেশের অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে। এছাড়া স্যাক্সন সেন্ট জর্জের টাওয়ার থেকে অক্সফোর্ডের ঐতিহাসিক শহরের চারপাশ দেখা যায়।